এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,০৯ জুন : ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগেই মালদা জেলার বৈষ্ণবনগরে বড়সড় ধাক্কা খেলো রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ তৃণমূল ছাত্র পরিষদ(টিএমসিপি) ছেড়ে শতাধিক নেতাকর্মী যোগ দিলেন বিজেপিতে । রবিবার বিকেলে কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি গৌরব মন্ডলসহ বাকিদের হাতে দলীয় পতাকা দিয়ে ও গেরুয়া উত্তরীয় পরিয়ে স্বাগত জানান বৈষ্ণবনগর বিধানসভার বিজেপির এক নম্বর মণ্ডলের সভাপতি অমরনাথ ঘোষ । যোগদান পর্বের শেষে বিজেপি নেতারা “মমতা বেগম বাংলা ছাড়ো” ও “মমতা বেগম দূর হঠো”সহ তৃণমূল বিরোধী বিভিন্ন স্লোগানে গলা মেলাতে দেখা যায় টিএমসিপি -এর নেতাকর্মীদের
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় দেদার অনুপ্রবেশের কারণে জনবিন্যাসের আমূল পরিবর্তন ঘটে গেছে বলে অভিযোগ বিজেপির । আজ মুর্শিদাবাদ ও মালদায় হিন্দুরা সংখ্যালঘু । সাম্প্রতিক সময়ে মালদার মোথাবাড়িতে হিন্দুদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে ।
দক্ষিণ মালদহের মোথাবাড়ি অঞ্চলের চৌরঙ্গী মোড়ের বেশ কয়েকটি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল। বিজেপির অভিযোগ, হিন্দুদের ৬০-৭০ টি দোকান ভেঙ্গে লুঠ করা হয়েছে, হিন্দুদের ঘরবাড়ি আক্রমণ করা হয়েছে এবং যথেচ্ছাচারে গাড়ি ভাঙচুর করা হয় । এর ঠিক পরেই মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের ধুলিয়ান এবং সামশেরগঞ্জে হিন্দুদের উপর ব্যাপক আক্রমণ করা হয় । জাফরাবাদের হিন্দু পিতা-পুত্রকে বাড়ি থেকে টেনে বাইরে বের করে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয় । যার প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায় ওই হিংসার বেশ কিছুদিন পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির মুর্শিদাবাদ সফরে । তিনি মূলত ত্রাণ বিলি করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু নিহত দুই হিন্দুর পরিবার মুখ্যমন্ত্রীর সভামঞ্চে উপস্থিতই হননি । যদিও নিহতদের পরিবার সেই সময় কলকাতায় ছিলেন । তবে যেসমস্ত হিন্দু সেদিন এলাকায় উপস্থিত ছিলেন তারাও মুখ্যমন্ত্রীর সভামুখী হননি । এটা শাসকদলের প্রতি তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসাবে দেখা হচ্ছে ।
ঠিক একইভাবেই মালদার মোথাবাড়ির হিংসায় রাজ্যের শাসক দলের প্রতি চরম ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয় হিন্দুদের মধ্যে । রবিবারের যোগদান তারই প্রতিফলন বলে মনে করছেন অনেকে । যদিও বৈষ্ণবনগর বিধানসভার বিজেপির এক নম্বর মণ্ডলের সভাপতি অমরনাথ ঘোষের কথায়, যোগদানকারীরা ২০১৪ সালের আগে ভারতকে দেখেছে । পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর তারা ভারতের পদক্ষেপ দেখেছে । আর এতেই তারা অনুপ্রাণিত হয়ে বিজেপিতে যোগদান করেছেন ।’ তবে যোগদানকারী কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি গৌরব মন্ডল এরাজের শাসক দলের শিক্ষক নিয়োগ দুই নিজেদের জড়িয়ে পড়া এবং চাকরিহারা শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের ওপর পুলিশের বর্বরতার ঘটনার কথা উল্লেখ করে দলত্যাগে অনুপ্রাণিত হয়েছেন বলে জানান ।
রবিবার মালদার বৈষ্ণবনগর এক নম্বর মন্ডলের বুথ স্বশক্তিকরনের সাংগঠনিক বৈঠক ছিল বিজেপির । মন্ডল সভাপতি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা উজ্জ্বল রায়, তারক ঘোষ, শ্যামলী রজক প্রমুখ। সেই সভার প্রারম্ভে যোগদান কর্মসূচি হয় । উল্লেখ্য, বিগত লোকসভা ভোটে মালদহ উত্তর আসনে জয়ী হন বিজেপির প্রার্থী খগেন মুর্মু । কিন্তু মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রে জয়ী হয় ইন্ডি জোটের প্রার্থী কংগ্রেস । এই কেন্দ্রের মধ্যেই পড়ে মোথাবাড়ি ও বৈষ্ণবনগর বিধানসভা কেন্দ্র । ফলে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের এই হিড়িক বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যের শাসকদলের মাথা ব্যাথার কারন হতে পারে ।।

