এইদিন ওয়েবডেস্ক,তেহেরান,০৫ অক্টোবর : চুল ঢেকে না রাখায় ১৬ বছরের কিশোরীকে নির্মমভাবে পেটালো ইরানি পুলিশ । আরমিতা গারাওয়ান্ডের ( Armita Garawand) নামে ওই কিশোরীর মাথায় নির্মমভাবে আঘাত করায় মেয়েটি কোমায় চলে গেছে । বর্তমানে সে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে । ইরানী-কুর্দি অধিকার গোষ্ঠী হেনগাও তেহরানের একটি হাসপাতালে অচেতন অবস্থায় তার ছবি পোস্ট করেছে যেখানে তাকে ঘটনার পরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছ থেকে ঘটনাটি সম্পর্কে মন্তব্য করার অনুরোধের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ।
বিষয়টির সংবেদনশীলতার কারণে ইরানী-কুর্দি অধিকার গোষ্ঠীর নেতাকর্মীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেছেন,’আমরা তার মামলা নিবিড়ভাবে অনুসরণ করছি। কিশোরী হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে কোমায় রয়েছেন এবং তার অবস্থা গুরুতর … তার আত্মীয়রা বলেছেন যে হাসপাতালে সাধারণ পোশাকের প্রচুর পুলিশ উপস্থিতি রয়েছে । নিরাপত্তা বাহিনী গেরভান্ডের বাবা-মাকে তার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে বা মানবাধিকার গোষ্ঠীর সাথে কথা বলতে নিষেধ করেছে ।’
ফুটেজে নারীকে অজ্ঞান অবস্থায় দেখা যাচ্ছে
ইরানের মেট্রো এজেন্সি দ্বারা প্রকাশিত সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, বাধ্যতামূলক হিজাব ছাড়াই মেট্রো প্ল্যাটফর্ম থেকে দুই বান্ধবীর সঙ্গে হেঁটে যাচ্ছে গেরাভান্ড(Geravand) । ফুটেজে তাকে একটি স্কার্ট পরে দেখা যাচ্ছে, কয়েকজন মিলে মেয়েটিকে ট্রেনের কামরা থেকে অচেতন অবস্থায় টেনে নিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে । তেহরান মেট্রো অপারেটিং কোম্পানির প্রধান মাসুদ দোরোস্তি আইআরএনএকে বলেন,’সিসিটিভি ফুটেজে যাত্রী বা কোম্পানির কর্মচারীদের মধ্যে মৌখিক বা শারীরিক সংঘর্ষের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি ।’
ইরানি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সোমবার একজন ইরানি সাংবাদিক মরিয়ম লোফতিকে সাময়িকভানে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল,কারন তিনি গেরভান্ডের অবস্থা সম্পর্কে জানতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন ।
ইরান-ভিত্তিক অধিকার গ্রুপ দাদবান সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছে,’ইরানের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানগুলো বলেছে যে আমিনির ঠিক একই অবস্থা করেছিল ইরানের নৈতিকতা পুলিশ – এই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলির থেকে বারবার একই ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে ।’
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনাতে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে, তার বাবা-মা বলেছেন যে মেট্রো কেবিনের ভিতরে তাদের মেয়ের মাথায় আঘাতের কারনে মেয়ের রক্তচাপ কমে গেছে এবং সে কোমায় চলে গেছে । এদিকে জার্মান এফএম ইরানের নিন্দা করেছে । সোশ্যাল মিডিয়ার অধিকার গোষ্ঠীগুলির সাথে তারা কর্তৃপক্ষকে কেবিনের ভিতর থেকে ফুটেজ প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছে, দাবি করেছে যে তার বাবা-মায়ের বিবৃতি চাপের মধ্যে দেওয়া হয়েছিল।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ জার্মানির বিদেশ মন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেছেন,’আবারও ইরানে একজন তরুণী তার জীবনের জন্য লড়াই করছেন । তার অপরাধ শুধু তিনি পাতাল রেলে তার চুল দেখিয়েছেন। এটা অসহনীয়। আরমিতা গারাওয়ান্ডের( Armita Garawand)বাবা-মা এর তাদের মেয়ের বিছানার পাশে থাকার অধিকার আছে ।’।