এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,২৬ জুলাই : বাংলাদেশের ফরিদপুর শহরে এক হিন্দু যুবককে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা । মৃতের নাম প্রান্ত মিত্র (২৩) । তাঁর বাড়ি রাজবাড়ীর পাচুরিয়া এলাকায় ।ফরিদপুর শহরের ওয়্যারলেস পাড়ায় ভাড়া বাড়িতে স্ত্রী ও একমাত্র পুত্রসন্তানকে নিয়ে থাকতেন তিনি । সোমবার রাত্রি ২ টা নাগাদ এক বন্ধুর অসুস্থ বোনকে রক্ত দিতে বাড়ি থেকে বেড়িয়েছিলেন তিনি । তার ঠিক আধ ঘন্টা পরে আলীপুর সেতুর উত্তরে সড়কের পাশ থেকে ওই যুবকের রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায় । প্রান্ত মিত্র ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের বোটানি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন । জানা গেছে,প্রান্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন । নিহতের পরিবারের দাবি, গোষ্ঠদ্বন্দ্বের হিংসার বলি হয়েছেন প্রান্ত মিত্র ।
মৃতের মামাতো ভাই ফরিদপুর শহরের ঈশান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাধব চন্দ্র দাস বলেন,’সোমবার সকালে আলীপুরের রাসেল স্কয়ারে আওয়ামী লীগের কার্যালয় উদ্বোধনের সময় প্রান্তর সঙ্গে কয়েকজনের কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। প্রান্তর বন্ধুদের কাছে জেনেছি যে হাতাহাতির সময় ওরা প্রান্তকে হুমকি দিয়ে বলেছিল, ‘আলীপুর গোরস্তানের পাশ দিয়ে বাড়ি যাবি না, গেলে লাশ ফেলে দেবো ।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার ফরিদপুরে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয় । সভাপতি পদপ্রার্থী ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলী মহল্লার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম জনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন । জহিরুলকে নিয়ে মিছিল করেন প্রান্তরা । সেই সময় বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর লোকজনের সঙ্গে তাদের হাতাহাতি হয় ।
প্রান্তের বন্ধু মোহম্মদ হৃদয় বলেন,আমার বোন ফরিদপুরে ডাঃ জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সোমবার রাতে বোনের রক্তের প্রয়োজন হলে প্রান্তকে ফোন করি । রাত ২ টার দিকে সে বাড়ি থেকে বের হওয়ার কথা জানায় । পরে বারবার ফোন করলেও তাকে পাইনি,কারন প্রান্তের মোবাইল সুইচ অফ বলছিল ।’ প্রান্তের বাবা বিকাশ মিত্র বলেন,’মঙ্গলবার ভোরে পুলিশের কাছ থেকে ছেলের মৃত্যুর সংবাদ পাই। আমার ছেলের হত্যাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি ।’ এদিকে জানা গেছে,প্রান্তকে হুমকি দেওয়া যুবকরা বেপাত্তা হয়ে গেছে ।
কোতোয়ালি থানার এসআই শামিম হোসেন বলেন, ‘প্রান্তর বুকের বাঁ পাশে ধারালো অস্ত্রের একাধিক গভীর ক্ষত রয়েছে । ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে । এই ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে ।’ কিন্তু প্রান্ত মিত্র অত রাতে যে বন্ধুর বোনকে রক্ত দিতে যাচ্ছেন, এই খবর ঘাতকরা কিভাবে জানলো ? এনিয়ে প্রশ্ন উঠছে । কোতোয়ালি থানার ওসি এম এ জলিল বলেন,’প্রান্তর বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে । শহরের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে । জড়িতদের শনাক্তে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।’ সম্ভাব্য সব কারণ বিবেচনা করে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি ।।