এইদিন ওয়েবডেস্ক,আউশগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),০৩ জুন : ফের রাজ্য পুলিশের এক কীর্তি প্রকাশ্যে এলো ! আসলে,প্রতিবেশী বধূর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়েছিল এক বিবাহিত যুবক । বধূর স্বামী পুলিশের দ্বারস্থ হন । পুলিশ ওই যুগলকে বিয়ে দিয়ে দেওয়ার নিদান দেয় বলে অভিযোগ । পুলিশের কথামত বিয়েও হয় তাদের ৷ কিন্তু বধূর স্বামী মন থেকে পুলিশের এই নিদান মেনে নিতে পারেননি । শেষ পর্যন্ত লজ্জায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হলেন বধুর স্বামী । এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার আউসগ্রামের দারিয়াপুরে । দারিয়াপুরের ডোকরা পাড়ার বাসিন্দা উৎপল কর্মকার(৩৭) নামে ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ আজ মঙ্গলবার সকালে উদ্ধার হলে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গ্রামে । পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করতে গেলে পুলিশকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা । পাশাপাশি তারা মৃতের স্ত্রী লক্ষ্মী ও তার প্রেমিক প্রতিবেশী সুরেশ কর্মকারকে আটকে রেখে দেয় । দিনভর এনিয়ে চলে তুমুল উত্তেজনা । আইনত বিবাহ বিচ্ছেদ না হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ কিভাবে তাদের বিয়ের নিদান দিতে পারে ? এনিয়ে প্রশ্ন তুলছেন গ্রামবাসীরা । যদিও পুলিশ এখন দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ ।
জানা গেছে,দারিয়াপুরের ডোকরা পাড়ার বাসিন্দা উৎপল কর্মকার ও লক্ষ্মীর ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে । তাদের প্রতিবেশী সুরেশ কর্মকার । সে বিবাহিত । তার বাড়িতে রয়েছে স্ত্রী, চার মেয়ে ও একটি ছেলে । তারপরেও লক্ষ্মী ও লক্ষ্মীর পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন । সসম্প্রতি স্ত্রীর এই অবৈধ সম্পর্কের কথা জানতে পারেন উৎপল । ছেলেমেয়ের কথা ভেবে তিনি স্ত্রীকে সম্পর্ক থেকে সরে আসার জন্য বলেন। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি । শেষে গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশের দ্বারস্থ হন উৎপল । মৃতের প্রতিবেশী রাখী তুড়ি,সময় তুড়িরাদের অভিযোগ,উৎপল চেয়েছিল তার স্ত্রীকে এই সম্পর্ক থেকে বের করে নিয়ে আসতে পুলিশ তাকে সাহায্য করুক । কিন্তু পুলিশ লক্ষ্মী ও সুরেশের বিয়ের ফরমান শুনিয়ে দেয় পুলিশ । এরপর সোমবার রাতে লক্ষ্মীকে সিঁদুর দান করে বিয়ে করে সুরেশ । আর সেই রাতেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয় উৎপল। আজ সকালে তাকে বাড়ির একটা ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায় ।
জানা গেছে,গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করতে গেলে গ্রামবাসীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন । তার আগে আটকে রেখে দেওয়া হয় সুরেশ ও লক্ষ্মীকে । পুলিশ তাদের উদ্ধার করতে গেলে গ্রামবাসীরা পুলিশকে ঘিরে ধরে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় । শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি । সেই সময় জখম হয় সুরেশ ও লক্ষ্মী। পুলিশ কোনো রকমে তাদের থানায় নিয়ে যায় । কিন্তু ক্ষিপ্ত জনতা লাঠিসোঁটা হাতে একটা লরিতে চড়ে গুসকরা ফাঁড়িতে ধাওয়া করে । কিন্তু গুসকরা রেলগেটের কাছে তাদের আটকে দেয় পুলিশ । পুলিশের বাধায় শেষ পর্যন্ত তারা গ্রামে ফিরে আসে ।
জানা গেছে,লক্ষ্মীকে গুসকরা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে । সমগ্র ঘটনায় পুলিশ কয়েকজনকে আটক করেছে । পাশাপাশি মৃতদেহটি বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে । এদিকে পুলিশের দুই বিবাহিত নারী-পুরুষের বিয়ে দেওয়ার ফরমানে জেলা জুড়ে তীব্র অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে । যদিও পুলিশ দায় এড়াতে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে । কিন্তু গ্রামবাসীর অভিযোগ যে পুলিশ মিথ্যা কথা বলছে ।।

