প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৫ নভেম্বর : রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে মঙ্গলবার থেকে ফের স্কুল কলেজ চালু হতে চলেছে। তার ঠিক আগের দিন স্কুলে স্যানিটাইজার ট্যানেল বসানোকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে আহত হল চার তৃণমূল কর্মী।এদিন ঘটনাটি ঘটেছে শহর বর্ধমানের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে । এদিনের সংঘর্ষের ঘটনার সময়ে টলিউডের নায়িকা শুভ্রশ্রীর বাবা তথা বিধায়ক ও প্রযোজক রাজ চক্রবর্তীর শ্বশুর দেবপ্রসাদ গাঙ্গুলিকেও হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে বর্ধমান পৌরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর মহম্মদ আলি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।এদিন যা ঘটেছে তা দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন বর্ধমানের দুবরাজদিঘী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ কাটিয়ে মঙ্গলবার থেকে রাজ্যের স্কুল গুলিতে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পঠন পাঠন শুরু হতে চলেছে। পড়ুয়াদের স্বার্থে বর্ধমান শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দুবরাজদীঘি হাইস্কুল ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রেলওয়ে বিদ্যাপীঠ স্কুলে স্যানিটাইজার ট্যানেল দেবার ব্যাপারে মনস্থির করেন দেবপ্রসাদ গাঙ্গুলির শ্যালিকা অনাবাসী ভারতীয় অনিতা গাটকারি। স্কুল এই বিষয়ে
সন্মতি দেবে কিনা তা জানতে দুই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন দেবপ্রসাদবাবু । দুই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা অনুমতি দেওয়ায় এদিন সকালে শ্যালিকা ও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে দেবপ্রসাদবাবু দুবরাজদীঘি হাইস্কুলে স্যানিটাইজার ট্যানেল লাগাতে যান ।
দেবপ্রসাদ বাবুর অভিযোগ তাঁরা দুবরাজদিঘী
হাইস্কুলে স্যানিটাইজার ট্যানেল লাগাতে গেলে প্রাক্তন কাউন্সিলর মহম্মদ আলি ও তার ভাইপো তথা তৃণমূল কংগ্রেসের যুবনেতা নুরুল আলম তাঁদের বাধা দেয়। ম্যানেজিং কমিটির অনুমতি না নিয়ে কারো ব্যক্তিগত নামে স্যানিটাইজার ট্যানেল স্কুলে লাগানো যাবে না বলে তাঁরা আপত্তি তোলেন । এইসব নিয়ে বাগবিতণ্ডা চলার সময়েই মহম্মদ আলি ও নুরুল আলমের নেতৃত্বে একদল তৃণমূল কর্মী তাঁদের উপর চড়াও হয়। হাতে বন্দুক, লাঠি ও রড প্রভৃতি নিয়ে তাঁদের উপর আক্রমণ চালানো হয় বলে অভিযোগ করেছেন দেবপ্রসাদবাবু। একই সঙ্গে তিনি বলেন, তাঁর সঙ্গে থাকা সেখ হায়দার আলি, সেখ খোকন, শশীরাম ও গোবিন্দা মাল নামে চার তৃণমূল কর্মী মারধোরে আহত হয়েছে । স্যানিটাইজার ট্যানেলটিও ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়। দলের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে ঘটনার কথা জানিয়েছেন বলে দাবি করেছেন দেবপ্রসাদবাবু।
যদিও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে নুরুল আলম জানিয়েছেন,দেবপ্রসাদবাবু কোন অনুমতি ছাড়া ব্যক্তিগত একজনের নামে স্যানিটাইজার ট্যানেল লাগাতে এসেছিলেন। কোনো সরকারি স্কুলে কোন কাজ করাতে গেলে ম্যানেজিং কমিটির অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন হয়। উনি তা না করে গায়ের জোরে এলাকায় নিজের কর্তৃত্ব ফলাতে এসেছিলেন। তাই তাকে বাধা দেওয়া হয়েছে। ম্যানেজিং কমিটিতে আলোচনা হবার পর স্যানিটাইজার ট্যানেল লাগানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানিয়েছেন স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বলেও দাবি করা নুরুল আলম।
দুবরাজদিঘী হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নবকুমার মালিক জানিয়েছেন,’দেবপ্রসাদ বাবু তাঁর কাছে স্যানিটাইজার ট্যানেল লাগানোর জন্য লিখিত আবেদন করেছিলেন। ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে তিনি ওনাকে এটি করতে বলেছিলেন। তবে স্যানিটাইজার ট্যানেল বসানো নিয়ে এদিন যা ঘটলো সেটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলে প্রধান শিক্ষক মন্তব্য করেছেন“ ।রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, “কি হয়েছে জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে ।’।