প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১০ফেব্রুয়ারি : করোনা অতিমারীর প্রভাব শিথিল হতেই খুদে পড়ুয়াদের স্বার্থে রাজ্য সরকারের নির্দেশে শুরু হয়েছে ’পাড়ায় শিক্ষালয়’।সেই শিক্ষালয় নিয়েই গান রপ্তকরে গেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে খুদে ছাত্র অভিষেক সানা।পূর্ব বর্ধমানের বড়শুল নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র অভিষেকের গাওয়া গান ’পাড়ায় শিক্ষালয়’ কর্মসূচীকে মাধুর্য দিয়েছে বলেই মনে করছেন প্রশাসনের কর্তারা।তাঁদের মতে অভিষেকের গাওয়া গান খুদে পড়ুয়াদের পাড়ার শিক্ষালয়মুখী হতে উৎসাহ যোগাচ্ছে।
করোনা অতিমারির বাড়বাড়ন্তে তৈরি হয়েছিল আতঙ্ক।তার কারণে প্রায় দু’বছর ধরে এই রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।তার কারণে স্কুলমুখী আর হতে না পেরে খুদে পড়ুয়ারাদের দিন কাটছিল ঘরে বন্দি থেকেই ।’শুধু তাই নয়,’করোনা’ স্কুল গুলি থেকে কেড়ে নিয়েছিল পড়ুয়াদের কোলাহলও।শুধু কি তাই, বাজেনি স্কুলের ক্লাস শুরুর ঘন্টা।ক্লাসের চেয়ার, টেবিল সবেতেই পড়ে গিয়েছিল ধুলোর আস্তরণ । চলতি সময়ে সংক্রমণ শিথিল হতেই এই রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দল ও তাদের ছাত্র সংগঠন গুলি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে জোরদার আন্দোলনে নামে।পড়ুয়াদের অভিভাবক ও শিক্ষানুরাগীরাও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে সরব হন । বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে মামলাও হয়। এরপরেই রাজ্য সরকার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নেয়।গত ৩ ফেব্রুয়ারি ফের খুলে যায় এই রাজ্যের সমস্ত স্কুলের সদর দরজা । পড়ুয়া কোলহলে ফের ভরে ওঠে স্কুল প্রাঙ্গন । শুধুমাত্র প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণীর খুদে পড়ুয়াদের জন্য সরকার ভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয় । ক্লাসরুমে পড়াশুনার বদলে খুদে পড়ুয়াদের জন্য ’পাড়ায় শিক্ষালয়’ কর্মসূচি নেয় রাজ্য সরকার।রাজ্যের অন্যান স্কুলের পড়ুয়াদের মতই বড়শুল নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালের পড়ুয়ারাও সরকারের ’পাড়ায় শিক্ষালয়’ খোলার সিদ্ধান্তের কথা জেনে খুশিতে ভরে ওঠে।আর সেই খুশিতেই নিজের সংগীত গুরু মঙ্গল কালিন্দির লেখা ও সুর দেওয়া গান রপ্ত করে ফেলে বড়শুল নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের ছাত্র অভিষেক সানা। ওই গান গেয়েই এখন অভিষেক ’পাড়ায় শিক্ষালয়ের’ আসরও মাতাচ্ছে ।
’পাড়ায় শিক্ষালয়’ নিয়ে খুদে ছাত্র অভিষেকের গাওয়া গান মুগ্ধ করেছে বর্ধমান সদর ২ ব্লকের বিডিও সুবর্ণা মজুমদারকেও । তিনি বলেন,’করোনা অতিমারির কারণে পড়ুয়ারা দীর্ঘদিন স্কুলমুখী হতে পারে নি । বাচ্চারা অনেকদিন স্কুল চ্যুত ছিল । তাদের কথা বিবেচনা করে সরকার ’পাড়ায় শিক্ষালয়’ চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এটা খুব ভালো উদ্যোগ’।বড়শুল নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের শিক্ষক অনুপম সাধু বলেন,’ প্রায় দু‘বছর বিদ্যালয় বন্ধ ছিল। মুক্ত প্রাঙ্গনের ’পাড়ায় শিক্ষালয়ে’ এখন আবার ফিরে এসেছে খুদে পড়ুয়াদের কোলাহল ।সেখানে শিশুদের পাঠদান করতে পেরে আমরা শিক্ষকরাও খুশি । তারই মধ্যে সেখানে উপরি পাওনা হিসাবে মিলছে ’পাড়ার শিক্ষালয়’ কর্মসূচী নিয়ে আমাদের বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র অভিষেক সানার গান ।’।