এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,১৬ জুলাই : বাংলাদেশের গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের মাঝে পড়ে গুলিবিদ্ধ হিন্দু যুবক । গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মোহাম্মদপাড়া এলাকার সুমন বিশ্বাস (২০) নামে ওই যুবককে গুরুতর আহত অবস্থায় বুধবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে । আহত সুমনের মা নিপা বিশ্বাস জানান, দুপুরে জানতে পারি ছেলের শরীরে গুলি লেগেছে। তাকে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। সেখানে গিয়ে ছেলেকে দেখি এবং চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকায় নিয়ে আসি।
আহত সুমন জানান, তিনি সদর উপজেলার পাচুরিয়া এলাকার এনএসআই কোয়ার্টারের পেছনে একটি জল সরবরাহকারী কোম্পানিতে কাজ করেন। দুপুরে এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হলে তিনি কাজ থেকে বেরিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। কিন্তু সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যান এবং একটি গুলি তার পেটের ডান পাশ দিয়ে ঢুকে সামনের দিকে বেরিয়ে যায়। সেই সঙ্গে তার ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপরই তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, তার পেটের সামনে ও পাশে দুটি গুলির ক্ষত রয়েছে এবং ডান হাতের একটি আঙুলও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মহম্মদ ফারুক জানান, আহত অবস্থায় ওই যুবককে সন্ধ্যার দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে এবং জরুরি বিভাগে তার চিকিৎসা চলছে।
গোপালগঞ্জের সংঘর্ষে ৪ জনের মৃত্যু
এদিকে আজ গোপালগঞ্জে জঙ্গি গোষ্ঠী জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনায় অন্তত ৪ জন নিহত হয়েছে। তবে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত অনেকে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে গেলও তাদের সঠিক সংখ্যা এখনো জানা যায়নি। গোপালগঞ্জের জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ জীবিতেশ বিশ্বাস সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে বিবিসি বাংলাকে জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনের মৃতদেহ সদর হাসপাতালে এসেছে। তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এদিকে, হামলা ও সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাত থেকে ২২ ঘণ্টার কারফিউ জারি করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ জানিয়েছেন, বুধবার (১৬ জুলাই) রাত ৮টা থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ কারফিউ জারি থাকবে। এর আগে বিকেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গোপালগঞ্জ সদরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
এদিন বিকেলে গোপালগঞ্জে সভা শেষে ফেরার পথে এনসিপির গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এই হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। এসময় গোপালগঞ্জ শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।।