এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,১৮ জানুয়ারী : ইসলামি রাষ্ট্র বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুমেয়েদের মুসলিম প্রেমিকদের প্রেমের ফাঁদে পড়ে ধর্ম পরিবর্তন ও নিকাহ তো করে কিন্তু অচিরেই তাদের অধিকাংশ জনের ভুল ভাঙে । বাপের বাড়ির নিষেধ অমান্য করে প্রেমিকের হাত ধরে ঘরছাড়ার পরিণতি তাদের মারাত্মক হয় । স্বামীর দ্বারা প্রতারিত ওই সমস্ত মেয়েদের বাবার বাড়ির সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় ঠাঁই হয় খোলা আকাশের নিচে । এমনই এক করুণ পরিণতির মুখে পড়তে হয়েছে বাংলাদেশের কেশবপুরের তরুনী টুম্পাকে ।
একটি ভিডিওতে ওই তরুণীকে উদভ্রান্ত অবস্থায় দেখা যায় । তরুণী বলেন যে সাতক্ষীরা বাসিন্দা সৌরভ নামে এক যুবকের সঙ্গে তার ফোনে পরিচয় হয় । সৌরভের বাবার নাম নিজামউদ্দিন । ক্রমে তারের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । এরপর সৌরভ তাকে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে একটি মন্দিরে হিন্দুরীতি অনুযায়ী বিয়ে করে । বিয়ের পর তারা স্বামী স্ত্রীর মতোই বসবাস শুরু করে ঢাকাতে । অবশ্য মাঝে মধ্যে সে নিজের বাড়ির সাতক্ষীরাতে আসতো ।
তরুণী জানান যে ঢাকার যমুনাতে একটা কোম্পানিতে তিনি কাজ করেন । সাম্প্রতিক কিছু সময় ধরে তার স্বামী কোম্পানির বসের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য চাপ দিতে থাকে । তরুণীর কথায়, তাদের অফিসের বস প্রথম থেকেই তার ওপর কুনজর দিচ্ছিল । তরুণী জানান যে তার স্বামীর এই কুপ্রস্তাবে রাজি হননি । তিনি তার স্বামীকে বলেন তার সংসারের দায়িত্ব সেই নিক এবং তিনি গৃহবধূ হিসেবে সংসারের দায়িত্ব সামলাবেন । পরিবর্তে তার স্বামী তাকে ঢাকায় ফেলে রেখে নিজের বাড়ি চলে আসে । তারপর সে আর ঢাকা মুখো হয়নি ।
তরুণীর কথায়, ইতিপূর্বে তাকে একবার সাতক্ষীরায় আসতে বলেছিল মীমাংসার জন্য । তিনি গিয়েছিলেনও । কিন্তু কোন সমাধান সূত্র বেরোয়নি । সম্প্রতি ফের তাকে সাতক্ষীরায় আসার জন্য বলা হয় । কিন্তু তিনি শ্বশুরবাড়ি যেতেই তাকে ব্যাপক মারধর করে ৫০ হাজার টাকা, কিছু গহনা এবং দুটি মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় শ্বশুর বাড়ির লোকজন । তরুণী আরো জানিয়েছেন যে বিয়ের পর থেকেই তার বাবার বাড়ি তার সঙ্গে কোন সম্পর্ক রাখেনি । এখন তার বাবা-মা তাকে বাড়িতে ঢোকার অনুমতি দেবে কিনা তা তিনি জানেন না । তরুণী জানিয়েছেন, তার বাড়িতে আছেন বাবা, মা,এক ভাই এবং এক বোন । তবে তরুণীকে উদ্ভ্রান্ত দেখালেও তার কথাবার্তায় বিশেষ দুঃচিন্তার কোন লক্ষণ দেখা যায়নি ।
পৃথক একটি ঘটনায় বাংলাদেশ হিন্দু জাগরণ মঞ্চ জানিয়েছে আরো করুন পরিণতির মুখে পড়তে হয়েছিল আরো এক হিন্দু তরুণীকে । ঘটনাটি বছর চারেক আগের । ২০২১ সালের ২৪ জুলাই আইন জিজ্ঞাসা, আইনি পরামর্শ, সেবা এবং তথ্য ভান্ডারে (হোমনা) পরামর্শ চাওয়া ওই তরুনীর লেখা আবেদনপত্রটি ওই পেজে শেয়ার করা হয়েছে । যেখানে তনয়া জান্নাত নীলিমা নামে তরুণী লিখেছিলেন,’আমি হিন্দু থেকে মুসলিম হওয়ায় আমার পরিবার মেনে নিতে না পারায় আমাদের হয়রানি করিতেছে (খোলাচিঠি) । আমি তনয়া জান্নাত নিলিমা, (পূর্বের নাম-চৈতি সরকার) জন্ম তারিখ-১৮/১০/১৯৯৯ ইং, পিতা-মৃত- সুধীর সরকার, মাতা-প্রিয়াংকা