এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৯ ফেব্রুয়ারী : কংগ্রেস-বামপন্থী ও তৃণমূল শাসিত ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুত্ববাদের ব্রান্ড হিসাবে আবির্ভূত হয়েছেন এরাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । আর তার সবচেয়ে বড় প্রশংসক হলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় ৷ ইতিপূর্বে একাধিকবার তিনি শুভেন্দুর সমর্থনে মন্তব্য করেছিলেন । ফের একবার শুভেন্দুর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। বিরোধী দলনেতা প্রসঙ্গে তিনি এক্স-এ লিখেছেন,’বহুদিন পরে হিন্দু বাঙালি পেল শুভেন্দুর মত নেতাকে, যিনি রাখঢাক না করে বাঙালি হিন্দুর হয়ে কথা বলছেন । হবে না কেন, মমতা পায়ে ফলস পট্টি বেঁধেও এঁকে হারাতে পারেন নি, কম্পার্টমেন্টালে পাশ করে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন । একশো বছরের উপর বাংলায় সংখ্যালঘু, শান্তিপ্রিয় হিন্দুদের উপর সংখ্যাগুরু মুসলমানের অত্যাচার চলছে । তার উত্তরে আমরা বাঙালি-অবাঙালি হিন্দু নেতাদের কাছে পেয়েছি শুধু ভোটের লোভে নির্লজ্জ মুসলমান তোষণ । মাঝে মাঝে এক-আধজন শ্যামাপ্রসাদ, প্রণবানন্দকে ব্যতিক্রম হিসাবে পেয়েছি । জয়তু শুভেন্দু !’
প্রসঙ্গত,দুর্গাপূজা থেকে শুরু করে সর্বশেষ সরস্বতী পূজোতে এরাজ্যের মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতিবাচক ভূমিকা নিয়ে সবচেয়ে বেশি সরব হতে দেখা গেছে শুভেন্দু অধিকারীকে । বিশ্বহিন্দু পরিষদ,ইসকন, রামকৃষ্ণ মিশন থেকে শুরু করে বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী দলের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন নিয়মিত । রাজ্যের শাসকদলের ‘তোষামোদি রাজনীতি’ নিয়ে সবচেয়ে বেশি সরব হন শুভেন্দু অধিকারী । সর্বশেষ মঙ্গলবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি মহাকুম্ভকে “মৃত্যুকুম্ভ” বলে আখ্যায়িত করায় তাকে চাঁচাছোলা ভাষায় নিশানাও করেছেন শুভেন্দু অধিকারী ।
এনিয়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন,শাস্ত্রানুসারে ১৪৪ বছর পর গ্রহ নক্ষত্রের এক বিশেষ শুভ যোগে প্রয়াগরাজে এবারের মহাকুম্ভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যেখানে ত্রিবেণী সঙ্গমে এখনো পর্যন্ত প্রায় ৫০ কোটির ও বেশী সনাতনী ভক্তরা তাদের পবিত্র স্নান সেরেছেন, সেখানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন “এটা মহাকুম্ভ নয় মৃত্যুকুম্ভ”। মমতা ব্যানার্জী আপনার কুম্ভ সম্পর্কে সাম্যক ধারণা টুকুও নেই। কুম্ভের ইতিহাস কয়েক হাজার বছরের পুরোনো যার প্রামান্য দলিল রয়েছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আস্থা, বিশ্বাস, আবেগ এবং ঐতিহ্য কুম্ভ এর সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। আপনার এই বিবৃতি নিন্দনীয়, লজ্জাজনক এবং সেই সাথে অসম্মানজনক। আপনি সনাতনীদের বিশ্বাসের গুরুত্ব বোঝেন না তাই নির্লজ্জের মতো তাদের বিশ্বাসে বার বার আঘাত হানেন।
আপনি আরো বলেছেন যে “কুম্ভ মেলায় দরিদ্রদের জন্য কোনো রকম ব্যবস্থা নেই, সেখানে নাকি ধনী, ভিভিআইপিদের জন্য লক্ষ টাকার তাবু রয়েছে”। আপনার জ্ঞাতার্থে জানাই কুম্ভ মেলায় পৌঁছানোর পর কোনো দরিদ্র মানুষকে খাওয়া বা থাকার জন্য একটি পয়সাও খরচ করতে হচ্ছে না। সেখানে সরকারের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিভিন্ন আখাড়া এবং আশ্রমগুলিতে অস্থায়ী শিবিরে থাকার ব্যবস্থা সহ ২৪ ঘন্টা ভান্ডারা এবং প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা রয়েছে।’
তিনি আরও লেখেন,এ’বছর মহাকুম্ভে পশ্চিমবঙ্গ থেকেও রেকর্ড সংখ্যায় ভক্ত সমাগম হয়েছে এবং এখনও সেখানে ত্রিবেণী সঙ্গমে ডুব দেবার জন্য যাচ্ছেন। মমতা ব্যানার্জী হিন্দুদের আস্থা ও বিশ্বাসে আঘাত হেনেছেন, মহাকুম্ভ নিয়ে তার এই মিথ্যাচারের জবাব এ রাজ্যের কোটি কোটি হিন্দু যারা মহাকুম্ভে অংশ নিয়েছেন তারা অবশ্যই দেবেন।’।