এইদিন ওয়েবডেস্ক,হুগলি,০১ নভেম্বর : হুগলির কামারপুকুর পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে এক যুবককে নৃশংসভাবে পিটিয়ে খুনের ঘটনা ঘটেছে । মৃতের নাম রামচন্দ্র ঘোষাল(২৬)। কামারপুকুরের তারক ঘোষালের একমাত্র পুত্র রামচন্দ্রের বাড়ি লাহাবাজার এলাকায়। এই ঘটনায় রাজু মাইতি নামে ঘাতক আটক করেছে গোঘাট থানার পুলিশ। এদিকে খুনের অব্যবহিত পরের মুহুর্তের একটা ভিডিও শেয়ার করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় আইটি ইনচার্জ অমিত মালব্য । ভিডিওতে প্যান্ট শার্ট পরা এক রক্তাক্ত যুবককে পা ছড়িয়ে মাথা হেঁট করে বসে থাকতে দেখা গেছে । তার পাশে দু’জনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে । ভিডিও রেকর্ড করা ব্যক্তিকে তাদের মধ্যে একজন ষণ্ডামার্কা যুবকের উদ্দেশ্য বলতে শোনা গেছে, “তুই মেরেছিস তো? আমি তোর সামনে ছিলাম, তুই মেরেছিস তো ?” উত্তরে ওই ষণ্ডামার্কা যুবককে বলতে শোনা যায়,”আমি মারিনি ।”
এই ঘটনায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে অমিত মালব্য লিখেছেন,’মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে পশ্চিমবঙ্গে কেউই নিরাপদ নয় – বিশেষ করে হিন্দুদের ক্ষেত্রে।কামারপুকুরের রামকৃষ্ণ মিশনের রঘুবীর মন্দিরের প্রধান পুরোহিত তারক ঘোষালের ছেলে রামচন্দ্র ঘোষালকে পুলিশ ফাঁড়ির কাছে জনসমক্ষে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।’
তিনি লিখেছেন,’শ্রী রামকৃষ্ণ দেবের মাতৃকুলের বংশধর রামচন্দ্র ছিলেন এক বিরাট আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের অধিকারী। আজ কামারপুকুরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মর্মান্তিকভাবে, মন্দির থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা জগবন্ধু ঘোষের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত একটি উৎসবের সময় এই ঘটনাটি ঘটে । যদি বিশ্বজুড়ে সম্মানিত একটি স্থানে, পুলিশ ফাঁড়ির এত কাছে, এমন ভয়াবহ অপরাধ ঘটতে পারে, তাহলে বাংলায় আসা ভক্ত এবং পর্যটকদের নিরাপত্তা সম্পর্কে কী বলা যায় ?’
জানা গেছে,শুক্রবার রাতে কামারপুকুরের লাহাবাজারে একটি ক্লাবের জগদ্ধাত্রী পুজোর নিরঞ্জন ছিল। রাতে নিরঞ্জনের পর ক্লাবের সামনে খাওয়াদাওয়ার আয়োজন ছিল। সেখানে অন্যদের রাখা তিনটি ডিম খেয়ে নিয়েছিলেন রামচন্দ্র ঘোষাল। তার পরই রামচন্দ্রের সঙ্গে কয়েকজনের বচসা হয়। তখনকার মত ঝগড়া থেমেও যায়৷ পরে তিনি বাড়ি ফেরার সময় আবার এক দফা বাগ্বিতণ্ডা হয়। রাজু মাইতি নামে এক যুবক রামচন্দ্রকে মারতে মারতে কামারপুকুরে শ্রীধাম প্রতীক্ষালয়ে নিয়ে যান। সেখানেই থেকে ফেলে চলে যান। পরে স্থানীয় লোকজন ওই যুবককে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করেন। তাঁকে কামারপুকুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
রামচন্দ্রের মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকজন। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে এলাকায়। মৃতের বাবা ঘাতকের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন ।।

