এইদিন ওয়েবডেস্ক,লন্ডন,১৪ মে : মাথায় ‘টাক’ থাকা যে কতটা যন্ত্রণাদায়ক তা একমাত্র ভুক্তভুগীরাই জানেন । পথেঘাটে যাবার সময় টাকের কারনে মানুষের হাজারো কটাক্ষের শিকার হতে হয় । টাকবহুল মানুষের এহেন মানসিক নির্যাতন থেকে বাঁচাতে অভাবনীয় একটা রায় দিল ব্রিটেনের একটি আদালত । সম্প্রতি ওই আদালতটি টাক নিয়ে মন্তব্যকে যৌন হয়রানির সমতুল্য বলে রায় দিয়েছে । অর্থাৎ ব্রিটেনে এবার থেকে কেউ কারোর টাক নিয়ে উপহাস ও মজা করলে তা অপরাধ হিসাবে গন্য হবে । ব্রিটেনের শ্রম আদালত একটি কারখানার এক কর্মীর দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই রায় দিয়েছে বলে জানা গেছে ।
জানা গেছে,অভিযোগকারী ব্যক্তির নাম টনি ফিন। তিনি ইয়র্কশায়ারের একটি ছিপি তৈরির কারখানায় ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে দুই দশকের অধিক সময় ধরে কাজ করছেন । গত বছরের মে মাসে তাকে চাকরিচ্যুত করা হলে তিনি শ্রম আদালতের শরণাপন্ন হন। টনি ফিন অভিযোগ করেন, মাথায় চুল না থাকায় তিনি যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন । ২০১৯ সালে কারখানা সুপারভাইজার জেমি কিং কথা কাটাকাটির সময় তাকে ‘স্টুপিড টাক’ বলে গালি দেন । যাতে তিনি অপমানিত বোধ করার পাশাপাশি মানসিকভাবে আহতও হন ।
সম্প্রতি বিচারক জোনাথন ব্রেইনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে এই মামলার শুনানি হয় ।
বিচারকরা বলেছেন,’টাক নিয়ে মন্তব্য ওই ব্যক্তির মর্যাদার লঙ্ঘন । কোনো নারীর বক্ষদেশের আকার নিয়ে মন্তব্য যেমন আপত্তিকর, তেমনি টাক নিয়ে কথা বলাও তেমনি অগ্রহণযোগ্য ও অপরাধ । আমাদের বিচারে টাক শব্দটির সঙ্গে যৌনতার একটি সম্পর্ক আছে।’
এই প্রসঙ্গে পুরেনো একটি মামলায় নারীর বক্ষদেশ নিয়ে মন্তব্যের জন্য এক ব্যক্তির দোষী সাব্যস্ত হবার কথা উল্লেখ করে বিচারকরা বলেন, ‘টনি ফিনের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটি একই ধরনের। পার্থক্য শুধু এখানে একজন পুরুষ ভিকটিম হয়েছেন ।’ টনি ফিনকে আহত করতেই জেমি কিং টাক নিয়ে মন্তব্য করেছেন বলে বিচারকরা মনে করছেন বলে রায়ে জানানো হয় । আদালতের রায়ে বলা হয়, অভিযোগকারীকে ‘স্টুপিড টাক’ অভিহিত করা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং মর্যাদাহানীকর । এটা বলে অভিযোগকারীর জন্য ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে । পাশাপাশি টনি ফিনকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করার জন্য ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণের শুনানির জন্য পরবর্তী দিন ধার্য্য করেছে আদালত ।।