শ্যামসুন্দর ঘোষ,রামপুরহাট,০৪ ফেব্রুয়ারী : লাল পোশাক পরা এক ভিক্ষুকের পেতে রাখা পলিথিনের উপর বসে আছেন প্যান্ট জামা পরা এক ব্যক্তি । ব্যক্তিকে খুবই উদভ্রান্ত দেখাচ্ছে । আর পা ছড়িয় ভিক্ষুকদের মাঝে বসে থাকা ওই ব্যক্তির একটা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে । কিন্তু কে ওই ব্যক্তি ? তার পরিচয় ও দিয়ে দিয়েছেন । একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী ছবিটি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘২০১৪-সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গ বিজেপির লড়াকু সৈনিক ইন্দ্রজিৎ সিনহা ( Indrajit Sinha) যাকে সবাই বুলেট দা নামে চেনেন – পঃবঃ রাজ্য বিজেপি আমন্ত্রিত সদস্য রাজ্য স্বাস্থ্য পরিসেবা সেল ইনচার্জ…শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী স্বাস্থ্য মিশন’র সভাপতি – একসময় এইসব পদে থাকা একজন নেতা আজ তারাপীঠ মহাশ্মশানে ভিক্ষা করছেন…রাতে গাছের তলায় শুয়ে রাত কাটাচ্ছেন বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে…।’ কিন্তু কেন ভিক্ষা করছেন তিনি? তার উত্তরও দেওয়া হয়েছে ওই পোস্টে ৷ লেখা হয়েছে,’কারন গলায় নাকি একটা টিউমার হয়েছে চিকিৎসা করানোর মত তার আর্থিক পরিস্থিতি নেই বিজেপি করতে গিয়ে অনেক সম্পদ ও অর্থ হারিয়ে পারিবারিক অশান্তিতে রাস্তায় নেমে এসেছে…।’ বিজেপির রাজস্তরের ওই লড়াকু নেতাকে উদ্ধারের জন্য উচ্চ নেতৃত্বের কাছে আবেদন জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘বঙ্গ বিজেপি তখনি উপরে উঠে ছিলো এনার মতো লড়াকু সৈনিকদের জোরেই..। রাজ্য বিজেপির উচ্চ নেতৃত্বের কাছে আমার বিনীতি অনুরোধ প্লিজ ওনাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসুন…এরা স্বার্থপর এরা কর্মী দের খোঁজ রাখে না । এরা দরকারের সময় দেয়াল রঙ করাবে পয়সা থাকলে তুমি নেতা হবে নাহলে এই দাদার মতো অবস্থা হবে। ১৩৫ জন কর্মী মারা গেছেন তাদের বাড়ির অবস্থা কি কেউ খোঁজ নেই নাকি জানি না ।’
জানা গেছে যে ইন্দ্রজিৎবাবুর বাড়ি কলকাতার বেলেঘাটায়। মা-বাবা প্রয়াত হয়েছেন । একসময় কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ইন্দ্রজিৎবাবু । প্রায় দশ বছর আগে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন । কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে রাজনীতি থেকে তিনি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন । চিকিৎসার খরচ এবং দুবেলা দু’মুঠো অন্যের জন্য তিনি তারাপীঠ মহাশ্মশানে ভিক্ষা করতে চলে যান । এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইন্দ্রজিৎবাবুর এই অসহায় অবস্থার ছবি ভাইরাল হতেই নড়ে চড়ে বসে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব । কলকাতার ইএম বাইপাসের ধারেএকটা নামী বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার আগে রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের নির্দেশে তাকে উদ্ধার করে কলকাতায় নিয়ে যান বিজেপির বীরভূম জেলা সভাপতি ।।