এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২৩ ডিসেম্বর : পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানার অগ্রদ্বীপের কালিকাপুরে পরপর চারটি বাড়ির একাধিক তালা ভেঙে সোমবার রাতভর লুটপাট চালালো দুষ্কৃতীদের একটি বড়সড় দল । আজ মঙ্গলবার ভোরে স্থানীয় বাসিন্দারা চুরির বিষয়টি টের পেয়ে গেলে তারা দুষ্কৃতীদের পিছু ধাওয়া করে । বাকিরা পালাতে সক্ষম হলেও একজন দুষ্কৃতী ছাদ থেকে লাফিয়ে পালাতে গিয়ে জখম অবস্থায় ধরা পড়ে যায় ৷ পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় । পুলিশ ওই দুষ্কৃতীকে কাটোয়া হাসপাতালে ভর্তি করেছে । পুলিশ জানতে পেরেছে, ধৃত দুষ্কৃতীর নাম সামারুল শেখ । তার বাড়ি নদীয়া জেলার কালীগঞ্জ থানার কামেরি গ্রামে । ঠিক কতজন মিলে তারা চুরি করতে বেরিয়েছিল এবং তারা কারা তা ধৃত দুষ্কৃতীকে জেরা করে জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ ।
জানা গেছে,সোমবার রাতে কালিকাপুর গ্রামে হানা দেয় নদীয়া জেলার একটি বড়সড় দুষ্কৃতীদল। তারা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে মূলত ফাঁকা বাড়িগুলিকে টার্গেট করে । কালিকাপুরের তিনটি বাড়ির সদস্যরা পেশায় স্বর্ণকার এবং তারা কর্মসূত্রে পরিবার নিয়ে রাজস্থানের জয়পুরে থাকেন । ফলে তাদের বাড়িগুলি তালাবন্ধ ছিল । সম্ভবত দিনের বেলায় দলটি এলাকায় রেইকি করে গিয়েছিল । তাই পূর্ব পরিকল্পনা মত সোমবার গভীর রাতে নদীয়ার দুষ্কৃতী দলটি প্রথমে সনাতন হালদার নামে এক ব্যক্তির বাড়ির গেট ও একাধিক দরজার তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকে । তারপর আলমারী ভেঙে লুটপাট চালায় । এভাবে ওই দলটি সুকান্ত সেন নামে এক শিক্ষক,পিন্টু হালদার ও অনিরুদ্ধ চট্টোপাধ্যায় নামে আরও দুই ব্যক্তির বাড়ির তালা ভেঙে লুটপাট চালায় ।
জানা গেছে,সনাতনবাবুর বাবা শ্যামল হালদার ফাঁকা বাড়ি দেখাশুনা করেন৷ তবে বৃদ্ধ শ্যামলবাবু চুরির বিষয়টি টের পাননি৷ তার সম্বন্ধি বোধন হালদার সহ কয়েকজন আজ ভোরে মাছ ধরতে ভাগিরথী নদীতে যাওয়ার সময় বাড়িগুলি থেকে ভাঙচুরের শব্দ শুনতে পান । সন্দেহ হওয়ায় তারা প্রতিবেশিদের ঘুম থেকে তোলেন । এরপর পাড়ার লোকজন জড়ো হয়ে বাড়িগুলি ঘিরে ফেলে । বেগতিক বুঝে দুষ্কৃতীদের দলটি ছুটে পালিয়ে যায় । তবে সামারুল শেখ নামে ওই দুষ্কৃতী ছাদ থেকে লাফিয়ে পালাতে গিয়ে আহত হলে ধরা পড়ে যায় । সনাতন বাবুর বাড়ি থেকে পাঁচ ভরি সোনার গয়না, পিতলের দানসামগ্রী মিলে প্রায় ১২ লক্ষ টাকার জিনিসপত্র চুরি হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী পুজাদেবী ।
জানা গেছে, সুকান্তবাবু কর্মসূত্রে কাটোয়া শহরের স্টেডিয়াম পাড়ায় বাড়ি করে থাকেন । গ্রামের বাড়ি দেখাশোনা করেন তার বৃদ্ধ মামা ক্ষেতপুর পলাশী গ্রামের বাসিন্দা জহর বিশ্বাস । তিনিও চুরির বিষয়টি টের পাননি৷ সকালে প্রতিবেশীদের মুখে ঘটনার কথা শোনেন৷ অন্যদিকে পেশায় স্বর্নকার পিন্টুবাবু ও অনিরুদ্ধবাবুও কর্মসূত্রে জয়পুরে থাকেন৷ ফলে তাদের বাড়িগুলি তালাবন্ধই ছিল এবং তাদের ঠিক কি কি চুরি গেছে তা এখনো স্পষ্ট নয় । সনাতন বাবুর শ্বশুর শ্যামল হালদারের অনুমান, ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল চুরি করতে এসেছিল ৷ এবং তারা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে তারা চারটি বাড়িতে চুরি করতে ঢুকেছিল বলে মনে করছেন তিনি । এদিকে এই দুঃসাহসিক চুরির ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে । দাবি উঠছে নিয়মিত পুলিশের নজরদারির ।।

