যতদিন ভারতে কংগ্রেসের শাসন ছিল ততদিন বহাল তবিয়তে ছিল সন্ত্রাসীদের আঁতুরঘর পাকিস্তান । কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পাকিস্তানের ধ্বংসের কাউন্টডাউন শুরু হয় । নরেন্দ্র মোদী দেশে নোটবন্দি করার অব্যবহিত পরেই রহস্যজনকভাবে পাকিস্তানের অর্থনীতিতে ধস নামে । প্রায় দেউলিয়া হয়ে যাওয়া ওই ইসলামি রাষ্ট্রটি বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সাহায্যের উপর টিকে আছে এখন । তবে শুধু নোটবন্দিই নয়, বিশ্বকে বিভিন্ন কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন উপহার দেওয়া পাকিস্তানের কোমড় ভাঙতে নরেন্দ্র মোদীর একটা সুচিন্তিত পরিকল্পনাও রয়েছে । আর সেই পরিকল্পনার কথা পাকিস্তানের সংবাদপত্র ‘ডন’কে জানিয়েছিলেন লাহোরের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় “লাহোর ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস“-এর প্রাক্তন ডিন অধ্যাপক আনজুম আলতাফ । তার বক্তব্য পত্রিকার সম্পাদকীয়তে ছাপা হয় ।
পাকিস্তান সম্পর্কে নরেন্দ্র মোদীর সামগ্রিক নীতি বুঝতে হলে ‘ডন’-এ প্রকাশিত সম্পাদকীয় নিবন্ধটি পড়া জরুরি । আনজুম আলতাফ লিখেছেন, পাকিস্তানে সাধারণ মানুষের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। সাধারণ জনগণ জাতীয়তাবাদের পতাকা বহন করতে প্রস্তুত, কিন্তু কোনো সরকার যদি সেই পতাকা বহনের জন্য জাতিকে যে ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা দেওয়া উচিত তা দিতে অক্ষম হয়, তাহলে মানুষ সেই পতাকা ফেলে দেয়। তিনি আরও লিখেছেন, পাকিস্তানের একটি কল্যাণ রাষ্ট্র হওয়ার কথা ছিল কিন্তু এটি একটি যুদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। পাকিস্তানের মন্ত্রিসভা বলেছে, প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো থেকে দেশকে নিরাপদ রাখতে আরও প্রতিরক্ষা বাজেট প্রয়োজন। যেখানে সত্য হল যে পাকিস্তান ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন, বিশুদ্ধ পানীয় জল, সাক্ষরতা এবং রাস্তার বাজেট কমিয়েছে এবং প্রতিরক্ষায় বিনিয়োগ করেছে। তবে যুদ্ধের আশঙ্কায় তা আরও কমিয়ে আনা হচ্ছে। পুরোদমে চলছে দেদার নোট ছাপিয়ে । এদিকে সাধারণ মানুষের হাতে টাকার মূল্য কমছে ।
রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেছেন, কিভাবে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগন সোভিয়েত রাশিয়ার মনে যুদ্ধের অযাচিত ভয় তৈরি করেছিলেন এবং সেই ভয়েই সেখানকার জনগণের আশা- আকাঙ্খা পূরণের পরিবর্তে সোভিয়েত রাশিয়াকে যুদ্ধের ভীতি তাড়া করে বেড়ায়৷ রাশিয়া তার সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করার জন্য তার সমস্ত মনোযোগ নিবদ্ধ করেছিল এবং ভুলে গিয়েছিলেন যে একটি দেশ শুধু সেনাবাহিনী দ্বারা নয়, সেনাবাহিনী শুধুমাত্র সেই জনগণ/দেশের সুরক্ষার জন্য। শেষ পর্যন্ত, সোভিয়েত রাশিয়া কোনো যুদ্ধ ছাড়াই ভেঙে পড়ে, শুধুমাত্র তার জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার পূরণ করতে না পারার জন্য ।
প্রবন্ধের শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, নরেন্দ্র মোদী খুবই চতুর নেতা। তিনি পাকিস্তানের সাথে কৌশল করছেন এবং পাকিস্তানও তাঁর সেই কৌশলে নাচছে। সোভিয়েত রাশিয়ার মতো, পুরো ফোকাস সেনাবাহিনী এবং প্রতিরক্ষার উপর দিয়েছে পাকিস্তান । এমন একটা সময় আসতে পারে যখন পাকিস্তান ভাবারও সুযোগ পাবে না এবং মোদী তার কাজ সেরে ফেলবেন । সোভিয়েত রাশিয়ার মতো জনগণের আশা-আকাঙ্খা থেকে দূরে সরে যাওয়া পাকিস্তানের খুব বেশি সময় নেই। দুই দেশের মধ্যে পাকিস্তানের অযাচিত প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে যা বিভিন্ন হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা ভিতর থেকে ফাঁপা হয়ে যাচ্ছে এবং দিন দিন এর আলোচনার শক্তি হ্রাস পাচ্ছে। তিনি বলেছেন, ঈশ্বর যাকে ধ্বংস করতে চান তাকে প্রথমে পাগল করেন। আর পাকিস্তানও সম্ভবত একই পথে চলেছে ।।