প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১০ আগষ্ট : পুলিশের তৎপরতায় এক টলিউড অভিনেতার বর্ধমানের বাড়ি থেকে উদ্ধার হল ছয় মাস ধরে নিখোঁজ থাকা নদীয়ার চাকদার বধূ । মঙ্গলবার ভোররাতে চাকদা ও বর্ধমান থানার পুলিশ নিখোঁজ মহিলার স্বামী অর্ধেন্দু ঘোষকে সঙ্গে শহর বর্ধমানের বাদামতলা এলাকায় থাকা টলিউড অভিনেতা ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে অভিযান চালায় ।সেখান থেকেই উদ্ধার হয় চাকদার নিখোঁজ বধূ পম্মা ঘোষ ।এই ঘটনা জানাজানি হতেই শহর বর্ধমানের বাসিন্দা মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে । যদিও ওই মহিলা এমনকি তাঁর স্বামী গোটা ঘটনা নিয়ে কাউকে দায়ী করে কিছু বলেন নি ।কে , কি ভাবে চাকদা থেকে মহিলাকে নিয়ে এসে টলিউড অভিনেতার বর্ধমানের বাড়িতে নিয়ে এসে রাখলো তা নিয়েই তৈরি হয়েছে রহস্য ।
উদ্ধার হওয়া মহিলা পম্পা ঘোষের স্বামী অর্ধেন্দু ঘোষ জানিয়েছেন ,তাঁর স্ত্রী বেশ কিছুদিন ধরে বাতের রোগে ভুগছেন। রোগ যন্ত্রণায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙেও পড়েছিলেন। গত ৬ মাস ১০ দিন আগে পম্পা একটি চিঠি লিখে হটাৎ নিঁখোজ হয়ে যায়। তার পর থেকে তাঁর আর কোনো খোঁজ মেলেনি। অর্ধেন্দু বাবে বলেন ,তাঁর স্ত্রী পম্পা নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর চাকদা থানায় তিনি নিখোঁজ ডাইরিও করেন । এরই মধ্যে সোমবার তাঁর স্ত্রী পম্পা অন্য একজন মহিলার ফোন থেকে গোপনে তাঁকে ফোন করেন ।
ফোন করে পম্পা জানায়,’ দু’জন লোক তাকে বর্ধমানের এক অভিনেতার ফাঁকা বাড়িতে তুলে এনে আটকে রেখেছে। সেখানে কিছু সন্দেহজনক লোক থাকে। তাদের আচরণে তাঁর সন্দেহ হয়।তাঁকে বিক্রি করে দেওয়া হতে পারে’। অর্ধেন্দুবাবু জানান ,ফোনে তাঁর নিখোঁজ স্ত্রী এমনটা জানানোর পরেই তিনি চাকদহ থানার পুলিশের শরণাপন্ন হন। চাকদহ এবং বর্ধমান থানার পুলিশ যৌথভাবে ওই টলি অভিনেতার বর্ধমানের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাঁর স্ত্রীকে উদ্ধার করে । পম্পা অসুস্থ থাকায় তাঁকে কোলে করে তুলে তাঁর স্বামী
পুলিশ গাড়িতে তোলেন । পরে চাকদহ থানার পুলিশ তাঁদের নিয়ে রওনা দেয় ।
এই বিষয়ে অভিনেতা ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তাঁর বাড়িতে
মহিলাকে আটকে রাখার কথা মানতে চান নি । ফাল্গুনীবাবু বলেন ,মাস তিনেক আগে তাঁরই পরিচিত একজন সোমনাথ ভট্টাচার্য নামে এক ব্যক্তি ও এক মহিলাকে তাঁর কাছে আনে । ওই সোমনাথ তাঁর টেলিফিল্মে বিজ্ঞাপনও দিয়েছিল । সোমনাথ ও ওই মহিলা নিজেদের কে স্বামী ও স্ত্রী বলে পরিচয় দেয় । সোমনাথ জানিয়েছিল, তাঁর ইন্টেরিয়র ডিজাইনের ব্যবসা রয়েছে । ফাল্গুনীবাবু জানান , ভোটার কার্ড দিয়ে সোমনাথ বলেছিল লকডাউনে কোথাও সে থাকার জায়গা পাচ্ছে না । মাস দুয়েক সে বর্ধমানে তাঁর বাড়িতে থাকবে । সেই কথা বিশ্বাস করে বিনা ভাড়াতেই ওদের থাকতে দিয়েছিলেন। সোমনাথ প্রায়সই বর্ধমানে আসতেন । নিজের স্ত্রীকে দেখভালের জন্য সোমানাথ একজন মহিলাকেও কাজে রেখেছিল । এদিন সব জানার পর তিনিও অবাক হয়ে গিয়েছেন । ফাল্গুনীবাবু বলেন ,এদিন ফোন করে তিনি সোমনাথকে প্রকৃত ঘটনা জানতে চাওয়ার পর থেকে সোমনাথ ফোন বন্ধ করে দেয় ।
বর্ধমান থানার আইসি সুখময় চক্রবর্তী জানান, ‘এটা চাকদা থানার কেস।চাকদা থানার পুলিশ বর্ধমান থানার সাহায্য চেয়েছিল মহিলাকে উদ্ধারের জন্য ।বর্ধমানার পুলিশ সাহায্য করেছে। এর বাইরে কিছু বলা সম্ভব নয়। ঘটনা সবিস্তার চাকদা থানা বলতে পারবে ।’।