এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,৩০ জুলাই : ছয় দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর এক যুবকের পচাগলা মৃতদেহ উদ্ধার হল মালদায় । আজ বুধবার সাত সকালে চাঁচল থানার গোরখপুর গ্রামের একটি বাঁশবাগানের পাশের ঝোপে ওই যুবকের দেহ পড়ে থাকতে দেখে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায় । খবর পেয়ে পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় । পরে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয় দেহটি । পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম নাহারুল হক (২৮) । তার বাড়ি গোরখপুর গ্রামে ৷ মৃতের পরিবারের অভিযোগ, এক বিবাহিত মহিলার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কের জেরে সুপারি কিলার লাগিয়ে খুন করা হয়েছে ওই যুবককে ।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গোরখপুর গ্রামের বাসিন্দা নাহারুল হক ছিলেন পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক । চাঁচল থানার মোবারকপুর গ্রামের এক তরুণীর সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক হয়েছিল । গত শুক্রবার( ২৫ জুলাই) নাহারুল হকের বিয়ের মোহর ছিল। সেই কারণে তিনি কয়েক দিন আগেই বাড়ি ফিরে এসেছিলেন । কিন্তু শুক্রবার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই দুপুরবেলায় লুঙ্গি এবং গেঞ্জি পরে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়ে যায় নাহারুল । অনেক খোঁজাখুঁজি করে যুবকের সন্ধান না পেয়ে ওইদিন রাতেই থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে পরিবার ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে কয়েকজন শিশু বাঁশ বাগানে শৌচক্রিয়া করতে গিয়ে প্রবল দুর্গন্ধ পায় । তারা দুর্গন্ধের উৎস খোঁজাখুঁজি করতেই যুবকের গলাকাটা পচাগলা ক্ষতবিক্ষত দেহ পড়ে থাকতে দেখে বাঁশবাগান লাগোয়া ঝোপের মধ্যে । পরে ওই শিশুদের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গ্রামবাসীরা ছুটে আসে । তখন তারা দেখে যে শুধু গলাকাটাই নয়, তার শরীরের একাধিক জায়গায় রয়েছে ধারালো অস্ত্রের কোপের গভীর ক্ষতচিহ্ন ।
মৃতের দাদা জামিরুল হকের কথায়, পার্শ্ববর্তী গ্রামের এক বিবাহিত মহিলার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে ছিল তার ভাই । ওই মহিলার একটি সন্তানও রয়েছে । ২৫ জুলাই তার ভাই নিখোঁজ হওয়ার সময় মোবাইল ফোন ও টাকাপয়সা বাড়িতে রেখে গিয়েছিল । ভাইয়ের মোবাইল ফোনের লক স্থানীয় মেকানিককে দিয়ে খুলিয়ে তারা দেখতে পায় যে মহিলার বেশ কিছু ছবিও রয়েছে । পাশাপাশি একই নম্বরে একদিনে শতাধিক ফোন কলের প্রমান পায় তারা । তার মধ্যে একটি কলের রেকর্ডে তারা শুনতে পান যে ওই মহিলা তার ভাইকে যাওয়ার জন্য খুব পীড়াপীড়ি করছে । আর সেই কলের পরই দুপুরে বাড়ি থেকে বের হয়ে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায় তার ভাই । তার অভিযোগ যে পরকীয়া সম্পর্কের কারণেই তার ভাইকে সুপারি কিলার লাগিয়া খুন করা হয়েছে । চাঁচলের এসডিপিও সোমনাথ সাহা জানিয়েছেন, পরিবারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে । সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে ৷।