এইদিন ওয়েবডেস্ক,কুমিল্লা,০৫ অক্টোবর : বাংলাদেশের কুমিল্লার একটি মাদ্রাসায় ১০ বছর বয়সী এক ছাত্রকে পিটিয়ে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল । কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার খাড়াতাইয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার ঘটনা ৷ মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সকালে মাদ্রাসার তিন তলার ছাদে জয়নাল আবেদিন জয় নামে ওই শিশুটিকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় মাদ্রাসার অনান্য পড়ুয়ারা ৷ মৃতের বাবা আনোয়ার হোসেন ও মা মা ঝরনা আক্তারের অভিযোগ, ‘মাদ্রাসার শিক্ষকরা আমার ছেলেকে পিটিয়ে মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে । এখন মৃত্যুর আসল ঘটনা তারা লুকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । পুলিশ সুষ্ঠু তদন্ত করে মৃত্যুর সঠিক কারণ বের করুক । আমরা সঠিক বিচার চাই ।’৷ যদিও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দাবি হতাশায় আত্মঘাতী হয়েছে ওই শিশু । এই বিষয়ে বুড়িচং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন বলেন, ‘বুড়িচং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মৃত শিশুর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে মূল ঘটনা বের করার চেষ্টা করছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারন জানা যাবে ।
খাড়াতাইয়া গ্রামের বাসিন্দা পেশায় রাজমিস্ত্রি আনোয়ার হোসেনের ছেলে জয়নাল আবেদীন জয় । শিশুটি খাড়াতাইয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার নাজেরা বিভাগের ছাত্র ছিল । ঘটনার দিন সকাল ১০ টা নাগাদ সহপাঠীদের সাথে খাবার খাওয়ার পর ঘুমাতে যায় জয়নাল আবেদীন জয় । পরে মাদ্রসার আর এক ছাত্র আলী আকবর তিন তলা ভবনের ছাদে গিয়ে তাকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলতে দেখে । সে নিচে এসে শিক্ষকদের খবর দিলে কাউকে কিছু না জানিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় । পরে ঘটনার খবর পেয়ে বুড়িচং থানার পুলিশ এস আই মিঠুন মাদ্রাসায় গিয়ে জয়নাল আবেদীন জয় নামে ওই শিশুর দেহটি উদ্ধার করতে যায় । কিন্তু সেখানে দেহটি না পেয়ে তিনি হাসপাতালে যান । সেখান থেকে শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় ।
মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক রবিউল হাসান, সহকারী শিক্ষক হাফেজ মোহম্মদ হামজাদ, হাফেজ মোহম্মদ হেলাল হোসেনের দাবি ওই পড়ুয়া আত্মহত্যা করেছে। ওই ছাত্রকে আমাদের নিজ সন্তানের মতোই দেখতাম।’ কিন্তু এত অল্প বয়সের একটা শিশু কেন আত্মঘাতী হতে গেল? এবং ছাদের উঁচু কাঠামো থেকে কিভাবে সে নিজের গলায় ফাঁস লাগালো? এনিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিশুর পরিবারের লোকজন ।
মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ডাক্তার আব্দুল লতিফ ও সভাপতি ডঃ মুহাম্মদ সোলায়মান বলেন, ‘আমরা ঘটনার কথা শুনে মাদ্রাসায় গিয়ে মাদ্রাসায় গিয়েছিলাম । মৃত্যুর সঠিক কারণ জানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষকদের অবেহেলা থাকলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপরে পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে ।’
প্রসঙ্গত,বাংলাদেশের মাদ্রাসাগুলি কার্যত শিশুদের বধ্যভূমি ও যৌন লালসার শিকারের কেন্দ্র হয়ে গেছে । সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি মাদ্রাসায় মাত্র ৫ বছরের এক শিশুকন্যাকে নির্মমভাবে ধর্ষণ করে মেরে ফেলেছিল ওই মাদ্রাসার এক শিক্ষক । অন্য একটি মাদ্রাসার এক সমকামী শিক্ষকের যৌন লালসার শিকার হয়েছিল বছর দশেকের এক কিশোর । কিশোরের পায়ূদ্বারে ক্যান্সার হয়ে গেছে এবং সে বর্তমানে হাসপাতালে জীবনমৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে ।।