দিব্যেন্দু রায়,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),২২ আগস্ট : প্রেমিকা বিয়ে করতে অস্বীকার করায় বিষপান করে আত্মঘাতী হল এক কলেজ পড়ুয়া ৷ পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার মুড়গ্রামের বাসিন্দা আসাবুল শেখ(১৯) নামে ওই পড়ুয়া রবিবার বিকেলে কেতুগ্রামের নিরোল স্টেশনের অদূরে মাঠ গিয়ে বিষপান করেন । সেখান থেকেই ফোন করে একাধিক বন্ধুকে তিনি বিষয়টি জানান । তারপর পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান । তারা আসাবুলকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে আনেন । কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । এই ঘটনায় মৃতের পরিবার আসাবুলের প্রেমিকা ও তাঁর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ তুলেছেন । তবে এনিয়ে নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ । পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ।
জানা গেছে,মুড়গ্রামের বাসিন্দা আসাবুল শেখ কেতুগ্রামের কাঁদরা কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন । দু’ভাই বোনের মধ্যে সে বড় । বোন পায়েল খাতুন একাদশ শ্রেনীর ছাত্রী । তাঁদের বাবা আতর শেখ ভিন রাজ্যের একটি পাউরুটি কারখানায় কাজ করেন । একই গ্রামের বাসিন্দা এক তরুনীর সঙ্গে দীর্ঘ প্রায় ৩ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল আসাবুলের । দু’জনের বিয়ে নিয়ে মৌখিক কথাবার্তাও হয়েছিল বলে জানিয়েছেন আতর শেখ । তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি মেয়েটির পরিবার বিয়ে দিতে অস্বীকার করে। গ্রামেরই এক যুবকের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে ঠিক করে তার পরিবার । মেয়েটি তাতে সম্মতিও দিয়েছিল । রবিবার মেয়েটি,মেয়ের মা, মেয়ের মাসি,ও আমার ছেলে মিলে এনিয়ে ফোনে কনফারেন্সে কথা হয় । তখন মেয়ের মা ও মাসি আমার ছেলেকে হুমকি দিয়ে জানায় সে যেন মেয়েটিকে ভুলে যায় । মেয়েটিও আমার ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে অস্বীকার করে । আর তারপরেই ভয়ঙ্কর এই ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে আমার ছেলে ।’
পরিবার সুত্রে জানা গেছে,রবিবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ আসাবুল বাড়ি থেকে বাইক নিয়ে বেড়িয়ে যায় । পাঁচুন্দি বাসস্ট্যান্ডে বাইকটি রাখে । বাজার থেকে বিষ কেনে । তারপর মাঠের মাঝে গিয়ে বিষপান করে । পরিবারের লোকজন সেখানে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয় তাঁর । সোমবার ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ কবরস্থ করা হয় ।
মৃতের পরিবারের লোকজনের দাবি, আসাবুলের প্রেমিকার বাবার অনেক দিন আগেই মৃত্যু হয়েছে । মেয়েটি একটি মিশনে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনা করে । তার পড়াশোনা থেকে শুরু করে যাবতীয় হাতখরচ জোটাতো আসাবুল । তারপরেও মেয়েটি বিয়ে করতে অস্বীকার করায় এবং মেয়েটির পরিবারের লোকজন হুমকি দেখানোয় অত্যন্ত হতাশ হয়ে পরে আসাবুল । আর তার জেরেই সে আত্মহননের পথ বেছে নেয় ।।