এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১৫ মার্চ : পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার বাজারের এক সংবাদপত্র বিক্রেতার কাগজের বাণ্ডিল নিয়ে চম্পট দিল মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবক । কাগজের বাণ্ডিলটি ফেরত পেতে বুধবার সকাল থেকে প্রায় দু ঘন্টা ধরে কার্যত নাকানিচোবানি খেতে হল ওই সংবাদপত্র বিক্রেতাকে । ভাতার বাজারের অলিতে গলিতে সাইকেলে চড়ে ছুটে বেড়ালেন তিনি । শেষ পর্যন্ত একটি চালাঘরের মধ্যে ভারসাম্যহীন যুবকের সন্ধান মেলে । কিন্তু অনেক সাধাসাধি করেও কাগজগুলি তার কাছ থেকে আদায় করা যায়নি । অবশ্য কাগজগুলির পরিবর্তে ওই যুবক কিছু টাকা দিতে আসে সংবাদপত্র বিক্রেতাকে ।
সংবাদপত্র বিক্রেতার নাম শ্রীকান্ত রায় । ভাতার বাজারের বাসিন্দা শ্রীকান্তবাবু দীর্ঘদিন ধরে সংবাদপত্র বিক্রি করে আসছেন । ভাতার বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি মার্কেট কমপ্লেক্সের বারান্দায় বসে শ্রীকান্তবাবু সকাল থেকে সংবাদপত্র বিক্রি করে সাড়ে দশটার মধ্যে বাড়ি চলে যান ।
জানা যায়, ভোরের ট্রেনে বর্ধমান থেকে বিভিন্ন সংবাদপত্রগুলি বাজারে চলে আসে।শ্রীকান্তবাবু ছাড়াও ভাতার বাজারে আরও একজন সংবাদপত্র বিক্রেতা রয়েছেন। লাল্টু কুণ্ডু নামে ওই সংবাদপত্র বিক্রেতার কাছে কাগজগুলি গোছানোর পর নির্দিষ্ট জায়গায় রাখা হয়। তার কিছুক্ষণ পর শ্রীকান্তবাবু বাজারে আসেন। তার জন্য রাখা কাগজের বাণ্ডিল নামানোই থাকে নির্দিষ্ট জায়গায় । এতদিন কোনো সমস্যা হয়নি । কিন্তু এদিন শ্রীকান্ত রায় আসার আগেই এক গোছা কাগজের বান্ডিল নিয়ে চম্পট দেয় ভারসাম্যহীন এক যুবক ।
শ্রীকান্ত রায় বলেন,’এদিন সকালে আসার পরে দেখছি কাগজ বেশকিছু কম রয়েছে। তখন একজন দোকানদার বললেন একজন কিছু কাগজ বাণ্ডিল থেকে বের করে রেলস্টেশনের দিকে পালিয়েছে । তখনই ওই যুবকের খোঁজ করতে থাকি। কিন্তু আমাকে দেখেই ও কাগজ বগলদাবা করে ছুটে পালাতে থাকে ।’
দেখুন ভিডিও 👇
জানা যায় এদিন ওই বছর পঁচিশের যুবক শ্রীকান্তবাবুর সঙ্গে কার্যত লুকোচুরি খেলা শুরু করে। কাগজগুলি ফেরত পেতে শ্রীকান্তবাবু ওই যুবকের পিছু পিছু ছুটতে থাকেন । কিন্তু বছর পঁচিশের ওই যুবকের সঙ্গে দৌড়ে পেরে উঠতে পারেননি পঞ্চাশোর্ধ শ্রীকান্তবাবু । প্রায় ঘন্টাখানেক পর শ্রীকান্তবাবু ওই যুবকের ঘরের সামনে দেখেন দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। অনেক ডাকাডাকি করে যুবকটি যদিও বেড়িয়ে আসে। হাতে শখানেক টাকা। সে সাফ জানিয়ে দেয় কাগজগুলি সে ছিড়ে ফেলে দিয়েছে। যুবকটি বলে,’কান মলছি। ওঠবস করছি। এই টাকা নিয়ে বাড়ি যাও। কাগজ ফেরত দিতে পারব না ।’ এত লড়াই করেও শ্রীকান্তবাবুকে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়। তিনি বলেন,’যারা আমার মাসিক গ্রাহক তাদের জন্য রাখা কাগজও নিয়ে পালিয়েছে। এদিন ওই পাঠকদের কাগজ দিতে পারিনি ।’
জানা গিয়েছে ভাতার বাজার কদমতলার কাছে একটি মাটির ঘরে বিধবা মায়ের সঙ্গে থাকে ওই মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক। তার মা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সহায়িকার কাজ করেন। তবে ঘটনার সময় তিনি ছিলেন না। নিজের কাজে চলে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে ছেলের কীর্তির কথা শুনে তিনি লজ্জিত হন । এদিকে তাঁর মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের এহেন কীর্তিতে হুলুস্থুল পড়ে যায় এলাকায় ।।