দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),০৬ জানুয়ারী : ধর্ষনের মামলায় বিচারক দোষী সাব্যস্ত করার পর অভিযুক্ত ব্যক্তিকে এজলাসের লকআপে যেতে বলার পর পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া অতিরিক্ত জেলা জজ ও দায়রা আদালতে (প্রথম) বিচারক অন্য একটি মামলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন । আর তখনই রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় এজলাস ছেলে দৌড়ে পালিয়ে গেল প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত জীতেন মাঝি নামে ওই ব্যক্তি । তাকে পাকড়াও করতে পিছু পিছু দৌড় লাগায় কয়েকজন । কিন্তু পেশায় জনমজুর জীতেনের নাগাল করতে পারেনি তাঁরা । শুক্রবার দুপুরের এই ঘটনায় রীতিমতো শোড়গোল পড়ে যায় কাটোয়া শহর জুড়ে । পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার (গ্রামীণ) ধ্রুব দাস জানিয়েছেন, অভিযুক্তের সন্ধান চলছে ।
আদালত সূত্রে জানা গেছে,কেতুগ্রাম থানার ছোট পুরুলিয়া গ্রামে বাড়ি জীতেন মাঝির । ওই গ্রামেরই বাসিন্দা প্রতিবন্ধী নির্যাতিতা কিশোরীর । মেয়েটি একা থাকার সূযোগে ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে তাকে ধর্ষণ করে জিতেন । নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ষককে গ্রেফতার করে কেতুগ্রাম থানার পুলিস । তাকে আদালতে তোলা হলে জেল হেফাজতে পাঠানো হয় । যদিও পরে জামিনে মুক্তি পায় জিতেন । এই মামলার শুনানি শেষ হয় ২০২২ সালের নভেম্বর মাস নাগাদ। এদিন শুনানির জন্য অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করাতে তার আইনজীবীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক ।
জানা গেছে,নির্দেশ মত এদিন জীতেন মাঝিকে সঙ্গে করে কাটোয়া মহকুমা আদালতের জেলা জজ ও দায়রা আদালতে (প্রথম) বিচারকের এজলাসে হাজির হন তার আইনজীবী নির্মল মণ্ডল । বিচারক অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন । আর এই রায় শোনার পর সকলের নজর এড়িয়ে গুটি গুটি পায়ে ভরা এজলাস থেকে সিড়ির কাছে চলে আসে জিতেন । তারপর সকলের নজর পড়লে বেশ কয়েকজন মিলে তাকে পাকড়াও করতে ছুটে যায় । কিন্তু সে দোতলা থেকে সিড়ি বেয়ে নেমে কাটোয়া শহরের কোনো একটি গলি দিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় । আদালতের কর্মী ও কাটোয়া থানার পুলিশ মিলে তাকে তন্নতন্ন করে খুঁজেও সন্ধান করতে পারেনি । জীতেন মাঝির আইনজীবি নির্মল মণ্ডল বলেন,’আদালতের নির্দেশ মত তাকে এদিন এজলাসে হাজির করিয়েছিলাম । কিন্তু অভিযুক্ত ব্যক্তি যে এভাবে পালিয়ে যাবে তা স্বপ্নেও কল্পনা করিনি ।’।