এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাবুল,১৪ সেপ্টেম্বর : তালিবানের আফগানিস্তান দখল এখনও এক মাসও পূর্ণ হয়নি । এরই মধ্যে আফগানি নাগরিকদের জীবন চরম দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে । খিদের জ্বালায় রাস্তার বসে গৃহস্থালি সামগ্রী পর্যন্ত বিক্রি করতে শুরু করে দিয়েছেন আফগানি নাগরিকরা । কাবুলের চমন-ই-হজুরির রাস্তায় বসে মানুষ তাদের রক্ত ও ঘাম ঝড়ানো উপার্জনে বিগত বিশ বছর ধরে তিল তিল করে সংগ্রহ করে রাখা গৃহস্থালী সামগ্রী বিক্রি করছেন । বিছানা, গদি, বালিশ, ফ্রিজ, টিভি, ওয়াশিং মেশিন, ফ্যান, এসি, কুলার, রান্নাঘরের জিনিসপত্রের সঙ্গে দৈনন্দিন জীবনের অন্যান্য সামগ্রী নামমাত্র দামে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন ।
বিশ্বব্যাংক,আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (international monetary fund) ও আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক দ্বারা প্রদত্ত অর্থ হ্রাস বা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি ক্রমশ দুর্ভিক্ষের দিকে যাচ্ছে । ব্যাঙ্ক খোলা । কিন্তু ক্যাশ নেই । ফলে মানুষ আপতকালের জন্য যেটুকু পুঁজি ব্যাঙ্কে রেখেছিলেন সেটাও তুলতে পারছেন না । ফলে পেট চালানোর জন্য তাঁরা গৃহস্থালি জিনিসপত্র বিক্রি করতে শুরু করছেন ।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ বলেছে ২০২২ সালের শেষের দিকে আফগানিস্তানের ৯৭ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবে । জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস কথায়, বিভিন্ন সমস্যার কারণে আফগানিস্তান সম্পূর্ণ বিভাজিত হওয়ার পথে এগিয়ে যাবে । এক কোটিরও বেশি জনসংখ্যাকে অনাহার থেকে বাঁচাতে সময়োপযোগী সাহায্যের প্রয়োজন বলেও জানিয়েছেন তিনি ।
এদিকে আফগানিস্তানের মহিলাদের উপর অত্যাচার ও নিষ্ঠুরতার ঘটনাও ক্রমশ বেড়ে চলেছে । তা সত্ত্বেও তালিবানি রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশজুড়ে রাস্তায় নেমে নিজেদের অধিকার রক্ষায় বিক্ষোভ প্রদর্শন চালিয়ে যাচ্ছেন মহিলারা । গত শনিবার কাবুলে হোপ ফাউন্ডেশনের প্রধান ফাহিমা রহমতির উপর হামলা চালায় তালিবানরা । ফাহিমার পরিবারকে অপহরণ করা হয় । তালিবানরা মোট ৫ জনকে অপহরণ করেছে বলে খবর । যার মধ্যে রয়েছে ফাহিমার দুই ভাই,এক আত্মীয় ও প্রতিবেশী । অন্যদিকে তার একদিন আগে বিক্ষোভ প্রদর্শনে সামিল হওয়ার জন্য মানবাধিকার কর্মী হাবিবুল্লাহ ফরজাদকে নির্মমভাবে পেটানো হয় । এদিকে আফগানিস্তান জুড়ে সশস্ত্র তালিবানিরা টহল জারি রেখেছে । দেখে মনে হচ্ছে যেন পুরো দেশকে বন্দি করে রাখা হয়েছে । মহিলাদের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে দেখলেই তারা লাঠি আর চাবুক দিয়ে পেটাচ্ছে ৷ যদিও তালিবানরা দাবি করছে তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শনকে সমর্থন করে ।।