দিব্যেন্দু রায়,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),০২ অক্টোবর : মাঠে ছাগলের জন্য ঘাস কাটতে গিয়ে লটারির টিকিট কাটার ইচ্ছা জেগেছিলে এক জনমজুরের । কিন্তু কাছে টাকা না থাকায় ধারে ৬০ টাকার টিকিট কেটেছিলেন । আর সেই টিকিটেই রাতারাতি কোটিপতি হয়ে গেলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট থানার খুর্ত্তুবাপুর গ্রামের বাসিন্দা জনমজুর ভাস্কর মাজি ।
বৃদ্ধা মা, স্ত্রীকে নিয়ে সংসার ভাস্কর মাজির । জনমজুরের কাজ করে সংসার চালিয়ে অতিকষ্টে দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন । এক চিলতে মাটির বাড়িতে কোনো রকমে বসবাস করে ওই হতদরিদ্র পরিবারটি । কষ্টের জীবনে কিছুটা স্বাচ্ছন্দের আশায় প্রায়ই স্থানীয় টিকিট বিক্রেতা মমেজুল শেখের কাছে গিয়ে টিকিট কাটতেন । কিন্তু এযাবৎ বিড়ালের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়েনি । কিন্তু রবিবারের ঘটনায় গোটা পরিবারের জীবন বদলে দিয়েছে ।
জানা গেছে,ওইদিন ন’পাড়া বাস স্ট্যান্ডের কাছে জমিতে ছাগলের জন্য ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন ভাস্করবাবু । নপাড়া বাসস্ট্যান্ডেই রয়েছে মমেজুল শেখ নামে জনৈক এক লটারির টিকিট বেক্রাতার দোকান । মাঝেমধ্যে তার কাছে টিকিট কাটেন ভাস্করবাবু । রবিবার ছাগল চড়াতে গিয়ে টিকিট কাটার ইচ্ছা জাগে তার । কিন্তু কাছে টাকাও ছিল না । মমেজুল শেখ বলেন,’আজ ভাস্করদা কাছে টাকা ছিল না। তাই ধারেই টিকিট নিয়ে গিয়েছিলেন । পরে ফলাফলের তালিকা আসতেই দেখি ওই টিকিটেই প্রথম পুরষ্কার এক কোটি টাকা পড়েছে । একজন হতদরিদ্র মানুষ পুরষ্কার পাওয়ায় আমরা খুব খুশি।’
ভাস্করবাবুর স্ত্রী সুমিত্রাদেবী বলেন, আমাদের খুব কষ্টের সংসার। স্বামীর মাঝেমধ্যে টিকিট কাটার অভ্যাস ছিল। এনিয়ে আপত্তিও করতাম। তবে টিকিট কেটেই যে এভাবে আমাদের সুদিন আসবে ভাবতেই পারিনি । দুর্গোৎসবের মুখেই জগজ্জননী আমাদের দিকে মুখ তুলে চেয়েছেন।’ মেয়ে নয়ন ও কল্পনাদেবী বলেন,’বাবা খুব হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে সংসার চালিয়ে দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন । আমাদের লেখাপড়াও করিয়েছেন । এবারে বাবাকে আর অন্যের জমিতে খেতমজুরের কাজ করতে যেতে হবে না ভেবে খুব আনন্দ পাচ্ছি । এবারের দূর্গাপূজোয় বাবার বাড়িতে খুব আনন্দ হবে ।’
ভাস্করবাবু বলেন, ‘ওই টাকায় প্রথমে একটা বাড়ি করব । কিছু জমিজমা কিনে চাষবাস করে বাকি জীবন কাটিয়ে দেবো ।’।