দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২১ সেপ্টেম্বর : চলতি মাসে হাওড়ার একটি স্কুলের ছাত্রকে শাসন করার অপরাধে স্কুলের টিচার্স রুমে ঢুকে ইংরাজি শিক্ষককে বেধরক মারধর করে পড়ুয়ার পরিবারের লোকজন । যদিও নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়েরের পর কয়েকজন হামলাকারীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ । এবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া এলাকায় । ঘটনাস্থল কাটোয়ার সিঙ্গি অঞ্চলের ওকরষা উচ্চ বিদ্যালয় । অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীদের ‘হুমকি’ দেখিয়ে স্কুলের ছাদে রিলস তৈরি করার চেষ্টার জন্য ভোকেশনাল কোর্সে পাঠরত মাধ্যমিক উত্তীর্ণ পড়ুয়াকে শাসন করেছিলেন প্রধান শিক্ষক । আর এই অপরাধে বাবাকে সঙ্গে নিয়ে প্রধান শিক্ষককে মারতে উদ্যত হল ওই পড়ুয়া । আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায় ৷ যদিও স্কুলের সঙ্গে বাকি শিক্ষকদের হস্তক্ষেপে প্রহৃত হওয়া থেকে রক্ষা পেয়ে যান প্রধানশিক্ষক । পরে খবর পেয়ে পিতা পুত্রকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় কাটোয়া থানার পুলিশ । এই ঘটনায় এদিন বিকেল পর্যন্ত থানায় নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানা গেছে ।
স্কুল সূত্রে খবর,হামলাকারী পড়ুয়ার বাবা পেশায় কৃষক । ওই পড়ুয়া কাটোয়ার ওকরষা উচ্চ বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়ার পর ভোকেশনাল কোর্সে ভর্তি হয়েছে । কয়েক দিন ধরেই ওই ছাত্রটি স্কুলে লুকিয়ে স্মার্টফোন নিয়ে এসে বিভিন্ন ধরনের রিল তৈরি করছিল । বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তোলে স্কুলের ছাত্রীরা । কিন্তু এদিন সে সমস্ত সীমা অতিক্রম করে । জানা গেছে,স্কুলের ছাদে গিয়ে ভিডিও রেকর্ড করার জন্য স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীদের উপর সে চাপ সৃষ্টি করে । কিন্তু ছাত্রীরা এতে আপত্তি জানায় । এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সে ছাত্রীদের হুমকি পর্যন্ত দেয় বলে অভিযোগ ।
প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত সরকার বলেন,’ছাত্রীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে প্রথমে ওই ছাত্রটিকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল । তারপরেও একই ধরনের কুকর্ম জারি রাখে সে । সেই কারনে বুধবার তাকে কানমলা দিয়ে বকাঝকা করেছিলাম ।তার জেরে এদিন ওই পড়ুয়া তার বাবাকে সঙ্গে করে স্কুলে নিয়ে এসে ঝামেলা করে ।’
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে যে এদিন দুপুর নাগাদ বাবাকে সঙ্গে নিয়ে স্কুলে চড়াও হয় ওই ছাত্র । ছাত্রের বাবার হাতে একটি ছোটখাটো লাঠিও দেখা যায় । তারপর পিতাপুত্র মিলে সটান ঢুকে যায় প্রধান শিক্ষকের অফিসে । তারা দু’জনে প্রধান শিক্ষককে মারতে উদ্যত হয় । ইতিমধ্যে চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ পেয়ে অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকারা প্রধান শিক্ষকের অফিসে ছুটে আসেন । তাঁরাই প্রধান শিক্ষককে আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা করেন । এদিকে স্কুল থেকে খবর পেয়ে পুলিশ চলে আসে । পরিস্থিতি বেগতিক পুলিশ ও স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে পরে ক্ষমা চেয়ে নেয় অভিযুক্ত ছাত্রের বাবা । এদিকে এরাজ্যে স্কুল শিক্ষকের উপর একের পর এক হামলার ঘটনায় অবিভাবকদের একাংশের এই প্রকার কদর্য মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ।।