প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৪ জুলাই : মানসিক ভারসাম্য খুইয়ে ফেলে বাংলা টিভি সিরিয়ালের অভিনেত্রী সুমি হর চৌধুরী এখন বনে গিয়েছেন ভবঘুরে । তার অসহায় অবস্থা দেখে দুখি বর্ধমানের মানুষজন। পরনে হাফ প্যান্ট আর ফুল হাতা জামা। পায়ে হাওয়াই চটি। এমন বসন পরিহিত মাঝ বয়সী এক মহিলাকে সোমবার বেলায় পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের আমিলা বাজার এলাকায় প্রথম দেখতে পান সেহারাবাজারের বাসিন্দা সেখ আলাউদ্দিন ওরফে সুমন নামে এক যুবক । মহিলা বর্ধমান- আরামবাগ রাজ্য সড়ক ধরে উদ্ভ্রান্তের মত হেঁটে যাচ্ছিলেন । বৃষ্টি নামতেই তিনি আমিলা বাজারে থাকা বিশ্রামাগারে ঢুকে পড়েন । আর সেখানেই বাসের প্রতীক্ষা করছিলেন সুমন । মহিলার পোশাক পরিচ্ছদ ও কথাবার্তায় সম্ভ্রান্তের ছাপ দেখে তিনি মহিলাকে দু’চার কথা জিজ্ঞাসা করেন । ততক্ষণে আরও কিছু লোকজন জড়ো হয়ে যায় সেখানে ।
আমিলা বাজার এলাকায় থাকা মানুষজন খুবই কৌতুহল নিয়ে মহিলার কাছে তাঁর পরিচয় জানতে চান। অসাঞ্জস্যপূর্ণ কথাবার্তা বলার ফাঁকেই মহিলা বলেন,“আমি সুমি হর চৌধুরী।আমি টিভি সিরিয়ালের অভিনেত্রী ।” স্টার জলসায় হওয়া ধারাবাহিকে অভিনয় করার কথাও মহিলা জানান । এরপর ওই নাম ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রোফাইল ঘেঁটে কৌতুহলী মানুষজন নিশ্চিত হন, মানসিক ভারসাম্য খুইয়ে ফেলা এই মহিলা মিথ্যা বলছেন না। তিনি সত্যি সত্যি যে টিভি সিরিয়ালে অভিনয় করছেন,সেই ব্যাপারেও সোশ্যাল মিডিয়া ঘেঁটে আমিলা বাজার এলাকার মানুষজন একপ্রকার নিশ্চিত হন।
অভিনেত্রীর এমন অবস্থা কি করে হল সেই ব্যাপারে আমিলা বাজার এলাকার মানুষজন জানার চেষ্টা করেন । তবে সেই ব্যাপারে মহিলার কাছ থেকে পরিস্কার কিছু তারা জানতে পারেননি । একই ভাবে মহিলার কাছে তাঁর বাড়ি কোথায় জানতে চেয়েও সঠিক উত্তর পাননি আমিলা বাজার এলাকার মানুষজন। তারা বলেন ,মহিলা কখনো জানায় তাঁর বাড়ি কলকাতায় । আবার কখনো তিনি বলেন আমি বোলপুর এখানে এসেছি। কোথা থেকে তিনি এলেন? কেনই বা তিনি উদ্ভ্রান্তের মতো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন? অনেক চেষ্টা করেও এই সব প্রশ্নের উত্তর মহিলার কাছ থেকে উদ্ধার করতে পারেননি আমিলা বাজারের কৌতুহলী মানুষজন।
মহিলাকে অবশ্য আর একা ছাড়েন নি আমিলা বাজার এলাকার সহৃদয় মানুষ ।তারা এদিন বিকালে মহিলাকে খণ্ডঘোষ থানার পৌছে দেন। বর্ধমান দক্ষিণ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ( এসডিপিও ) অভিষেক মণ্ডল সন্ধ্যায় জানান,মহিলাকে হোমে পাঠানো হয়েছে। কলকাতার বেহালা থানাতেও এই মহিলার বিষয়ে খবর পাঠানো হয়েছে। মহিলার পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে । তবে এখনো যোগাযোগ করা যায় নি বলে এসডিপিও জানিয়েছেন।।

