এইদিন ওয়েবডেস্ক,ছত্তিশগড়,১৮ জুন : ছত্তিশগড়ের রায়পুরে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী দিলওয়ার খান ও তার স্ত্রী পারভীন বেগমকে পাকড়াও করে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ ৷ পুলিশের জেরায় ওই অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি দম্পতি কবুল করেছে যে তারা ১৬ বছর আগে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিল । মাত্র ১০০০ টাকায় তৈরি করে ফেলেছিল মধ্যপ্রদেশ বোর্ডের ভুয়া মার্কশিট । আর সেই মার্কশিট দেখিয়ে বানিয়ে ফেলে ভোটার ও আধার কার্ডসহ যাবতীয় ভারতীয় পরিচয়পত্র ৷ তারপর ভারতীয় সেজে রায়পুরে খুলে ফেলে ‘মক্কা মদিনা বিরিয়ানি সেন্টার’ । ভারতে অনুপ্রবেশের পর তাদের একটি কন্যা সন্তানেরও জন্ম হয় ।
অনুপ্রবেশকারী দিলওয়ার খানের মতে, সে ১০০০ টাকায় তৈরি মধ্যপ্রদেশ বোর্ডের একটি জাল মার্কশিট তৈরি করেছিল । বোর্ডের একজন কর্মচারী তাকে এতে সহায়তা করেছিলেন। এই মার্কশিটটি মধ্যপ্রদেশের রেওয়ার তিয়োথার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের। তারা একটা ভাড়া বাড়িতে থাকত এবং তার ভিত্তিতে একটি ইজারা চুক্তি করেছিল । ক্রমে ক্রমে তারা প্যান কার্ড, আধার কার্ড এবং পাসপোর্টও তৈরি করেছিল । পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও সরকারি পরিচয়পত্র রয়েছে । বাংলাদেশে থাকার সময় তাদের একাধিক সন্তান ছিল । তার মধ্যে যে মালয়েশিয়ায় তার একটি ছেলে রয়েছে বলে পুলিশকে জানিয়েছে দিলওয়ার খান ।
পুলিশ দিলওয়ারের স্ত্রী পারভীন খান এবং মেয়েকেও হেফাজতে নিয়েছে। মেয়েটির জন্ম ছত্তিশগড়ে এবং সে নাবালক। দিলওয়ার বলেছে, তার ছেলে রায়পুরে মেকানিকের কাজ করত। দিলওয়ার তার কাছে টাকা চাইলে সে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। কয়েকদিন পর সে রায়পুর চলে যায়। তিন বছর আগে ছেলে বলে যে সে পুনেতে আছে। গত বছর সে বলেছিল যে সে বিবাহিত এবং তার শ্বশুর তাকে মালয়েশিয়া পাঠিয়েছে। পুলিশ তার ছেলের সম্পর্কে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছে।
পুলিশ বলছে, অনুপ্রবেশকারী দিলওয়ার খান এবং তার পরিবারকে জাল নথি তৈরিতে যারা সাহায্য করেছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে বাড়িওয়ালা, নথি তৈরির সুপারিশকারী ব্যক্তি এবং সরকারি কর্মচারী। তার সাহায্যকারীদের সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ পেয়েছে যে এই লোকেরা রায়পুর এবং রেওয়াতে লুকিয়ে থাকতে পারে।
রায়পুরে, অনুপ্রবেশকারী দিলওয়ার এবং তার পরিবার ৪ বার বাড়ি পরিবর্তন করেছে। সে শ্রমিক হিসেবে কাজ করত এবং তারপর রাস্তার পাশে ডিম এবং বিরিয়ানি বিক্রির একটি দোকান স্থাপন করত । এই ঘটনায় চিন্তায় পড়ে গেছে তদন্তকারীরা । কারন এদেশীয় সহানুভূতিশীল ব্যক্তিদের সাহায্য এভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের খুঁজে বের করা কার্যত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ দাবি উঠছে যে অবিলম্বে দেশে এনআরসি লাগু করে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে বহিষ্কার করা হোক ।।

