এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),০৯ এপ্রিল : দল রাজ্যে ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত পায়ে জুতো পড়বেন না । এমনই ধনুক ভাঙা পণ করেছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম-২ ব্লকের নিরোল অঞ্চলের নিরোল গ্রামের বাসিন্দা নীলমণি দানা নামে বছর ৪৬-এর এক বিজেপি কর্মী । দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর ধরে তিনি শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষায় খালি পায়েই সর্বত্র ঘুরে বেড়াচ্ছেন । শুক্রবার কেতুগ্রামের উদ্ধারণপূরে দলের বুথ কর্মীদের সম্মেলন যোগ দিতে এসেছিলেন নীলমণিবাবু । যথারীতি তাঁকে খালি পায়েই আসতে দেখা যায় । নীলমণিবাবু বলেন, ‘মে মাসের ২ তারিখের পর আমাদের দল রাজ্যে ক্ষমতায় আসতে চলেছে । তখন দলের মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে নতুন জুতো উপহার নিয়ে আমি ফের জুতো পড়া শুরু করব ।’
নিরোল গ্রামের আদর্শ পাড়ায় বাড়ি নীলমণি দানা নামে ওই বিজেপি কর্মীর । স্ত্রী রাখি দানা,এক মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে সংসার । মেয়ে সুমনা(১৬) নিরোল উচ্চ বিদ্যালয়ে একাদশ শ্রেনীতে পড়াশোনা করে । একই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র ছেলে সুশোভন(১০) । নীলমণিবাবু জনমজুরির পাশাপাশি ধুপকাঠি বিক্রি করেন । সেই রোজগারেই অতিকষ্টে সংসার চলে । অভাবের সংসারে সাশ্রয়ের জন্য কাঁথা স্টিচের কাজ করেন নীলমণিবাবুর স্ত্রী রাখিদেবী । রাখিদেবীর কথায়, ‘মেয়ের জন্মের আগে থেকেই দেখছি আমার স্বামী জুতো ব্যাবহার করেন না । কারন জিজ্ঞাসা করলে কেবল বলতেন জুতো পড়লে ওনার অসুবিধা হয় ।’
দলীয় সুত্রে খবর,নীলমণি দানা দীর্ঘ দিন ধরেই বিজেপির সঙ্গে যুক্ত । দলের সমস্ত কার্যক্রমেই তিনি উপস্থিত থাকেন । তবে কোনও সময়েই তাঁকে জুতো পড়তে দেখা যায়নি ৷ যদিও এনিয়ে জানার কেউ আগ্রহ দেখাননি বলে আসল সত্য এতদিন প্রকাশ্যে আসেনি ৷ কিন্তু এদিন উদ্ধারণপুরে দলের বুথ কর্মী সম্মেলনে যোগ দিতে এলে বিজেপির মিডিয়া সেলের কর্মী অভিজিৎ হাজরাসহ কয়েকজন নীলমণিবাবুকে চেপে ধরেন । তখন জুতো না পড়ার পিছনে নিজের প্রতিজ্ঞার কথা খোলসা করেন প্রবীণ ওই বিজেপি কর্মী ।
পূর্ব বর্ধমানে বিজেপির সাংগঠনিক কাটোয়া জেলার সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, ‘বিজেপিতে নীলমণি দানার মত কার্যকতা আছেন বলেন আজ বিজেপি এই জায়গায় আসতে পেড়েছে । আমি মন থেকে ওনাকে প্রনাম ও শ্রদ্ধা জানাই । আমিও চাই ওনার সংকল্প, ওনার আশা মে মাসের ২ তারিখের পর পূরণ হোক ।’।