এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়া দিল্লি,২৭ নভেম্বর : শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হওয়া কোভিড-১৯ এর নতুন স্ট্রেনকে ‘উদ্বেগের ভ্যারিয়েন্ট’ বলে বর্ননা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(WHO) । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন B.1.1.529 স্ট্রেনটির নাম দিয়েছে ওমিক্রন । এই স্ট্রেনটি দক্ষিণ আফ্রিকার গাউতেং(Gauteng) প্রদেশে প্রথম সন্ধান পাওয়া যায় । ইতিমধ্যে এই ভ্যারিয়েন্টটি ইউরোপেও প্রবেশ করেছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সুত্রে জানা গেছে । দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও বেলজিয়ামে এক ব্যক্তির শরীরে ওমিক্রন স্ট্রেন শনাক্ত করা হয়েছে । আক্রান্ত ব্যক্তি সম্প্রতি মিশর থেকে এসেছিল বলে জানিয়েছেন বেলজিয়ামের কর্মকর্তারা । এই ভ্যারিয়েন্টটির প্রচুর সংখ্যক মিউটেশন থাকার কারনে এটি যথেষ্ট উদ্বেগের বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা । এদিকে কোভিডের নতুন বিকল্পের সন্ধান পাওয়ার পর ফের ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে । ফলে মার্কিন তেলের দাম কমে যাওয়ায় বিশ্ব বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ।
করোনা নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করায় উদ্বেগে রয়েছেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরাও । জিনোম সিকোয়েন্সিং (genome sequencing) নিরীক্ষণকারী ইনসাকগ (insaccog)-এর আশঙ্কা, যদি এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট B.1.1529 ডেল্টার সাথে মিশে যায় তাহলে গুরুতর সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে । যদিও এখন পর্যন্ত এই ধরনের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে তাঁরা জানিয়েছেন । দিল্লির Council of Scientific and Industrial Research (CSIR) এর Institute of Genomics and Integrative Biology (IGIB)র বর্ষীয়ান বিজ্ঞানী ডাঃ বিনোদ স্কারিয়া বলেছেন, ‘ প্রথমবারের মতো ভাইরাসে 32টি মিউটেশন ঘটেছে । এটি ভাইরাসের স্পাইক কাঠামো যা সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন ঘটিয়েছে । সেই কারণে ব্রেক-থ্রু সংক্রমণের ঘটনাগুলি (ভ্যাকসিন নেওয়ার পর বা দ্বিতীয়বার সংক্রমণ) রেকর্ড করা হয়েছে ।’ তাঁর কথায়, ‘এখন অপেক্ষা এবং দেখার পালা(Now it’s time to wait and watch) । এখন কাজ করার সময় । আমাদের আরও সাবধান হওয়া দরকার। সম্পূর্ণ সতর্কতার সাথে ভ্যাকসিন এবং জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলির ব্যবস্থা দ্রুত শুরু করা প্রয়োজন । তবে এই ভেরিয়েন্ট সম্পর্কে আরও তথ্যের জন্য কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে । দক্ষিণ আফ্রিকাসহ অন্যান্য দেশের বিজ্ঞানীরাও বর্তমানে এর গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন ।’
দিল্লির ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR) এর সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ডাঃ ললিত কুমারও করোনার এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন । তিনি জানান,ভারতে ইতিমধ্যেই করোনার ৬৯ শতাংশেরও বেশি গুরুতর রূপ রয়েছে । তার মধ্যে সর্বাধিক ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট । এমতাবস্থায়, B.1.1.529 স্ট্রেনটি যদি ভারতে প্রবেশ করে তাহলে কীভাবে যে এটি ডেল্টার সাথে মিশে যাবে তা বলা মুশকিল ।
শুক্রবার এনিয়ে বিজ্ঞানীদের উচ্চ-পর্যায়ের একটি বৈঠক হয় । বৈঠকের পর এক সিনিয়র বিজ্ঞানী জানান,এই মুহূর্তে হোম কোয়ারেন্টাইনের উপর সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে । সন্দেহভাজন রোগীদের বিমানবন্দরেই কোয়ারেন্টাইন পরিষেবা পাওয়া উচিত । যাতে নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমন না ছড়াতে পারে । কোনওভাবেই সংক্রমণের উৎস হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না বলেও তিনি সতর্ক করে দেন ।।
ছবি : হু’র ট্যুইটার হ্যান্ডেল থেকে নেওয়া ।