এইদিন ওয়েবডেস্ক,উত্তর ২৪ পরগনা,২৫ আগস্ট : শনিবার (২৩ আগস্ট) রাতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাটের স্বরূপনগরে ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় একজন বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীকে ধরে ফেলে হাকিমপুর সীমান্ত চৌকিতে পাহারায় থাকা বিএসএফ-এর ১৪৩ নম্বর ব্যাটেলিয়নের সদস্যরা । শুরুতে বিএসএফ তার নাম প্রকাশ না করলেও এবার মিলেছে বিস্তারিত পরিচয়। জানা গেছে, বিএসএফের হাতে পাকড়াও আটক ওই বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তার নাম মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান। তিনি ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলায় অবস্থিত এপিবিএন-২-এর সহকারী পুলিশ সুপার পদে কর্মরত ছিলেন। এর আগে, তিনি রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। এখন জানা যাচ্ছে যে ধরা পড়া ওই বাংলাদেশি পুলিশ কর্তা একজন খুনের আসামি । তার বিরুদ্ধে আবু সাঈদ নামে একজন জিহাদিকে গুলি করে মারার অভিযোগ রয়েছে ।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বাংলাদেশের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে জিহাদিদের নাশকতার সময় পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় আবু সাঈদ নামে এক জিহাদির । দুপুর আড়াইটার দিকে নাশকতা চালানো শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে। আবু সাঈদ লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে পুলিশের উদ্দেশ্যে হুঙ্কার দিচ্ছিল । পুলিশ তাকে লক্ষ্য করে ৫০ ফুট দূর থেকে ছররা গুলি চালায় । গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ওই জিহাদি । তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় । ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে ছিলেন গ্রেপ্তার সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা মহম্মদ আরিফুজ্জামান। তাকেই মুখ্য আসামি করে খুনের মামলা রজু হয় ।
বাংলাদেশের সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকিত খান জানান, মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান গত বছরের ৫ আগস্টের আগে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার পদে কর্মরত ছিলেন। পরে তাকে ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলায় অবস্থিত এপিবিএন-২-এ বদলি করা হয়। সেখানে তিনি গত বছরের ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। ১৪ অক্টোবর থেকে বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে হাজির না হওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সেই থেকে পলাতক ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। এদিকে স্বরূপনগর থানার পুলিশের জেরায় মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান দাবি করেছেন, শেখ হাসিনার পতনের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান । তারপর থেকে তিনি ভারতে পালিয়ে আসার সুযোগ খুঁজছিলেন৷
ধৃত বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তা আরিফুজ্জামানের বিরুদ্ধে ১৪(এ) ধারার ফরেনার্স আইন এবং পাসপোর্ট আইনের ১২ ধারায় মামলা করেছে স্বরূপনগর থানার পুলিশ । রবিবার তাকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন।।