এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,২৮ আগস্ট : স্কুলের হিন্দু শিক্ষার্থীদের ইসলাম ধর্ম গ্রহণের জন্য চাপ দেওয়া, ইসলাম ধর্মের বই পড়ানো এবং গোমাংস খাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করার অভিযোগ উঠল এক মুসলিম শিক্ষকের বিরুদ্ধে । ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের সিমলা কান্দি এলাকার কড্ডা বাজার শফি উদ্দিন মোল্লা পাবলিক স্কুলের (Kadda Bazar Shafi Uddin Molla Public School) । অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মোঃ নাজমুল খান(Md. Nazmul Khan) । তিনি ওই স্কুলের গণিত বিভাগের শিক্ষক । এনিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে । অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ।
জানা গেছে,সিমলা কান্দি এলাকার কড্ডা বাজার এলাকার বাসিন্দা অধীর চন্দ্র বর্মণ নামে এক ব্যক্তি সম্প্রতি নাজমুল খানের বিরুদ্ধে নারী শিশু আইনে একটি মামলা রজু করেন । তাঁর অভিযোগ, গত মাসের ২৬ তারিখে বেলা প্রায় ১২ টা নাগাদ গণিত শিক্ষক নাজমুল খান (৩২) স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ক্লাস নেওয়ার সময় তার মেয়েকে বিভিন্ন রকম অশ্লীল কথাবার্তা বলেন এবং তাঁর মেয়ের শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেন । এছাড়া বিভিন্ন সময়ে তার মেয়েকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের আহ্বান জানান । গরুর মাংস খাওয়ার জন্য প্রস্তাব দেন । তাৎক্ষণিকভাবে তিনি বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান । প্রধান শিক্ষক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বিষয়টি কোথাও প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন । কিন্তু স্কুলের তরফে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হলে বাধ্য হয়ে তিনি পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হন ।
এরপরেই অভিযুক্ত শিক্ষক নাজমুল খানকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে জানা গেছে । বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচের সভাপতি সুপ্রিম কোর্টের আআইনজীবী অ্যাডভোকেট রবীন্দ্র ঘোষ জানিয়েছেন,তিনি বাসন থানার অফিসার ইনচার্জের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে । অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ১০ ধারা অনুসারে মামলা রজু করা হয়েছে । ধৃতকে মানসে কোর্টে তোলা হলে বিচারক জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ।
অন্যদিকে কড্ডা বাজার মাল্টিপাড়ার বাসিন্দা সম্ভু চন্দ্র বর্মন নামে এক ব্যক্তি চলতি মাসের ৭ তারিখে পুলিশ সুপারের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন । অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন,তাঁর ছেলে ছেলে দেব চন্দ্র বর্মন কড্ডা বাজার শফি উদ্দিন মোল্লা পাবলিক স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র । বিগত প্রায় ৫ মাস ধরে স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিন্দু ধর্মের ছেলে-মেয়েদেরকে বাধ্যতামূলকভাবে ইসলাম ধর্মের বই পড়িয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের জন্য চাপ দিয়ে আসছে । প্রতিবাদ করলে বিষয়টি জানা-জানি না করার জন্য প্রধান শিক্ষক অনুরোধ করেন । শেষে তাঁরা বাধ্য হয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হন ।
এদিকে দূর্গাপূজো ঠিক আগেই গত বছরের মত ফের মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনা শুরু হল বাংলাদেশে । জানা গেছে,ঘটনাটি ঘটেছে মানিকগঞ্জের (Manikganj) হরিরামপুর (Harirampur) উপজেলায় । রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতীরা অসম্পূর্ণ দূর্গামূর্তি ভাঙচুর চালিয়ে পালিয়ে যায় । ফলে গত বছরের মত জিহাদিরা ফের অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে বলে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের ।
প্রসঙ্গত,গত বছর ১৩ অক্টোবর দূর্গাষ্টমীর দিন রাতে কুমিল্লার নানুয়া দীঘির পাড়ের একটি পূজো মণ্ডপে হনুমানের মূর্তির কোলের উপর একটি কোরান রেখে দেওয়ার পর হনুমানের গদাটা নিয়ে পালিয়ে আসে ইকবাল নামে এক জিহাদি । শুধু তাইই নয়,সেই দৃশ্য ভিডিও করে সে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইর্যাল করে দেয় । এরপর দেশ জুড়ে সাম্প্রদায়িক হিংসার আগুন জ্বলে । শতাধিক দূর্গাপূজো মন্ডপ ও প্রতিমায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় । হিন্দুদের বসতবাড়ি,ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে । ঘটে ধর্ষণের ঘটনাও । এক দশ বছরের শিশুকন্যাকেও দূষ্কৃতিদের লালসার শিকার হতে হয় । নোয়াখালির ইসকন মন্দিরে হামলা চালায় একদল ধর্মোন্মাদ মানুষ । পার্থ দাস নামে ইসকনের এক শিষ্যকে নৃসংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয় । দেশ জুড়ে হিংসার শিকার হন নুন্যতম ৭ জন সংখ্যালঘু হিন্দু । বহু মানুষ আহত হন ।।