এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৫ নভেম্বর : এখনো পর্যন্ত বুথ লেভেল অফিসার-দের প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নাকি পশ্চিমবঙ্গের ভোটার লিস্ট থেকে ১০ লক্ষ নাম বাদ যাওয়ার তথ্য নির্বাচন কমিশন দিয়েছে বলে আজ মঙ্গলবার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে । নির্বাচন কমিশনের উদ্ধৃতি দিয়ে ওই সমস্ত পত্রিকাগুলি দাবি করেছে, “এই ১০ লক্ষের মধ্যে ৬.৫ লক্ষ মৃত ভোটার রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছেন একাধিক জায়গায় নাম, স্থানান্তরিত এবং নিরুদ্দেশ ভোটারও।” তবে প্রতিবেদনে অবৈধ রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ভোটারদের সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি । যদিও এটি পরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি ফের স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন যে যেমনভাবেই এসআইআর হোক না কেন অন্তত এক কোটি নাম বাদ যেতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের ভোটার তালিকা থেকে ।
আজ সকালে কলকাতার সল্টলেকে রাজ্য বিজেপির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী । তিনি বলেছেন,”আমাদের রাজ্যে মোট ভোটার ৭ কোটি ৬৬ লক্ষ । ফর্ম বিতরণ করা হয়েছে ৫ কোটি ২০ লক্ষ। প্রাথমিকভাবে ভুয়ো, মৃত ইত্যাদি ভোটার চিহ্নিত হয়ে ফর্ম ফিরে আসেনি ১৩ লক্ষ । ম্যাচ করেনি ২২ লক্ষ । অথচ কে বা কারা রটিয়ে দিলেন মাত্র ১০ লক্ষ নাম বাদ গেছে । কে ? তাদের চিহ্নিত করে রাখুন ।’
তিনি বলেন,”আমি না,১৯৯৫ সাল থেকে ভোটে লড়ছি । এক কোটির উপরে যাবে, তার নিচে নামবে না । যদিও একশ শতাংশ এসআইআর এখানে হবে না । তারপরেও ১ কোটির উপরে যাবে । যদি একশ শতাংশ হত তাহলে সংখ্যাটা আর একটু বাড়তো । কারণ বিহার তামিলনাড়ু সহ ১১ টা রাজ্যের সরকারের সাহায্য পাচ্ছে নির্বাচন কমিশন ।
কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে সেটা হচ্ছে না । এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিরোধ করে মিছিল করছেন । মুখ্যমন্ত্রী ধমকাচ্ছেন । মুখ্যমন্ত্রী তার চাকর বাকেরদের পাঠিয়ে ইলেকশন কমিশনের অফিসারদের কালকে রাত্রে একটা পর্যন্ত অত্যাচার করেছেন । এখনো লিফটের সামনে বসে আছে, তাদের কলকাতা পুলিশ টেনেহিঁচড়ে বের করছে না।”
জানা গেছে,রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের (CEO) দফতরে ধর্নায় বসেছেন কয়েকজন । তারা নিজেদের বিএলও বলে দাবি করে এসআইআর-এ অস্বাভাবিক কাজের চাপের জন্য বিএলও-দের মৃত্যুর অভিযোগ তুলে সিইও দফতরের বাইরে বসেই স্লোগান দিচ্ছেন । ধর্নায় বসা তনুশ্রী মোদক, সাহিফুল্লা হালদারদের বক্তব্য, “যতক্ষণ না পর্যন্ত মনোজ আগরওয়াল আমাদের সঙ্গে দেখা করছেন, বিএলও অধিকার মঞ্চের সঙ্গে এই ১৩ দফা দাবি নিয়ে আলোচনা করছেন, কালকের অপ্রীতিকর ঘটনার বিহিত হচ্ছে, আমরা ধর্না চালিয়ে যাব। এখানে বসেই থাকব।”
যদিও এই বিষয়ে মমতা ব্যানার্জির উদ্দেশ্যে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন,”আজকে ইলেকশন কমিশনের অফিসের ভেতরে সাতটা লোককে বসিয়ে রেখেছেন, যারা বিএলও নয়, আপনার পার্টির ক্যাডার, ইলেকশন কমিশনকে সাহায্য করছেন না, এরপরেও বলছেন কেন নয় ? আরো উদাহরণ দিতে হবে ?’ তিনি সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বলেন,”আপনার এখানে থেকে না থেকে ওখানে গিয়ে লাইভ করুন । যদি প্রকৃতপক্ষে সংবাদমাধ্যম সংবিধানের চতুর্থ স্তম্ভ হয় তাহলে ওখান থেকে লাইভ করে বলুন….সংবিধান আক্রান্ত ।” তিনি বলেন,”ইলেকশন কমিশন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ভোট করতে চাইছে । এসআইআর নতুন নয় । ইতিমধ্যে একাধিক বার এসআইআর হয়েছে । অতএব এই জায়গা থেকে আপনি বলছেন কেন ব্যাখ্যা দিতে হবে ?”
শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন,”আমাদের কথা ছেড়ে দেন । বেশ কয়েকবার আমরা মার খেয়েছি । অভয়ার মা মার খেয়েছে, বিচার চাইতে গিয়ে । চাকরিপ্রার্থীদের ওপর যেভাবে বর্বর হামলা করেন আপনারা…. মেট্রো স্টেশনের ভিতরে ঢুকে গিয়ে, শিয়ালদহ রেল স্টেশনের ভিতর ঢুকে গিয়ে…. হাজরা মোড়ে কালীঘাটের দিকে কারোর যাওয়ার উপায় নেই…. গাড়ি থেকে নামার আগে ঠেলে ঠুলে ভেতরে তুলে দেন । আর আজকে ইলেকশন কমিশনের অফিসের ভেতরে লোকেদের বসিয়ে রেখেছেন ।”।

