এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,১৫ নভেম্বর : বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় প্রেমিকাকে মেরে ৩৫ টুকরো করার পরে যে ফ্রিজে দেহাংশ ভরে রেখেছিল তাতে রাখা খাবার খেত আফতাব আমিন পুনাওয়ালা । শুধু তাইই নয়,একই ঘরে অন্য বান্ধবীকে এনে রাত্রিবাস করেছিল সে ৷ গ্রেফতারির পরেও অনুশোচনার ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি ঘাতক প্রেমিকের মধ্যে ৷ পুলিশের প্রশ্নের উত্তরে সে স্বীকার বলেছে, ‘ইয়েস আই কিল হার।’ অন্যদিকে খুন হতে পারে জেনেও প্রেমিককে ছাড়তে পারেননি নিহত শ্রদ্ধা ওয়াকার । দিল্লি পুলিশের তদন্তে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে ৷
পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে মুম্বাইয়ের কল সেন্টারের সহকর্মী আফতাবের সঙ্গে লিভ টুগেদার শুরু করেছিলেন মহারাষ্ট্রের পালঘরের বাসিন্দা শ্রদ্ধা ওয়াকার । তারপর থেকেই পরিবারের সঙ্গে তাঁর যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায় । চলতি বছরের ৮ মে মুম্বাই থেকে দিল্লি আসেন তাঁরা । দিল্লির মেহরাউলির জঙ্গলের কাছে ফ্ল্যাট নিয়েছিল আফতাব । আর দিল্লি আসার ১০ দিনের মাথাতেই শ্রদ্ধাকে নৃশংসভাবে খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করে সে । তারপর সেই দেহাংশ ১৮ দিন ধরে ফ্রিজে ভরে রাখে সে ।
পুলিশের জেরায় খুনি প্রেমিক জানিয়েছে,প্রতিদিন রাতে প্রেমিকার কাটা মাথাটা দেখত আফতাব । গভীর রাতে বেড়িয়ে একটা একটা করে দেহাংশ জঙ্গলে ছড়িয়ে দিয়ে আসত । ওই ঘরেই ঘুমতো সে । প্রেমিকার দেহাংশ রাখা ফ্রিজেরই খাবার খেত । এমনকি ওই ঘরেই নতুন বান্ধবীকে এনে খুনি প্রেমিক ফুর্তি করত বলে পুলিশ জানতে পারে।
নিহত শ্রদ্ধার বন্ধুরা জানিয়েছেন,দিল্লিতে আসার প্রথম দিকে দু’জনে সুখেই ছিল । কিন্তু কিছুদিন পর থেকে শুরু হয় অশান্তি । খুনের কিছুদিন আগে থেকে শ্রদ্ধাকে মারধর শুরু করেছিল আফতাব । সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেতে এক বন্ধুর কাছে শ্রদ্ধা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, তিনি খুন হয়ে যেতে পারেন । তাঁকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য আকুতি জনিয়েছিলেন শ্রদ্ধা । যদিও অন্ধ মোহের কারনে নিজেই প্রেমিককে ছেড়ে যেতে পারেননি তিনি ।
এদিকে নিহত প্রেমিকার দেহাংশের হদিশ পেতে মঙ্গলবার আফতাবকে নিয়ে দিল্লির জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরে বেড়িয়েছে পুলিশ । । প্রায় আড়াই ঘণ্টা ঘরে পুলিশ অভিযুক্ত আফতাবকে নিয়ে তল্লাশি চালায় ।
তবে বহু দেহাংশের এখনও সন্ধান মেলেনি । আশঙ্কা করা হচ্ছে সেগুলি কুকুর শিয়ালে খেয়ে ফেলেছে । শ্রদ্ধাকে যে অস্ত্র দিয়ে কেটে টুকরো টুকরো করা হয়েছিল সেটিরও হদিশ করতে পারেনি পুলিশ । অন্যদিকে দিল্লি পুলিশের একটি দল অভিযুক্ত আফতাবের মেহরাউলির বাড়িতে পৌঁছে তদন্ত চালায়। আফতাব যে ফ্রিজে শ্রদ্ধার দেহাংশ রেখেছিল সেই ফ্রিজটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। ফ্রিজের পাশাপাশি পুলিশ বাড়িতে নুডুলস এবং একটি ওয়াটার হিটারও পেয়েছে । গন্ধ এড়াতে রুম ফ্রেশনারের পাশাপাশি ধূপ ব্যবহার করত আফতাব। প্রায় ২২ দিন ধরে প্রচুর রুম ফ্রেশনার ব্যবহার করেছিল সে। ওই ঘরে একটি থার্মোকলও পেয়েছে পুলিশ । এদিকে বদ্রী নামের যে ব্যক্তি আফতাবকে ফ্লাট দেখে দিয়েছিল, পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ।।