এইদিন আন্তর্জাতিক ডেস্ক,১০ নভেম্বর : কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় হিন্দু বধূকে ঘরে আটকে রেখে গয়না ও পিতলের বদনা পর্যন্ত কেড়ে নিল বাংলাদেশের বাগেরহাটের চিতলমারীতে ডাম ফাউন্ডেশন ফর ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (DFED) নামের একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ।ভুক্তভোগী গৃহবধূ শ্রাবণী হীরা অভিযোগ করেছেন, ঋণের কিস্তি দিতে না পারায় সংস্থার কর্মীরা বাড়িতে এসে তার শরীর থেকে সোনার আংটি, নাকফুল খুলে নেয় । শুধু তাইই নয়,তার হাতে থাকা একটা পিতলের বদনা কেড়ে নিয়ে চলে গেছে ।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে,ওই এনজিও-এর চিতলমারী শাখা থেকে ৪০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন ২২ বছর বয়সী শ্রাবণী হীরা । সুদে আসলে ৪৫ হাজার ১২০ টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। এতদিন কিস্তি ঠিকঠাকই দিয়ে আসছিলেন তিনি । কিন্তু সম্প্রতি তার স্বামী রিপন রায় কাজের জন্য বাইরে গেলে কয়েকটি কিস্তি বাকি পড়ে যায় ।
শ্রাবণীর অভিযোগ, গত ২৯ অক্টোবর সকালে এনজিও কর্মীরা তাকে ও তার তিন বছরের কন্যাকে বাড়ি থেকে ডেকে অফিসে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের একটি ঘরে তালাবন্ধ করে তাদের রেখে দেওয়া হয় । বিকেল নাগাদ সংস্থার কর্মকর্তারা আসার পর তাকে দুটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করিয়ে তার হাতের আংটি, নাকফুল এবং পিতলের বদনা কেড়ে নেওয়া হয়। এ সময় একটি ভিডিও রেকর্ড করা হয় বলেও তিনি জানান। শ্রাবণী বলেন,’আমাকে তালাবদ্ধ করে ভয় দেখানো হয়। আমার মেয়ে ক্ষুধায় কাঁদছিল, কিন্তু আমি কিছু বলতে পারিনি।’ এনজিও কর্মীরা পাশ বইয়ে ‘আংটি বাবদ ৮ হাজার’ এবং ‘বদনা বাবদ ১ হাজার ৫০০ টাকা’ জমা হিসেবে লিখে রেখেছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে DFED চিতলমারী শাখার ম্যানেজার বাসুদেব দেবনাথ জানান, গৃহবধূ শ্রাবণী কিস্তি খেলাপি ছিলেন। তিনি নাকফুল নেওয়ার বিষয়টি শুনেছেন এবং ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন। তবে এনজিওর কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, গৃহবধূ নাকি খুশি হয়েই তার গয়না ও বদনা দিয়েছেন।
এদিকে গত শনিবার (৮ নভেম্বর) শ্রাবণী হীরার একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও আলোচনা শুরু হয়। অনেকেই এনজিওর এমন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন।এই ঘটনা এনজিও কর্মীদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দরিদ্র মানুষের অসহায় অবস্থার সুযোগ নেওয়ার অভিযোগও উঠছে ।।

