এইদিন ওয়েবডেস্ক,রিয়াধ,১৮ আগস্ট : সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া বর্তমান যুগে জীবন কার্যত অচল । বিনোদন,জ্ঞানার্জন,রকমারী তথ্য সংগ্রহ,মতের আদানপ্রদান প্রভৃতি বিভিন্ন কারনের জন্য সব স্তরের মানুষেই আজ সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নির্ভরশীল । কিন্তু ব্যতিক্রম শুধু মুসলিম রাষ্ট্রের মহিলারা । কিন্তু মহিলাদের জীবন যাপনের ধারা থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারের উপরেও রয়েছে রাষ্ট্রযন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ । বিভিন্ন মুসলিম দেশের মহিলাদের উপর চালু করা হয়েছে নতুন নতুন সব বিধিনিষেধ । নিয়ম লঙ্ঘন করলেই কঠিন শাস্তির মুখে পড়তে হচ্ছে । আর তার সাম্প্রতিকতম দৃষ্টান্ত হল সৌদি আরবের বাসিন্দা সালমা আল-সেহাব (৩৪) নামের এক মহিলা । শুধুমাত্র টুইটার অ্যাকাউন্ট রাখা, ভিন্ন মতাবলম্বী ও অ্যাক্টিভিস্টদের অনুসরণ করার অপরাধে সালমাকে ৩৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে সৌদি আদালত ।
প্রথমে তাঁকে ইন্টারনেট ব্যবহার করে ‘মানুষের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি এবং নাগরিক ও জাতীয় শৃঙ্খলা বিঘ্নের কারণ’ হওয়ার ‘অপরাধ’ করায় তাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল । কিন্তু সোমবার একটি আপিল আদালত তাকে নতুন করে ৩৪ বছরের কারাদণ্ড দেয় । একই সঙ্গে দণ্ডভোগের পর তার উপর অতিরিক্ত ৩৪ বছরের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ।
যুক্তরাজ্যের লিডস ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করতেন সালমা আল-সেহাব । তিনি বিবাহিতা । দুই নাবালক সন্তানের মা সালমা । সম্প্রতি ব্রিটেন থেকে স্বদেশে ফিরেছিলেন । আর দেশে ফিরেই এহেন কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হল তাঁকে ।
প্রসঙ্গত,সালমা আল-সেহাবের ইন্সটাগ্রামের ফলোয়ার সংখ্যা ১৫৯ জন । টুইটারে ২ হাজার ৫৯৭ জন ফলোয়ার্স রয়েছে । বেশির ভাগ ক্ষেত্রে টুইটারে তিনি নিজের সন্তানদের ছবি পোস্ট করতেন। মাঝে মধ্যে রাজবন্দিদের মুক্তি চেয়ে নির্বাসিত সৌদি অ্যাক্টিভিস্টদের টুইট শেয়ার করতেন তিনি । নির্বাসনে থাকা সৌদি অ্যাক্টিভিস্ট খালিদ আলজাবরি বলেন,’সালমার ঘটনায় প্রমাণ হয় ভিন্ন মতাবলম্বীদের সন্ত্রাসবাদী বলে বিবেচনা করে সৌদি আরব ।’ তিনি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ টুইটের জন্য সন্ত্রাসবাদের আদালতে সালমার কঠোর সাজা এমবিএসের নির্মম দমন যন্ত্রের সর্বশেষ প্রকাশ ।’ তবে এই মামলায় সালমা আপিলের সুযোগ পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে ।।