এইদিন ওয়েবডেস্ক,ফতেহপুর,১৬ মার্চ : উত্তরপ্রদেশের ফতেহপুর জেলার খাখরেরু থানা এলাকায় লাভ জিহাদের এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে । হিন্দু নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলা রশিদ খান নামে এক লাভ জিহাদির ফাঁদে পা দিয়ে চরম বিপাকে পড়ে গেছেন এক ব্রাহ্মণ তরুনী (১৯) । ভুক্তভোগী অভিযুক্ত রশিদের দুটি আধার কার্ড মিডিয়ার কাছে শেয়ার করেছেন । যার একটির নাম রয়েছে রশিদ খান এবং অন্যটির রাজু মিশ্র নামে রয়েছে ।
অর্গানাইজ উকলির প্রতিবেদনে জানা গেছে,ঘটনাটি ২০২১ সালের । তখন রশিদ সুরাটের একটি ইস্পাত কারখানায় কাজ করত । রাজু মিশ্র নামে ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলে ওই হিন্দু তরুনীর সঙ্গে সে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে । মেয়েটি তখন নাবালিকা (১৭) ছিল । রশিদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে মেয়েটি তার সঙ্গে দেখা করতে সুরাটে চলে যায় । সেখানে ওই যুবক মেয়েটিকে নিজের ঠিকানায় নিয়ে গিয়ে মাদক জাতীয় কিছু পান করিয়ে বেহুঁশ করে ধর্ষণ করে । সেই অশ্লীল দৃশ্য নিজের মোবাইলে রেকর্ড করে রাখে রশিদ । তারপর শুরু হয় ব্লাকমেলিং । সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেখিয়ে সে মেয়েটিকে লাগাতার ধর্ষণ করতে থাকে ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী,ইতিমধ্যে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে সে রশিদকে বিয়ের জন্য চাপ দেয় । কিন্তু রশিদ তাকে বিয়ে না করে উলটে গর্ভপাত করায় বলে অভিযোগ । আর তখনই নিজের আসল ধর্ম পরিচয় প্রকাশ করে ওই লাভ জিহাদি ।
এদিকে ফের গর্ভবতী হয়ে পড়ে মেয়েটি । মেয়েটি রশিদকে তখন বিয়ের জন্য চাপ দিতে শুরু করে
। তখন রশিদ জানায় সে ইসলামে ধর্মান্তরিত হলেই তাকে বিয়ে করবে । অবশেষে তার শর্ত মেনে নেয় মেয়েটি । রশিদকে বিয়ে করার জন্য ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর একজন স্থানীয় একটি মসজিদের আলেমকে ডাকা হয় । মেয়েটির নাম রাখা হয় স্নেহা মাহি খান । নিকাহ-এর পর রশিদ যখন তাকে ফতেপুরে তার পিতামাতার বাড়িতে নিয়ে যায় তখন শ্বশুরবাড়িতে তাকে জোর করে ‘গরুর মাংস’ খাওয়ানো হয় । পাশাপাশি মেয়েটিকে কুরআনের একটি কপিও দিয়ে তাদের সাথে নামাজ পড়তে বলা হয় । এমনকি সর্বদা তাকে পাঞ্জাবি স্যুট পরতে হবে এবং বাধ্যতামূলকভাবে ‘হিজাব’ দিয়ে মাথা ঢেকে রাখতে হবে বলেও নির্দেশ দেয় বলে অভিযোগ ।পরে ফের মেয়েটিকে সুরাটে নিয়ে যায় রশিদ ।
রিপোর্ট অনুযায়ী, নিকাহের পর সুরাটে ফের গর্ভবতী হয়ে পড়ে মেয়েটি । রশিদ তার অজান্তেই ওষুধ খাইয়ে ফের তার গর্ভপাত করে দেয় । এদিকে তার আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে রশিদ তিন মাসের মধ্যে ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়েটিকে তার বাপের বাড়ি থেকে চার লাখ টাকা আনা করিয়েছিল । কিন্তু দ্বিতীয় বার গর্ভপাত করানোর পর মেয়েটি টাকা ফেরত চাইলে রশিদ সুরাট ছেড়ে পালিয়ে যায় । মেয়েটি তখন ফতেহপুরে রশিদের বাড়িতে এসে লোকজনের কাছে টাকা চাইলে তার বাবা-মা তাকে ভয়ানক পরিণতির হুমকি দেয় । তারা সাফ জানিয়ে দেয়,তাকে আর ঘরে রাখা যাবে না । তবে তারা জানায়, রশিদ একজন ‘কাফির হিন্দুকে ইসলামে দীক্ষিত করেছে’ যা ‘এক হজ কা সওয়াব’-এর সমান।
ভুক্তভোগী তরুনীর অভিযোগ,সুরাটে তাকে টাকা পয়সা ও খাদ্যসামগ্রী ছাড়াই রেখে যেত রশিদ । বেঁচে থাকার জন্য সে তার বন্ধুদের কাছে টাকা ধার করত । সেখানে টিকে থাকা তার পক্ষে কঠিন হয়ে উঠছিল । এদিকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রশিদ তাকে বলেছিল,’তোকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করে আমি ‘এক হজ কা সাওয়াব’ পেয়ে গেছি । এখন আর তুই আমার কোনো কাজে আসবি না । আমি তোকে আর রাখবো না ।’
জানা গেছে,এরপর তরুণী ফতেপুরে রশিদের বাড়িতে আসেন । কিন্তু তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয় । শেষে গত ১৩ মার্চ ফতেপুর জেলার খাখরেরু থানায় পৌঁছে অভিযোগ দায়ের করতে যান । কিন্তু পুলিশ তাকে গুরুত্ব দেয়নি বলে অভিযোগ । এদিকে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যাওয়ার সময় কয়েকজন স্থানীয় হিন্দু কর্মীর সাথে মেয়েটির আলাপ হয় । তাদের মাধ্যমেই বিষয়টি মিডিয়ার নজরে আসে ।
জানা গেছে,তরুনীর তার বাবা পেশায় কৃষক এবং তার মা গৃহবধূ । তার চার ভাই আছে এবং তাদের সবাই বিবাহিত । তরুনী সব ভাইবোনের মধ্যে ছোট । কিন্তু একজন মুসলিমের সঙ্গে পালানোয় তরুনীর ভাইয়েরা তাকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন এরপর পরিবারে তার আর জায়গা হবে না । ফলে অতান্তরে পড়ে গেছেন তরুনী । কারন তিনি স্বামীর সঙ্গে থাকতে ইচ্ছুক হলেও রশিদ আর তাকে নিতে ইচ্ছুক নয় । সেই কারনে তরুনী জানান, তিনি তার অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চান । কারণ সে তাকে বিগত কয়েক বছর ধরে যৌন শোষণ করেছে, আর্থিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করেছে ।’ পাশাপাশি রশিদ তাকে প্রতিনিয়ত তাকে প্রাণনাশের হুমকিও দিয়ে আসছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন ওই তরুনী ।।
তথ্যসূত্র ও ছবি : অর্গানাইজ উইকলি ।