এইদিন ওয়েবডেস্ক,আসানসোল(পশ্চিম বর্ধমান), ৩০ আগস্ট : পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের ডামরা এলাকায় ঝোপজঙ্গলের মধ্যে এক কিশোরীর অর্ধনগ্ন মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ ৷ লতাপাতা চাপা দেওয়া মেয়েটির দেহ উবুড় করে রাখা ছিল । শুক্রবার সকালে আসানসোল দক্ষিণ থানার ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে একটি খোলামুখ খনির সামনের পলাশবনের মধ্যে দেহ উদ্ধারের পর রাকেশ পাসওয়ান নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ । পুলিশ কিশোরীর পরিচয়ও জানতে পেরেছে । পুলিশ জানতে পেরেছে যে কিশোরী দশম শ্রেণির ছাত্রী । সে দুর্গাপুরের গোপালমাঠ এলাকার বাসিন্দা । জানা গেছে,একটা ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় মেয়েটি । তারপর আর সে বাড়ি ফেরেনি । স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ যে মেয়েটিকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে । এদিকে এই ঘটনায় রাজ্যের নারী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল ।
অগ্নিবিত্রা পাল বলেছেন, আসানসোলের দামরা অঞ্চলে দুর্গাপুরের এক তরুণীকে নৃশংসভাবে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। প্রধান অভিযুক্ত ধরা পড়লেও প্রশ্ন এখানেই শেষ নয়। বাংলার নারীদের নিরাপত্তা আজ কোথায় দাঁড়িয়ে? প্রতিদিন ধর্ষণ, খুন, নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে, আর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর সরকার নীরব দর্শকের মতো চুপচাপ বসে আছেন। গতকাল জাতীয় মহিলা কমিশনের NARI রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে, যেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে কলকাতায় নারীর নিরাপত্তা নেই। রাজধানী শহর যখন সুরক্ষাহীন, তখন গোটা বাংলার পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ তা সহজেই অনুমেয়। দামরার এই ভয়াবহ ঘটনা সেই রিপোর্টের সত্যতাকে আরও একবার প্রমাণ করে দিল।’ তিনি আরও বলেছেন,’এটা শুধুমাত্র এক তরুণীর মৃত্যু নয় এটা গোটা বাংলার নারীসমাজের সম্মানের মৃত্যু। আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে, অপরাধীরা অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে, আর মুখ্যমন্ত্রী কেবল মঞ্চে নারী সুরক্ষার বুলি আওড়ে দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন। আজ বাংলার মেয়েরা একটাই প্রশ্ন করছে আমরা কি আর বাঁচব? আমাদের ঘরে, আমাদের রাস্তায়, আমাদের শহরে কি কোনো নিরাপত্তা আছে? মুখ্যমন্ত্রী, আপনার কাছে কি আমাদের প্রশ্নের উত্তর আছে?’
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আসানসোলের বেআইনি কয়লা খাদান বা পাথর খাদানগুলি দুষ্কৃতীদের আখড়া হয়ে গেছে । এলাকায় দুষ্কৃতীদের এতটাই দৌরাত্ম্য যে সাধারণ মানুষ যাতায়াত করতে ভয় পায় । অথচ পুলিশ নির্বিকার দর্শকের ভূমিকা পালন করে বলে অভিযোগ তাদের৷
এদিকে আজ শনিবার ধৃতকে আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ । তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে । এই হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য এবং এর সঙ্গে আর কেউ যুক্ত আছে কিনা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ । পাশাপাশি নিহত কিশোরীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে৷ তবে স্থানীয় বাসিন্দারা মেয়েটির দেহ দেখে কার্যত আঁতকে ওঠেন । তাদের দাবি, মেয়েটির শরীর তালগোল করে পাকানো অবস্থায় পড়ে ছিল এবং তাদের অনুমান যে নিদারুন কষ্ট দিয়ে নৃশংসভাবে মেরে ফেলা হয়েছে তাকে৷ পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারন জানা যাবে ৷।