এইদিন আন্তর্জাতিক ডেস্ক,০৯ নভেম্বর : ফেসবুকে পরিচয় থেকে প্রেম । পরিবারের শত বোঝানোর পরেও প্রেমের জোয়ারে বসা হিন্দু তরুনী প্রেমিকের কথায় ধর্মান্তরিত হন। তাকে নিকাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ভাড়া বাড়িতে বসবাসও করছিলেন । কিন্তু মাস দুই যেতে না যেতেই এক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে পালিয়ে যায় প্রেমিক । এখন বাপের বাড়ি ফিরে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মহা বিপাকে পড়ে গেছেন বাংলাদেশের পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি (নেছারাবাদ) উপজেলার নানদোয়হান গ্রামের বাসিন্দা সঞ্চিতা মণ্ডল (২৬) নামে ওই তরুনী । শেষমেষ কাজকর্ম ফেলে বিয়ের দাবিতে বিগত ৯ দিন ধরে প্রেমিক হাওলাদারের (১৭) বালিপাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের চর-সাউদখালী আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকার বাড়িতে অনশনে বসেছেন । ঘটনাকে ঘিরে তোলপাড় পড়ে গেছে এলাকায় ।
জানা গেছে,নানদোয়হান গ্রামের নারায়ণ মণ্ডলের মেয়ে সঞ্চিতা । ওই তরুনী একটি এনজিওতে চাকরি করেন । বছর দুই আগে ফেসবুকে চর-সাউদখালী গ্রামের কবির হাওলাদারের ছেলে আলীর সঙ্গে তার পরিচয় হয় । ক্রমে ৯ বছরের ছোটো কিশোরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয় পড়েন সঞ্চিতা । তারা শারিরীক সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়ে ৷ সেই সম্পর্কের দুই মাস পর আলীর বিয়ের আশ্বাসে সঞ্চিতা আদালতের মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তরুণীর অভিযোগ, বিয়ের আশ্বাস দিয়ে আলী মাসের পর মাস ধরে তার সঙ্গে সহবাস করেছে । এমনকি তার কাছ থেকে এক লাখ টাকাও নিয়েছে তার প্রেমিক । কিন্তু পরবর্তীতে আলী তার পরিবারকে রাজি করাতে ব্যর্থ হয়ে বিয়েতে অস্বীকৃতি জানায়। সম্প্রতি সে পশ্চিমবঙ্গে পালিয়ে যায় এবং তারপর থেকে তার সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে ।
জানা গেছে,এদিকে সঞ্চিতার বাপের বাড়ি তার সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে দিয়েছে । তাই কোনো উপায় দেখতে না পেয়ে পয়লা নভেম্বর (শনিবার) বিকাল থেকে প্রেমেকের বাড়ির সামনে তালিবানি বোরখা পরে বসে অনশন শুরু করে দিয়েছেন। এই খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে ভিড় জমে।
অনশনরত সঞ্চিতা মণ্ডল বলেন,’আমি একটি এনজিওতে চাকরি করি। ফেসবুকে আলীর সঙ্গে পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। আমি ভারত থেকে তাকে দেশে আনার জন্য বিকাশের মাধ্যমে বিশ হাজার টাকা পাঠিয়েছি । এখন যদি সে বিয়ে না করে তাহলে আমার আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই । আমার জীবনের কোনো অর্থ থাকবে না । হয় বিয়ে, না হয় আত্মহত্যা—এই দুটো রাস্তাই এখন আমার সামনে আছে ।’
আলীর মা রেশমা বেগম বলেন,’ছেলে এখন ভারতে আছে। যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। যদি বিষয়টি সত্য হয়, তাহলে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখব।’ প্রেমিক আলী হাওলাদারের ভারতীয় মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ইন্দুরকানী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ মোস্তফা জাফর বলেন,’খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। তবে এখনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’।

