এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,১০ আগস্ট : আপাত দৃষ্টিতে মনে হবে নালা । বর্ষার ভারি বৃষ্টিপাতে জমেছে এক কোমড় জল । দু’পাশে পিচ্ছিল পাঁক । হাতে লাঠি নিয়ে সেই কোমড় অব্দি জলের উপর দিয়ে পারাপার করছেন গ্রামের বয়স্ক মানুষরা । কচিকাঁচা স্কুল পড়ুয়াদের পার করানো হচ্ছে কাঁধে চাপিয়ে । কয়েকজন মিলে জমা জলে মাছ ধরার ভঙ্গিতে জাল ফেলছেন । আজ রবিবার মালদার রতুয়া-১ ব্লকের চাঁদমুণি-১ অঞ্চলের খাসপাড়া গ্রামের যাতায়াতের রাস্তাতে এমনই চিত্র দেখা গেল । যদিও আজকের এই চিত্রটা গ্রামবাসীদের গান্ধীবাদী প্রতিবাদের অঙ্গ ছিল । তবে খাসপাড়া গ্রামের গৌরীপুর বুথ এলাকার চলাচলের মূল রাস্তাটি বাসিন্দাদের জন্য নরক যন্ত্রণা থেকে কম কিছু নয় । গ্রামবাসীদের অভিযোগ যে পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে প্রশাসনিক দপ্তরে তারা বহু তদ্বির করেছেন। কিন্তু শাসকদলের নেতা ও অফিস বাবুদের টনক নড়েনি । তবে আর নয়,এবারে রাস্তা পাকা না হলে এসডিও ও ডিএম অফিস ঘেরাও করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গ্রামবাসীরা । এদিকে খাসপাড়া গ্রামের গৌরীপুর বুথ এলাকার রাস্তার বেহাল অবস্থা নিয়ে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে শুরু হয়েছে তরজা । এনিয়ে তৃণমূলের কড়া সমালোচনা করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। অন্যদিকে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, ইতিমধ্যে পথশ্রী প্রকল্পে ওই রাস্তা তৈরির করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে ব্লক দপ্তরে। তারা আশা করছেন যে বর্ষার পরেই রাস্তার কাজ শুরুর উদ্যোগ নেবে প্রশাসন। কিন্তু তৃণমূলের ১৪ বছরের শাসনকালের মধ্যে ওই গ্রামের রাস্তা পাকা করার কাজ কেন হয়নি ? এই প্রশ্ন তুলছে বিজেপি । যদিও সদুত্তর মেলেনি ।
জানা গেছে,চাঁদমুনি খাসপাড়া গ্রামের প্রায় দেড় কিমি রাস্তা দীর্ঘদিন বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে । রাস্তায় বড় বড় খানাখন্দে ভরা । শুকনো মরশুমে কোনো রকমে চলাচল করা গেলেও বর্ষার সময় কার্যত গৃহবন্দী থাকতে হয় গ্রামবাসীদের । স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহিম, রবিউল আলমদের অভিযোগ, রাস্তাটি পাকা করার জন্য একাধিকবার পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, বিডিও এমনকী এলাকার বিধায়ক-সাংসদের কাছে তদ্বির করা হয়েছিল । গালভরা প্রতিশ্রুতি মিলেছে, কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি ।
জানা গেছে,খাসপাড়া গ্রামে মূলত কৃষিজীবীদের বসবাস । ফলে প্রতিবছর মাঠ থেকে বাড়িতে শষ্য আনতে গিয়ে তাদের চরম বিপাকে পড়তে হয় । আর বর্ষার মরশুম পরলেই স্কুল পড়ুয়াদের খুলে যাওয়া কার্যত বন্ধ হয়ে যায় । তবে সবথেকে বিপাকে পড়তে হয় কেউ অসুস্থ হলে । রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে গিয়ে কার্যত কালঘাম ছোটে পরিবারের লোকজনদের । ওই রাস্তার বিষয়ে শাসকদলকে কটাক্ষ করে অভিষেক সিংহানিয়া বলেছেন,’রাজ্যে তো কাটমানির সরকার চলছে । তাই হয়তো রাস্তা পাকা করার জন্য বরাদ্দ টাকা তৃণমূলের হয়তো খেয়ে ফেলেছে ।’ অন্যদিকে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অজয় সিনহার প্রতিক্রিয়া, ‘পথশ্রী প্রকল্পে ওই রাস্তা তৈরির করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে । বর্ষা চলে যাওয়ার পর কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে আশা করছি ।’ একই আশ্বাস দিয়েছেন রতুয়া-১ ব্লকের বিডিও রাকেশ টোপ্পো ও চাঁদমুনি-১ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তানজিমা খাতুনও ।।