এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,২৬ অক্টোবর : মুসলিম ছেলের প্রেমের ফাঁদে পড়ে আবারও প্রাণ হারাল এক হিন্দু মেয়ে। এই হতভাগ্য মেয়েটির নাম সোনিয়া । পরিবারের লোকজন তাকে আদর করে সোনা বলে ডাকত। সোনিয়া যাকে ভালোবাসতো তাকে সঞ্জু বলে ডাকতো। তবে তার আসল নাম সেলিম। সেলিম করভা চৌথের দিন সোনিয়ার সাথে দেখা করতে যায় এবং তাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে লাশ পুঁতে দেয় । সোনিয়ার বয়স ২০ বছর এবং সে দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ত। দিল্লির নাংলোইর বাসিন্দা সোনিয়া ও সঞ্জু ওরফে সেলিমের মধ্যে বন্ধুত্ব ও প্রেম হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোনে কথা বলত। যখন তার পরিবার তাকে জিজ্ঞাসা করত সে কার সাথে কথা বলছে, সে বলে যে সে তার ‘ভূতের’ সাথে কথা বলছে। এমনকি সে তার ইনস্টাগ্রামে লিখছিলেন ‘আই লাভ ভূত’।
ভূত নামে সেলিমের নম্বরও মোবাইলে সেভ করেছিল সোনা। যদিও পরিবার জানত যে সে কারো সাথে প্রেম করছে, কিন্তু তারা জানে না ছেলেটি কে। সোনিয়ার বোন বলে,’কিছুদিন পর আমরা জানতে পারি ছেলেটির নাম সঞ্জু। সোনিয়াকে নিয়ে আমি সঞ্জুর বাড়িতে যাই । যখন আমরা বাড়িতে যাই, আমরা জানতে পারি সে একজন মুসলিম ।’
কিন্তু পরিবারের কাছে সঞ্জুর প্রকৃত ধর্ম পরিচয় জানার পরেও সোনা তার নিজের জগতেই মগ্ন। সোনার পরিবার তাকে অনেকবার বোঝানোর চেষ্টা করেছিল সম্পর্ক শেষ করার জন্য, কিন্তু সোনা এক দূর মায়াবী জগতে বাস করছিল। তার পরিবারের সদস্যরা যা বলত সে পছন্দ করত না। তার ভাইও বোঝায় যে সোনিয়া যার সাথে দেখা করে সেই সেলিম ভালো ছেলে নয়। তার থেকে দূরে থাক, কিন্তু সে রাজি হচ্ছিল না ।
সঞ্জু বা সেলিম হিন্দু নাকি মুসলমান সেটা তার কাছে বিবেচ্য নয়। একসঙ্গে বাঁচা-মরার স্বপ্ন দেখত। চলতে থাকে দুজনের প্রেমের গল্প। প্রেমের নামে দুজনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেলিম তার লালসা চরিতার্থ করার জন্য সোনিয়াকে ব্যবহার করতে থাকে। ফলে বিয়ে না করেই ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে সোনিয়া । সোনিয়া সোশ্যাল মিডিয়া, বিশেষ করে ইনস্টাগ্রামে সক্রিয় থাকতে খুব পছন্দ করত । রিল তৈরি করে সেগুলি ইনস্টাগ্রামে আপলোড করত । তার ৬৭০০ ফলোয়ার ছিল। প্রাণবন্ত সোনিয়া এবার চিন্তিত বোধ করতে লাগল। বিয়ে ছাড়া ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকাটা এই সমাজে স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল না। পরিবারের পাশাপাশি সমাজের কটূক্তি বেশিরভাগের জন্য অসহনীয়।
সোনিয়া এখন সেলিমকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে। সেলিম টালবাহানা শুরু করল। কিন্তু, প্রেমে অন্ধ এবং তার পরিস্থিতি দ্বারা বাধ্য হয়ে সোনিয়া তখনও আশা করেছিল যে সেলিম তাকে গ্রহণ করবে। সেলিমের নামে করভা চৌথের উপবাসও রেখেছিল এবং উপবাস ভাঙতে সেলিমের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল, কিন্তু ফিরে আসেনি…ফিরে এল তার লাশ ।
করভা চৌথের পরের দিন ২১ অক্টোবর সোনিয়ার পরিবার নাংলোই থানায় নিখোঁজ রিপোর্ট দায়ের করে। অভিযুক্ত সেলিমের ওপর সন্দেহ প্রকাশ করে ভাই। দিল্লি পুলিশ তদন্ত শুরু করলে দেখা যায়, সোনিয়াকে শেষ ফোন করেছিল সেলিম । এদিকে সেলিম পশ্চিম বিহারে নম্বর প্লেটবিহীন বাইকে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। এই সফরে দিল্লি পুলিশ তাকে ধরে ফেলে । পুলিশ জেরায় জানতে পারে যে সোনিয়াকে সোজা রোহতকে নিয়ে যায় সেলিম…সুযোগ দেখে সে সোনিয়াকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে…তারপর তার লাশ রোহতকের জঙ্গলে মাটি চাপা দিয়ে পালিয়ে আসে ।।