এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাঁকুড়া,১৭ মে : শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের আভ্যন্তরীণ কলহের জেরে খুন হয়েছিলেন জনৈক এক তৃণমূল নেতা । আর তারপর থেকেই ঘরছাড়া অপর গোষ্ঠীর বেশ কিছু পরিবার । ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসন ও দলীয় নেতৃত্বের কাছে একাধিকবার তদ্বিরও করেছিল ঘরছাড়ারা । কিন্তু কোনও তরফ থেকেই ঘরে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ । এদিকে দীর্ঘ প্রায় দু’বছর ধরে ভিটেমাটি ছেড়ে থাকায় এক ঘরছাড়া গৃহবধূ হতাশায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করল । বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর ব্লকের ঘটনা । সোমবার সন্ধ্যায় বিষ্ণুপুরের ছিন্নমস্তা এলাকায় ভাড়া বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন জাহানারা বেগম নামে ওই গৃহবধু । তাঁকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ।
জানা গেছে,২০২০ সালে তৃনমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে খুন হন বিষ্ণুপুর ব্লকের বেলিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা তথা উলিয়াড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃনমূলের প্রাক্তন প্রধান শেখ বাবর আলি । অভিযোগ ওঠে তৎকালীন পঞ্চায়েত প্রধান তাসমিনা খাতুনে স্বামী রহিম মন্ডলের অনুগামীদের বিরুদ্ধে । আর তারপর পালটা হামলার আশঙ্কায় সেদিন থেকেই ঘরছাড়া হন উলিয়াড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সহ বেশ কিছু পরিবার ৷ তাঁদের মধ্যে কেউ আত্মীয়ের বাড়িতে আবার কেউ বাড়ি ভাড়া করে থাকতে শুরু করেন । ওই দলেই ছিলেন জাহানারা বেগম । স্বামী সেখ সেলিম ও দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে ছিন্নমস্তা এলাকায় এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাড়া নিয়ে রয়েছেন জাহানারা বেগমরা ।
উলিয়াড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ঘরছাড়া তাসমিনা খাতুন বলেন, ‘দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে প্রায় ৮৭ জন তৃণমূল কর্মী ও সমর্থক বিগত প্রায় দু’বছর ধরে ঘরছাড়া রয়েছেন । ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করার জন্য দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে জানিয়েছিলাম ৷ কিন্তু সবাই দেখছি দেখবো বললেও কোনো উদ্যোগই নিচ্ছে না । এদিকে গ্রেফতারির ভয়ে কেউ গ্রামে ঢুকতে পারছে না ।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাহানারা বেগমের স্বামী চাষবাস করেন । তাঁর কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম দূর্দশার মধ্যে কাটাতে হচ্ছে । এদিকে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনাও বন্ধ৷ এই সব নিয়ে ভাবনা থেকে হতাশায় আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন ওই মহিলা ।’
জানা গেছে,সোমবার সন্ধ্যায় বাজারে গিয়েছিলেন সেখ সেলিম । তখন বাড়িতে তাঁর স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান ছিল । কিছুক্ষণ পরে সেলিম ফিরে এসে দেখেন একটি ঘরের সিলিং থেকে ঝুলছেন তাঁর স্ত্রী । কালবিলম্ব না করে তিনি তাঁর স্ত্রীকে দড়ি কেটে নিচে নামান । তারপর প্রতিবেশীদের সহায়তায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেন । বর্তমানে বধুর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে ।।