এইদিন ওয়েবডেস্ক,ধুপগুড়ি,০৩ আগস্ট : স্কুলের পাশে বিস্তীর্ণ ধান জমি । সদ্য ধান রোয়ানো হয়েছে । আশপাশে তেমন বাড়িঘর নেই । চারিদিক তখন অন্ধকার । ঝিঁঝিঁ পোকার একটানা শব্দ । জমির পাশে মেঠো পথের পাশে অন্ধকারে দাঁড় করানো আছে একটা মোটরসাইকেল । মোটরসাইকেলের কাছে বসে তরুণ ও তরুণী । তরুণের সামনে রাখা একটা কেক । ছোট্ট একটা ছুরি দিয়ে সে কেক কাটছে । তখন তরুণী মৃদু গলায় বলছেন : “হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ” । এদিকে তখন যে স্থানীয় কয়েকজন যুবক তাদের পিছনে এসে দাঁড়িয়েছে সেটা ওই যুগল টেরও পায়নি । স্থানীয় যুবকরা যুগলকে তাদের পরিচয় জিজ্ঞেস করলে প্রথমে তারা নিজেদের দম্পতি বলে পরিচয় দেয় । কিন্তু তাদের পরিচয় পত্র দেখতে চাইলেই বেধে যায় হুলুস্থুল কান্ড । নিজের জন্মদিন উদযাপন করার যুবক তার সঙ্গিনী আর কেক ফেলে তড়িঘড়ি মোটরসাইকেল স্টার্ট করে পালানোর চেষ্টা করেন । কিন্তু নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইকটি নিয়েই তিনি উল্টে পড়েন সদ্য রোয়ানো ধান জমিতে । স্থানীয় যুবকরা তাকে চেপে ধরতেই অবশেষে সে স্বীকার করতে বাধ্য হয় যে তার সাথে থাকা মহিলা আসলে তার বন্ধুর স্ত্রী । এমনকি সে নিজেও বিবাহিত । তারপর এলাকায় হুলুস্থুল কাণ্ড বেধে যায় । খবর পেয়ে পুলিশ আসে । ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে ধুপগুড়ি শহরে ।
স্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়ার চ্যানেলের সেই প্রতিবেদন ভাইরাল হয়েছে । প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাত্রি সাড়ে সাতটা আটটা নাগাদ ধুপগুড়ি শহরের দক্ষিণ গোঁসাইয়ের পুলেরডাঙ্গা হাইস্কুলের পাশে । স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই দুই যুবক যুবতীকে তারা অন্ধকারে ঘোরাঘুরি করতে দেখে । সেখানে একটা কেক রাখা ছিল । তারা কেক কাটার মুহুর্তে সেখানে গিয়ে যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রেমিকা ও কেক ফেলে বাইক নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে সে । সেই সময় সে বাইক নিয়ে ধান খেতে উল্টে পড়ে । স্থানীয়রা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে যুবক প্রথমে জানায় যে তারা দম্পতি । কিন্তু পরিচয়পত্র চাইলে সে বিপাকে পড়ে যায় ।
ক
জানা গেছে, ইতিমধ্যে উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে ধূপগুড়ি থানার পিঙ্ক পুলিশ । ছুটে আসে মহিলার স্বামীও । তিনি তার স্ত্রী ও বন্ধুর এহেন আচরণ দেখে চরম ক্ষিপ্ত হন । তিনি তার স্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন,’তুমি এত নিচে নেমে গেছো ?’ পাশাপাশি বন্ধুকে বলেন, “তুই আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে এমন সর্বনাশ করতে পারলি ?” এরপর তিনি বন্ধুকে উত্তমমধ্যম দিতে শুরু করেন । স্থানীয় যুবকরা তাকে বাঁচায় । পরে পুলিশ এসে মহিলা, তার প্রেমিক এবং স্বামীকে থানায় নিয়ে যায় । তবে শেষ পর্যন্ত ঘটনার মোড় কোন দিকে গড়িয়েছে তা জানা যায়নি । যদিও মহিলা জানিয়েছেন যে তিনি তার স্বামীর বন্ধুকে ভালোবাসেন ।
এদিকে এই ঘটনাকে ঘিরে চরম ক্ষিপ্ত এলাকার বাসিন্দারা । স্থানীয় মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি পার্থ রায় ওই চ্যানেলের সাংবাদিককে বলেছেন,’আমাদের এলাকারও তো একটা পরিবেশ আছে। সেটাকে নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে । এটাই হল বড় জিনিস। যে কারণে এলাকায় জনরোষের সৃষ্টি হয়েছে ।’ তিনি বলেন,’এই ব্যাপারগুলো আমরা তো কোনদিন মেনে নিতে পারব না । আমরা সচেতন হয়ে গেছি । ভবিষ্যতেও ফের যদি এই ধরনের ঘটনা দেখি তাহলে আমরা পদক্ষেপ নেব ।’
স্থানীয়দের অভিযোগ যে ধুপগুড়ি শহরে পরকীয়ার ঘটনা ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে । এতে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। অনেকে ওই চ্যানেলের পোস্টের কমেন্ট সেকশনে মজাদার মন্তব্যও করছেন । মালা সরকার নামে এক মহিলা লিখেছেন,’ধুপগুড়ির নাম চেঞ্জ করে রাখা হোক প্রেমগুড়ি ।’ একই কথা বলেছেন মিলন নামে এক যুবকও । সুদীপ্ত দত্ত নামে একজন ধরা পড়া যুবকের ভিডিও দেখে মন্তব্য করেছেন, ‘আরে এটাতো বিপ্লব… ধুপগুড়ি মিলপাড়ায় বাড়ি…. ওই উত্তরায়ণ ক্লাবের পাশে জলের অফিসে কাজ করে । “ক” লিখতে কলম ভাঙ্গে । পার্টির দয়ায় কাজ পাইছে ।’ মলয় হর তার এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন,’মালটা তৃণমূলের পাতি নেতাও বটে ।’।