এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১৬ এপ্রিল : গঙ্গায় স্নানের ফাঁকে জলে ভেসে থাকা ডিঙ্গিতে বসে গল্পগুজব করছিলেন চার বন্ধু । তবে তাঁদের ডিঙ্গির উপরে বসে থাকা পছন্দ হয়নি নদীর পাড়ে থাকা কোনও ব্যক্তির । সেই কারনে ওই ব্যক্তি প্রথমে তাদের ডিঙ্গি থেকে উঠে যেতে বলেন । কিন্তু যেতে কিঞ্চিৎ বিলম্ব হওয়ায় তিনি ওই চারজনকে লক্ষ্য করে প্রথমে গাছের ডাল এবং তারপর ইঁটপাটকেল ছুড়তে শুরু করেন বলে অভিযোগ । এদিকে ইঁটের আঘাত থেকে বাঁচতে ওই চারবন্ধু পরিমরি করে গঙ্গায় ঝাঁপিয়ে পড়েন । তাদের মধ্যে তিন জন পাড়ে উঠে এলেও স্রোতের টানে তলিয়ে যায় এক যুবক । শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার মরিঘাটে । নিখোঁজ যুবকের নাম অপূর্ব পাল(১৯) । এই ঘটনায় ব্যপাক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায় । প্রথমে স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ হয় ডিঙ্গির মালিকই ওই চারজনকে লক্ষ্য করে ইঁটপাটকেল ছুড়েছিল । কিন্তু পরে জানা যায় ঘটনাস্থলে তখন ডিঙ্গির মালিক ছিলেন না । তাহলে চারবন্ধুকে লক্ষ্য করে কে ছুড়েছিল ইঁটপাটকেল ? পুলিশ জানিয়েছে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,পূর্বস্থলীর লক্ষীপুর গ্রামে বাড়ি অপূর্ব পালের । কাটোয়ার পালপাড়ায় তাঁর মামাবাড়ি । মামা নন্দ পাল পেশায় ব্যবসায়ী । আগে মামার বাড়িতেই থাকতেন অপূর্ব । বছর চারেক আগে বাড়ি চলে গেলেও প্রায়ই কাটোয়ায় আসতেন । পয়লা বৈশাখে মামার দোকানের হালখাতা উপলক্ষে দিন চারেক আগে কাটোয়ায় এসেছিলেন ওই যুবক । এদিন দুপুরে মরিঘাটের কাছে স্নান করতে গিয়েছিলেন । তাঁর সঙ্গে ছিল পালপাড়ার বাসিন্দা দেবজিৎ পাল নামে একাদশ শ্রেণীর এক ছাত্র । একই সময়ে তখন মরিঘাটে স্নান করতে গিয়েছিল অপূর্বদের বন্ধু জিৎ বিশ্বাস, ইন্দ্রজিৎ বিশ্বাস নামে দুই ভাই । চারজন মিলে তারা একপ্রস্থ স্নান সেরে ঘাটের পাশে বেঁধে রাখা একটি ডিঙ্গিতে বসে গল্পগুজব করছিলেন । সেই সময় পাড়ে থাকা জনৈক এক ব্যক্তি ডিঙ্গি থেকে তাদের উঠে যেতে বলে ।
জিৎ, ইন্দ্রজিৎদের কথায়, ‘আমরা উঠে যাচ্ছিলাম । কিন্তু তারই মাঝে ওই লোকটি আমাদের লক্ষ্য করে প্রথমে গাছের ডাল ছোড়ে । তারপর আচমকা ইঁটপাটকেল ছুড়তে শুরু করে । তখন আমরা ভয়ে নদীর জলে লাফ দিই । কিন্তু আমরা তিনজন পাড়ে উঠে দেখি অপূর্ব নেই ।’
খবর পেয়ে পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এসে যুবকের সন্ধানে গঙ্গায় তল্লাশি শুরু করে । কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি ।।