এইদিন ওয়েবডেস্ক,ইরান,১৮ মে : পশ্চিম ইরানের বোরোজার্ড থেকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে হিজাব প্রয়োগকারী পুলিশকে(শরিয়া পুলিশ) ফাদাক পার্কে টি-শার্ট পরার অপরাধে একটি শিশুকন্যাকে নির্মমভাবে মারধর করতে দেখা গেছে । অমানবিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে শিশুটি কান্নাকাটি করে এবং বাঁচানোর জন্য চিৎকার করে পরিবারের লোকজনদের ডাকাডাকি করতে দেখা গেছে । ইরান ইন্টারন্যাশনালের প্রাপ্ত ফুটেজে দেখা যাচ্ছে যে পুলিশ শিশুটিকে হিজাব পরতে বাধ্য করে । একজন প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, পথচারীরা শেষ পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করে মেয়েটিকে উদ্ধার করে। শিশুটির বয়স কত তা স্পষ্ট নয়, তবে ইরানে মেয়েদের বয়স ৬-৭ বছর হলেই হিজাব পরা বাধ্যতামূলক । সুতরাং আক্রান্ত শিশুকন্যার বয়স ৬-৭ বছরের মধ্যে বলে মনে করা হচ্ছে । ঘটনাটি ইরানে শিশুদের বিরুদ্ধে হিজাব প্রয়োগের সাথে যুক্ত আগ্রাসনের অন্যতম একটি নজির । গত বছর, হিজাব না পরার কারণে আর এক অল্প বয়সী মেয়ের মুখে আঘাত করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, তার নাক থেকে রক্ত পড়ছে এবং সে রাস্তার পাশে বসে আছে ।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে, মাহসা আমিনি নামে ২২ বছরের কুর্দি তরুনীকে সঠিকভাবে হিজাব না পরার জন্য ইরানের নৈতিকতা পুলিশ তাকে হেফাজতে নিয়ে পিটিয়ে মেরেছিল । এই ঘটনাটি দেশব্যাপী বিদ্রোহের সূত্রপাত করেছিল যার পর থেকে হাজার হাজার নারী বাধ্যতামূলক হিজাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
অক্টোবরে,১৬ বছর বয়সী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী আরমিতা গেরভান্ড তেহরানের পাতাল রেলে নৈতিকতা পুলিশের মারধরে কোমায় চলে যায় এবং মাথায় আঘাতের কারণে মারা যায়। ঘটনার বিবরণ অস্পষ্ট থেকে যায়, তবে রিপোর্টে দেখা যায় তাকে একজন মহিলা এজেন্ট দ্বারা ধাক্কা দেওয়া হয়েছিল।
ইরানের সরকার গত মাসে তার হিজাব আইনের প্রয়োগকে ত্বরান্বিত করেছে যা এটি দাবি করে যে এটি একটি “জাতীয় এবং জনসাধারণের দাবি” নুর পরিকল্পনা নামে একটি নতুন উদ্যোগের অংশ । তারপর থেকে দেশজুড়ে হিজাব নিয়ে কড়াকড়ি শুরু করেছে ইরানি পুলিশ । বিশেষ করে মধ্য তেহরানে পুলিশের ভ্যান এবং মোটরসাইকেল ইউনিটের টহলদারি বাড়ানো হয়েছে।
জাতিসংঘ হিজাবের বিরুদ্ধে ইরানের নৃসংশতাকে নারীদের ‘লিঙ্গ বর্ণবৈষম্য’ নিপীড়ন বলে চিহ্নিত করেছে । অধিকার গোষ্ঠীগুলো দেশে নারী অধিকারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে যেখানে নারীরা কঠোর আইনের মধ্যে সহিংসভাবে নিপীড়িত হচ্ছে।।