প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ও শ্যামসুন্দর ঘোষ,বর্ধমান,২০ ডিসেম্বর : বয়স মাত্র আড়াই বছর । কিন্তু তাতে আর কি যায় আসে ।খুদে বয়সেই আদিল রহমান তাঁর জ্ঞান ও মেধার পরিচয় দিয়ে একেবারে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। তার সঙ্গে জিতেও নিয়েছে ’ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস’-এর সন্মান। হামাগড়ি দেওয়া ছেড়ে জীবনের পথ চলা শুরু করতে না করতেই ছেলে আদিল এমন সন্মান পাওয়ায় যারপরনাই খুশি তাঁর বাবা মা। তাঁদের আশা, বড় হয়ে আরও জ্ঞান ও মেধা অর্জন করে নিজের কর্মের মধ্যদিয়েই আদিল একদিন দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে ।
একরত্তি আদিল কোন বড় শহর বা শহরতলির বাসিন্দা নয়। পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বর ব্লকের
প্রত্যন্ত গ্রাম কুসুমগ্রামে তাদের বাড়ি । আদিলের বাবা হোসেনুর রহমান পেশায় ব্যবসায়ী । মা সাহিনা খাতুন সাধারণ গৃহবধূ। হোসেনুর বুধবার বলেন, আমার স্ত্রী সাহিনা খুব বুদ্ধিমত্তার সাথে আদিলকে অত্যন্ত ছোট বয়স থেকে লেখাপড়ার পাঠ দেওয়া শুরু করে ।একেবারে খেলার ছলো আদিলকে লেখাপড়ার পাঠ দেওয়া শুরু করে ওঁর মা। তবে ছেলে ছোট বয়স থেকে মোবাইল ফোনে
যাতে আশক্ত না হয়ে পড়ে সেই ব্যাপারে সব সময় সজাগ থাকতাম। ছেলে কোন কারণে কান্নাকাটি করলেও তাকে ভোলাতে কখনও আমরা ছেলের হাতে মোবাইল ফোন তুলে দিই নি। শুধুমাত্র খেলার ছলে মায়ের কাছে পাঠ নিতে নিতেই মাত্র আড়াই বছর বয়সেই আদিল ইংরেজিতে বিভিন্ন জীবজন্তুর নাম, মানব দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নাম, প্রত্যেক ইংরাজি মাসের নাম, জাতীয় প্রতীক এইসব রপ্ত করে ফেলে। এ ছাড়াও বাংলায় বেশ কিছু কবিতা আবৃত্তি করতেও শিখে যায় আদিল ।
আর তারই ফলশ্রুতি স্বরুপ ’ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসের প্রতিযোগীতায় অংশ নিয়ে আমার ছেলে আদিল মেড়েল ও মানপত্র লাভ করলো বলে হোসেনুর রহমান জানান । সেইসব পুরস্কারের ডালি মঙ্গলবার বাড়িতে এসে পৌছানোর পর
থেকেই বাড়ির সবাই খুশিতে ভাসছে । তবে এত কিছুর মধ্যেও ছেলের এই সন্মান প্রাপ্তির সমস্ত কৃতিত্বটাই যে স্ত্রী সাহিনা খাতুনের তা হোসেনুর
বলতে ভোলেননি ।
ছেলে আদিল কে কোলে নিয়ে গর্বিত মা সাহিনা খাতুন এদিন বলেন, আমার ছেলে মাত্র আড়াই বছর বয়সে আমাদের পরিবারের সবার মুখ উজ্জ্বল করলো ।এ এক বড় প্রাপ্তি । আমি চাই সবাই আমার ছেলেকে দোয়া করুণ, যাতে লেখা পড়া শিখে আগামী দিনে আমার ছেলে অনেক বড় হয় । নিজের জ্ঞান ও মেধা কাজে লাগিয়ে আমার ছেলে যেন দেশের ও দশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে । সাহিনা এও বলেন,ইংরেজিতে বিভিন্ন জীবজন্তুর নাম, মানব দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নাম, প্রত্যেক ইংরাজি মাসের নাম, জাতীয় প্রতীক এই সবতো আমার ছেলে রপ্ত করেইছে । এ ছাড়াও আমার মুখ থেকে শুনে শুনে আদিল এই ছোট বয়সেই আরবি ও সূরা ,বেশ খানিকটা রপ্তাও করে ফেলেছে। অন্য সকল শিশুর বাবা মায়েদের উদ্দেশ্যে হোসেনুর এবং সাহিনা আবেদন রাখেন,চাপ সৃষ্টি নয়। আপানাদের শিশু সন্তানকে খেলার ছলে পড়ান । আপনারা পড়ুন আর সেটা আপনার শিশু সন্তানদের শোনান। তাতেই সাফল্য মিলবে। মোবাইল ফোনে শিশুদের আশক্তি যাতে না বাড়ে সেই ব্যাপারে অভিভাবকদের সজাগ থাকারও বার্তা দেন আদিলের বাবা মা ।।