এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাবুল,২৬ অক্টোবর : চলতি শীতের মরশুমে আফগানিস্তানের জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি মানুষ তীব্র খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হতে চলেছে বলে মনে করছে জাতিসংঘ ।জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি এবং খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (United Nation’s World Food Program and Food and Agriculture Organization) মতে চলতি শীতে তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হতে পারে আফগানিস্তানের ২২৮ লক্ষ মানুষ ।ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের ১৯০ লক্ষ বা মোট জনসংখ্যা ৪৫ শতাংশ মানুষ চরম খাদ্যসঙ্কটের মধ্যে রয়েছেন ।
এদিকে তালিবান ক্ষমতায় আসার পর বিদেশ থেকে না আসছে কোনও সাহায্য, না ছাড়া হচ্ছে বিদেশে বাজেয়াপ্ত করে রাখা আফগানিস্তানের টাকা । ফলে চরম বিপাকে পড়ে গেছে তালিবান । বর্তমান দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি মোকাবিলায় এযাবৎ কোনও সুপরিকল্পিত পরিকল্পনাও তৈরি করতে পারেনি তালিবানরা ।
অগত্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজের বিনিময়ে পারিশ্রমিকের পরিবর্তে শ্রমিকদের খাদ্যশষ্য দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে তালিবান । তালিবানের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘কাজের পরিবর্তে খাদ্য প্রকল্প’-এর আওতায় প্রাথমিকভাবে রাজধানী কাবুলে ৪০ হাজার পুরুষকে কাজ দেওয়া হবে । বেকারত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ।’ পাশাপাশি তিনি শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রম করার কথাও বলেন ।
তালিবানি মুখপাত্র জানান,’কাজের পরিবর্তে খাদ্য প্রকল্প’ দু’মাস চালানো হবে । এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল সেই সমস্ত লোকদের কাজ দেওয়া যাদের বর্তমানে কোন কাজ নেই । ওই সমস্ত মানুষ শীতের শুরুতেই অনাহারে কাটাচ্ছেন । এই পরিস্থিতির কারনে শুধুমাত্র রাজধানী কাবুলে বিতরণ করা হবে ১১,৬০০ টন গম । এছাড়া হেরাত, জালালাবাদ, কান্দাহার, মাজার-ই-শরিফ এবং পোল-ই-খোমরি জেলায় ৫৫ হাজার টন গম বিতরণ করা হবে । খাদ্য শষ্যের বিনিময়ে শ্রমিকদের দিয়ে খাল খনন ও বরফের জন্য পরিখা তৈরির মতো কাজ দেওয়া হবে বলে তিনি জানান ।
আফগানিস্তানে এফএওর(Food and Agriculture Organization) প্রতিনিধি রিচার্ড ট্রেনচার্ড বলেন, ‘ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি চলছে । আফগানিস্তান জুড়ে মানবিক পরিস্থিতির নাটকীয় অবনতি দেখছি আমরা ।’ বর্তমান আফগানিস্তানের বর্ননা দিতে দিয়ে নাতিক মালিকজাদা(Natiq Malikzada) নামে জনৈক এক আফগানি ট্যুইটারে কাবুলের একটি বেকারির সামনে মানুষের ভিড়ের একটা ছবিসহ লিখেছেন, ‘গত রাতে কাবুলের একটি বেকারির কাছে…বেকারির মালিক ফেসবুকে লিখেছেন এক টুকরো রুটির জন্য ভিক্ষা করার এই চক্রটি প্রতিদিন বাড়ছে, এবং শীঘ্রই আমিও এই বৃত্তে যোগ দিতে পারি । আমাদের ব্যবসা প্রতিদিনই কমছে । মানুষের টাকা নেই । তালিবানরা সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে ।’।