এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),১৭ মে : একই দড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামের এক দম্পতি । কেতুগ্রাম থানার মাসুন্দি গ্রামে ঘটনা । মৃতরা হলেন সুশান্ত পাল (৫০) ও তার স্ত্রী অনিমা পাল (৪৪) । আজ শুক্রবার সকালে বাড়ির একটি চালাঘরের চালের কাঠামো থেকে তাদের ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ । পরে দেহদুটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় । প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান পারিবারিক অশান্তির জেরেই এক ঘটনা ঘটেছে ।
জানা গেছে,সুশান্ত পাল রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। কিন্তু সিমেন্টের সংস্পর্শে শরীরের ত্বকে এলার্জির উপসর্গ দেখা দিলে তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ ছেড়ে ভিনরাজ্যে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজে লাগেন । মাস খানেক আগে সেই কাজও ছেড়ে দিয়ে বাড়ি ফিরে এসে সাইকেলে করে শব্জি ফেরি করতে শুরু করেন । সুশান্তবাবু ও অনিমাদেবীর দুই ছেলে । বড় সুবাহু ও ছোট সৈকত । দু’জনেই অবিবাহিত। সৈকত ভিনরাজ্যে একটি হোটেলে কাজ করেন । সুবাহু ব্যাঙ্কে ঠিকাচুক্তিতে লোন সংক্রান্ত কাজের পাশাপাশি আয়ূর্বেদ ওষুধ বিক্রি করেন । বাবা-মায়ের সাথেই থাকত সুবাহু ।
সুবাহু জানিয়েছেন,বৃহস্পতিবার তিনি যখন কেতুগ্রামের কাঁদরায় ব্যাঙ্কের কাজে ছিলেন তখন তার বাবা ফোন করে শব্জি কিনে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন । কিন্তু তিনি ব্যস্ত থাকায় বাবাকে টোটো ভাড়া করে শব্জি কিনে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন । বাড়ি ফিরে আসার পর এনিয়ে বাবার সঙ্গে তার অল্পবিস্তর কথা-কাটাকাটি হয় । কিন্তু আজ সকালে দেখি বাবা-মা দু’জনেই আর নেই ।
জানা গেছে,সুশান্তবাবুর এক ভাই আছেন । পৈতৃক ভিটাতে পাশাপাশি বাড়িতে বসবাস দুই ভাইয়ের । সুশান্তবাবুর ভাতৃবধূ যমুনাদেবী সকালে ধানসিদ্ধ করার জন্য যখন প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সেই সময় তার নজরে পড়ে বাড়ির চালাঘরে একই দড়িতে ঝুলছে ভাসুর ও জা । সঙ্গে সঙ্গে তিনি চিৎকার করে বাড়ির লোকজনদের ডাকাডাকি করেন । খবর পেয়ে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ এসে দম্পতিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ কিন্তু চিকিৎসারা তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন । পুলিশ দুটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রজু করেছে । মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ গ্রাম ।।