এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাংলাদেশ,১৮ নভেম্বর : মুসলিম তরুণীর সাথে প্রেম করার অপরাধে হিন্দু যুবককে পিটিয়ে মারল বাংলাদেশের জিহাদি সেনা । ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জে । হতভাগ্য হিন্দু যুবকের নাম হৃদয় রবিদাস । তিনি নরসুন্দরের কাজ করতেন । কিশোরগঞ্জের রাস্তার পাশে ইটের দেওয়াল ও করগেটের ছাউনি দেওয়া নিজস্ব দোকান ছিল তার । স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শুক্রবার রাত ৮ টা নাগাদ নিজের সেলুনে ছিলেন হৃদয় । সেই সময় তিনজন হুজুর এবং আরো ছয় সাত জনের একটা দল দোকানে চড়াও হয় ৷ তারা হৃদয় রবিদাসকে দোকান থেকে টেনে বের করে নির্মমভাবে মারধর করে । তারপর তাকে করিমগঞ্জ সেনা ক্যাম্পে তুলে দেওয়া হয় । পরের দিন শনিবার পরিবারের লোকজন জানতে পারে যে হৃদয়ের মৃত্যু হয়েছে ।
জানা গেছে, সেনা ক্যাম্পে ওই হিন্দু যুবকের উপর নির্মম অত্যাচার চলে । পরে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় সংজ্ঞাহীন হয়ে লুটিয়ে পড়লে তাকে করিমগঞ্জের মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয় । করিমগঞ্জের মেডিকেল কলেজের সহকারী পরিচালক আব্দুল হামিদ জানান যে শুক্রবার রাত ২:১০ নাগাদ সেনাবাহিনীর লোকজন হৃদয়কে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে । পরে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়৷ শরীরে অল্প আঘাতে ছিন্ন পাওয়া গেছে । তবে রাতের যখন নিয়ে আসা হয় তখন তার মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল ।
এদিকে ময়নাতদন্তের সময় ৫০-৬০ জনের সেনাবাহিনীর সশস্ত্র দল শহীদ সঈদ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কঠোর নজরদারিতে রেখেছিল যাতে সেনা হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা সহজে জানাজানি না হয় । শুধু তাই নয়, ঘটনাকে যাতে সহজেই মিটমাট করতে পারে তাই মামলার ইনভেস্টিকেটিং অফিসার (আইও) করা হয়েছে একজন হিন্দু পুলিশ অফিসারকে । ঘটনা প্রসঙ্গে কিশোরগঞ্জ সেনাকাম্পের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহম্মদ রিয়াজুল ইসলাম জানান, স্থানীয় এক মুসলিম তরুনীকে ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করার পরিকল্পনা করেছিলে হৃদয় রবিদাস । মেয়েটিকে পাচার করার পরিকল্পনা ছিল তার ।
যদিও একজন অত্যন্ত সাধারণ ঘরের এক হিন্দু যুবক যে কোন মেয়েকে পাচারের পরিকল্পনা করতে পারে করতে পারে সেনাকাম্পের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেলে এই দাবি নিহত যুবকের অতি বড় শত্রুরাও মেনে নিতে পারেনি । তাই এখন প্রশ্ন উঠছে যে শুধুমাত্র
মুসলিম তরুণীকে বিয়ে করার পরিকল্পনার অপরাধে পিঠিয়ে মারা কতটা ন্যায়সঙ্গত ? বাংলাদেশের একটি ফেসবুক পেজে এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় আইনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক যাকে খুশি পছন্দ ও বিবাহ করার অধিকার রাখেন। কিন্তু শুধুমাত্র মুসলিম মেয়েকে ভালোবাসার অপরাধে একজন হিন্দু যুবককে সেনাবাহিনী যদি একজন হিন্দু যুবককে পিটিয়ে মেরে ফেলে তাহলে দেশের হিন্দুদের নিরাপত্তা কোথায় ?