এইদিন ওয়েবডেস্ক,পূর্ব মেদিনীপুর,২৬ জুলাই : ২০১৮ সালে সে এক নাবালিকা হিন্দু মেয়েকে (১৪) অপহরণ, ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা ঘটেছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক থানার আওতাধীন চিয়ারা গ্রামে । কিশোরী নিখোঁজ হওয়ার পর ওই বছর ২ জুন যখন তার মৃতদেহটি খড়িবন থেকে বিবস্ত্র দেহ উদ্ধার হয় তখন দেহটি পচেগলে গিয়েছিল । এই ঘটনার তিনদিন পর, হাওড়ার কুলগাছিয়া থেকে শেখ হামিদুল আলী নামে একজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে । কিন্তু তথ্যপ্রমাণের অভাবে আজ শনিবার তাকে বেকসুর খালাস করে দিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিশেষ পকসো আদালত । এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলা হচ্ছে । উঠছে গাফেলতির অভিযোগ । নবম শ্রেণীর ওই ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ যে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণের নমুনাই পাঠায়নি তমলুক থানার পুলিশ।
অভিযুক্তের বেকসুর খালাস পেয়ে যাওয়ার ঘটনায় সাংবাদিকরা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন,’ধর্ষকদের প্রটেক্টর (সুরক্ষাদাত্রী) হচ্ছে রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । তিনি ধর্ষকদের আশ্রয়দাতা । কারণ তিনি কাকদ্বীপের ঘটনা তে বলেছিলেন সম্পূর্ণ ধর্ষণ হলে ২০ হাজার টাকা আর হাফ ধর্ষণ হলে ১০০০০ টাকা দেওয়া যেতে পারে। তিনি অভয়ার ঘটনার পরে বলেছিলেন বাবা-মা চাইলে আমি দশ লাখ দিতেই পারি ।’
তিনি বলেন,’এই রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী হলেন এমন এক ব্যক্তি, যার দপ্তরের একজন আইসির মা ও স্ত্রীকে ফোনে পাঁচবার ধর্ষণ করার কথা বলার পরেও অভিযুক্তের কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারেনা পুলিশ । কারণ তার ওপরে একটা বড় ছাতা রয়েছে । আর সেই ছাতা হলেন মমতা ব্যানার্জি । স্বাভাবিকভাবে এই যে মডেল, তার চেহেরা আরজি কর মেডিকেলের মত সঞ্জয় হতে পারে, মনোজিৎ মিশ্র হতে পারে, কালিয়াগঞ্জ এর জাভেদ হতে পারে, এরাই হচ্ছে পুলিশ মন্ত্রীর সম্পদ ।’
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’বারাসতের কলেজ ছাত্রীর যে ঘটনা ঘটেছিল সেই কামদুনির কেসে যাদেরকে বারাসত আদালত ফাঁসির সাজা দিয়েছিল, মমতা ব্যানার্জি ১৫ বার পাবলিক প্রসিকিউটর(পিপি) চেঞ্জ করে হাইকোর্ট থেকে তাদের বেকসুর খালাস করিয়ে এনেছে । টুম্পা মৌসুমীরা কিন্তু নিরাপত্তা পায়নি । আপনারা যদি যান তাহলে দেখবেন কামদুনির যারা ধর্ষক এখনো তাদের বাড়ি নিরাপত্তা দিচ্ছে বারাসত পুলিশ । তাই কোলাঘাট কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়৷ এটা পুলিশমন্ত্রী বা তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যপদ্ধতি । পুলিশ মন্ত্রী বটবৃক্ষের মতো ধর্ষকদের বাঁচিয়ে রেখেছেন এটাই তার পরিনতি ।’
মমতা ব্যানার্জির অপরাজিতা বিলে টেকনিক্যাল ত্রুটি
ধর্ষণের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে গত বছর বিধানসভায় ‘অপরাজিতা বিল’ পাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । বিধানসভায় পাশ হওয়ার পর সেটি পাঠানো হয় রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের কাছে । রাজ্যপাল সেটি পাঠিয়ে দেন রাষ্ট্রপতির কাছে। কিন্তু সেই বিল আবার ফিরে গেল রাজ্য সরকারের কাছে। রাজভবন জানিয়েছে যে, ওই বিল সংবিধানের নির্দিষ্ট কিছু বিধির পরিপন্থী। এমনকী শীর্ষ আদালতের রায়েরও পরিপন্থী বলে দাবি করা হয়েছে। এই বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’আমি বিধানসভায় প্রথমেই বলেছিলাম যে আপনারা বা আপনাদের লিগ্যাল ডিপার্টমেন্ট টেকনিক্যালি ভুল করছেন । কারণ তৃণমূলের লিগ্যাল ডিপার্টমেন্টের মলয় ঘটকরা হচ্ছে সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী । তাদের মেরুদন্ড নেই । একটাই পোস্ট আর বাকি সব ল্যাম্প পোস্ট । স্বাভাবিকভাবে ত্রুটিপূর্ণ বিল অনুমোদন করিয়েছেন উনি । উনি অত্যন্ত প্রো একটিভ হয়ে পড়েছিলেন । আমরা সমর্থনও দিয়েছি । কিন্তু তখন আমার বক্তব্য ছিল সেটা পাশ করানোর দায়িত্ব আপনার । কারণ আপনি ভালোভাবেই জানেন যে টেকনিক্যালি ভুল বিল পাস করেছেন আপনি। তাই মালের দায়িত্ব তো আরোহীকেই নিতে হবে ।’।

