এইদিন ওয়েবডেস্ক,তেল আবিব,০৭ এপ্রিল : গাজায় ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে সেনা অভিযানের বিরোধিতা করেছিলেন সন্ত্রাসী হামাসের হাতে পনবন্দি বছর ৪৭ এর এলাদ কাৎজির নামের এক ইসরায়েলি নাগরিক । কিন্তু সেই সন্ত্রাসীদের হাতেই নির্মমভাবে খুন হতে হলো তাকে । শনিবার রাতে গাজার খান ইউনিসে অভিযান চালানোর সময় কাৎজিরের রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী । সামরিক বাহিনী আরও জানিয়েছে যে গাজা থেকে এলাদ কাৎজিরের মৃতদেহ ইসরাইলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ।সন্ত্রাসী হামাস তার দেহটা এতটাই বিকৃত করে দিয়েছিল যে ডাক্তারি পরীক্ষা করে শনাক্ত করতে হয় ওই ব্যক্তিকে । পরে তার পরিবারকে জানানো হয়।
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালায় গাজার হামাস। অন্তত ১২০০ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাসের জঙ্গিরা । মার্তৃ জঠরে থাকা ভ্রণকে পর্যন্ত পেট চিরে বের করে জবাই করে ওই নরপশুর দল । দক্ষিণ ইসরায়েলের সংগীতানুষ্ঠানে অংশ নেওয়া বহু তরুণী হানাস সন্ত্রাসীদের দ্বারা গণধর্ষণের শিকার হয় । এছাড়া আড়াইশো জনের অধিক ইসরায়েলীকে পনবন্দী করে গাজায় নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা । সেই প্রনবন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইলকে তারা ব্ল্যাকমেলিং করতে শুরু করে, যা আজও অব্যাহত রয়েছে ।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর হামাসের সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত হন কাৎজিরের বাবা আব্রাহাম। এরপর কাৎজির ও তার মা হান্নাকে পনবন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয় গাজায়। গত নভেম্বরে ছয় দিনের যুদ্ধবিরতির সময় আরও ১০৪ জিম্মির সঙ্গে কিৎজিরের মাকেও মুক্ত করে দিয়েছিল সন্ত্রাসী হামাস।কিৎজিরের মৃত্যুর জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছেন তার বোন পালতি কাৎজির। তার মতে, যুদ্ধবিরতির নতুন চুক্তিতে ইসরাইল সরকার রাজি হলে তার ভাই জীবিত বাড়িতে ফিরে আসতেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পালতি কাৎজির লিখেছেন, ‘আমাদের নেতারা ভীরু। রাজনৈতিক স্বার্থে তারা সিদ্ধান্ত নেন। গাজায় কেন যুদ্ধবিরতির নতুন একটি চুক্তি এখনো হচ্ছে না? প্রধানমন্ত্রী, যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা ও জোট সরকারের সদস্যরা আপনারা আয়নার সামনে গিয়ে নিজেদের দিকে একবার তাকান এবং বলুন, আপনাদের হাত রক্তে রঞ্জিত কি না।’
পনবন্দিদের নিয়ে গত জানুয়ারিতে একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে হামাস। সে ভিডিওতে কাৎজিরকে বলতে শোনা যায়, তিনি একাধিকবার মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন। ওই ভিডিও বার্তার মাধ্যমে গাজায় হামলা বন্ধের জন্য ইসরাইল সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। তিনি বলেছিলেন, গাজায় হামলা বন্ধ করে পনবন্দিদের তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিন।
প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাসকে ঝাড়েমূলে খতম করার কথা ঘোষণা করেছেন ইজরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু । কিন্তু তার দেশের অভ্যন্তরেই শুরু হয়েছে বিরোধ । শনিবারও ইসরাইলে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর পদত্যাগের পাশাপাশি পনবন্দিদের মুক্তির দাবিতে তেল আবিবের রাজপথে নামেন বহু মানুষ। তারা ব্যানার ফেস্টুন হাতে ইসরাইলবিরোধী স্লোগান দেয় । অনেকেই আবার দাবি জানান আগাম নির্বাচনের। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও জল কামান নিক্ষেপ করে । পাল্টা জবাবে, পুলিশের সংঘর্ষের লিপ্ত হয় বিক্ষোভকারীরা । কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা । ইসরায়েলের একশ্রেণীর মানুষের সরকারবিরোধী কার্যকলাপে আদপে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাত শক্ত করছে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞমহল ।।