সরকার, সাং মিরিকপুর, পোঃ-মিরিকপুর ১৯২০, থানা-বাসাইল, জেলা-টাংগাইল, ধর্ম-ইসলাম। আমাকে আমার মুসলিম স্বামী তানজিদ আহম্মেদ এর থেকে আলাদা করতে টাংগাইল জেলার বাসাইল থানায় একটি মিথ্যা অপহরন, ৫০ হাজার টাকা সহ স্বর্নলংকার সিনিয়ে নেওয়ার জিডি করে ডিবি পুলিশ দিয়ে আমাদের হয়রানি করিতেছে। জিডি নং ৯০০ (২৬/০৬/২০২১) ইং। আমি আমার নিজের ইচ্ছায়, অন্যের বিনা প্ররোচনায়, স্বজ্ঞানে, সুস্থ মস্তিষ্কে, প্রথম শ্রেনীর ম্যাজিস্ট্রেট/ নোটারী পাবলিক এর কার্যালয়, ঢাকা, স্ব শরীরে উপস্থিত হয়ে বিগত ১০/০১/২০২১ ইং তারিখে সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করি এবং আমার নাম চৈতি সরকার পরিবর্তন করে ইসলাম ধর্মের মতে “তনয়া জান্নাত নিলিমা ” নামটি সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য করার জন্য মাননীয় আদালত অনুমতি দেন। আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহন করার পরিপ্রেক্ষিতে আমি আমার নিজের থেকে সিদ্ধান্ত নিছি একজন মুসলিম ছেলেকে বিবাহ করার জন্য। তাই আমি বিগত ১৫/০৬/২০২১ ইং তারিখে মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা ২০০৯ এর বিধি ২৮(১) (ক) অনুযায়ী মোঃ তানজিদ আহম্মেদ, জন্ম তারিখ- ১৮/০৮/১৯৯৮) ইং, পিতা, মোঃ ফজলু মিয়া, সাং- ব্রাক্ষনপাড়িল, পোঃ+থানা-বাসাইল, জেলা-টাংগাইল। এর সাথে মুসলিম রীতি-নীতি অনুযায়ী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সকল প্রসাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করছি যে, আমার ইসলাম ধর্ম গ্রহন করা এবং মুসলিম ছেলেকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া আমার পরিবার ও আমার চাচাতো ভাই সহ আমার পরিবারের আরও অনেকে মেনে নিতে পারেনি, তাই তারা আমাকে এবং আমার সদ্য বিবাহিত বরকে এবং বরের পরিবার বর্গ দিগকে নানা রকম হুমকি, ধামকি, মামলার মাধ্যমে হয়রানি এবং মেরে ফেলার পায়তারা করিতেছে। সকলের নিকট আমার আকুল আবেদন আমি যাহাতে সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম ইসলাম এর রীতিনীতি পালন পূর্বক সদ্য বিবাহিত স্বামীকে নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস ও জীবন যাপন করিতে পারি সকলের কাছে দোয়া ও সহযোগিতা প্রত্যাশী।’
অবশ্য এই তরুনীর কিছুদিনের মধ্যেই মোহভঙ্গ হয় । তার পোস্ট করা আরেকটি স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়েছে ওই পেজে । যেখানে তনয়া জান্নাত নিলীমা নামে ওই তরুণী লিখেছেন,’এমন একটা পুরুষ চেয়েছি সারাজীবন যে কিনা আমার মুখে হাসি দেখার জন্য তার জীবনের সব সুখ ত্যাগ করতে পারে,,,, কিন্তু তার উল্টা হইলো সব,, তার জন্য আমি আমার সুখ তো দূরে থাক নিজের পরিচয় টাও পাল্টে ফেললাম,, কিন্তু জীবনে কি পেলাম কি হারালাম কোনো কিছুর হিসাব মিলাতে পারলাম না,,, আমি কতটা বেঈমান হইলে নিজের মাকে এতটা কষ্ট দিতে পারি। আমার জীবনে আমি আমার মা এর থেকে বেশি কষ্ট কাউকে দেইনি,,, আর আমার মা এর থেকে ভলোও আমাকে কেউ বাসতে পারেনি,, এখন যে মা এর কাছে ক্ষমা চাইবো সেই সুযোগ টা ও নেই আমার কাছে কতটা অসহায় হইলে জীবনে এমন সময় আসে ।’বাংলাদেশ হিন্দু জাগরণ মঞ্চ প্রতিক্রিয়ায় লিখেছে,সনাতন ধর্ম পরিবর্তন করে কেউ কোনদিন সুখী হতে পারিনি আর পারআেওনা এর তার বর প্রমাণ।’।