জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),৩০ জুলাই : পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরা শহরের লোকসংখ্যা চল্লিশ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। শহরের বাইরে প্রায় সমগ্র আউশগ্রাম ব্লক , মঙ্গলকোটের বিস্তীর্ণ অংশ ও ভাতার ব্লকের একাংশ চিকিৎসার জন্য নির্ভর করে গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপর । নিয়মের যাঁতাকলে পড়ে অতিরিক্ত চিকিৎসক, নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মী পাওয়া যায় না। ফলে বর্তমানে মাত্র ২ জন অস্থায়ী চিকিৎসক ও ৫ জন নার্স ও মুষ্টিমেয় স্বাস্থ্যকর্মী নিয়ে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক রুগীকে পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ডা: দেবতনু দত্ত ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন,গুসকরা থেকে মাত্র ৩০ কিমি দূরে রয়েছে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল । কিন্তু মাঝে রয়েছে তালিত রেলগেটে । প্রায়শই সেখানে যানজট থাকে । ফলে গুরুতর রুগীদের বিশেষ করে প্রসূতিদের বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে যেতে গিয়ে চুড়ান্ত সমস্যায় পড়তে হয় রোগীর আত্মীয়দের । তাই এলাকার বাসিন্দাদের দাবি গুসকরা স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি আরও উন্নত হোক । এই স্থাস্থ্যকেন্দ্রটিকে স্টেট জেনারেল হাসপাতালে উত্তীর্ণ করার জন্য দাবি তুলেছেন তাঁরা । গুসকরার অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ শিক্ষক ড: বলরাম বন্দ্যোপাধ্যায় দীর্ঘদিন ধরেই এনিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করে যাচ্ছেন ।
এবার সবার ব্যক্তিগত চেষ্টা ও দাবিকে সমষ্টিগত রূপ দেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সমস্ত স্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এদিন শনিবার ( ৩০ জুলাই ২০২২) গুসকরা পুরসভার সভাগৃহে এক গঠনমূলক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার,গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ডা: দেবতনু দত্ত, প্রবীণ ডাক্তার ডা: শ্যামল দাস, আউশগ্রাম ১ নং ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের পক্ষ থেকে জয়েণ্ট বিডিও, গুসকরা বিট হাউসের পক্ষ থেকে একজন এসআই, অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ শিক্ষক ড: বলরাম বন্দ্যোপাধ্যায়, সমাজসেবী উৎপল লাহা, গুসকরা পুরসভার বড়বাবু মধুসূদন পাল, ভাইস চেয়ারম্যান বেলি বেগম ও চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জ্জী।
আলোচনা সভায় প্রত্যেকে তাদের সুচিন্তিত মতামত পেশ করেন এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির উন্নতির জন্য বিধায়ককে অনুরোধ করেন। কিভাবে সীমিত সামর্থ্য নিয়ে হাসপাতালের রুগী পরিষেবা চালু রাখতে হচ্ছে সেটা তুলে ধরেন ডা: দত্ত। আলোচনার শেষে ঠিক হয় মূল বিষয়বস্তু দাবি আকারে রেজ্যুলেশন করে দ্রুত বিধায়কের হাতে তুলে দেওয়া হবে এবং তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সেটি জমা দেবেন।
কুশল বাবু বললেন,’সাধারণ মানুষ হাসপাতাল ও প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পার্থক্য সম্পর্কে সেভাবে ওয়াকিবহাল নয়। সীমিত সামর্থ্য নিয়ে যেভাবে গুসকরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ডাক্তারবাবুরা পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন সেটা অকল্পনীয়।প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে রূপান্তরিত হলে সমস্যার কিছুটা সমাধান হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের বিধায়ক ব্যক্তিগত ভাবে স্থানীয় মানুষের চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্যা দূর করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করছেন। সেটা সমষ্টিগত রূপ দিয়ে তার দাবিকে আরও শক্তিশালী করার জন্য আজকের এই আলোচনা সভা। আশাকরি এলাকার মানুষের দাবি মেনে রাজ্য সরকার প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিকে স্টেট জেনারেল হাসপাতালে রূপ দেওয়ার জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ।’।