প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৬ নভেম্বর : প্রতারিতর দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিত ভুয়ো দন্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা ও প্রতারণা ধরায় মামলা রুজু করে পুলিশ কে তদন্তের নির্দেশ দিল বর্ধমান আদালত। এই ঘটনা জানজানি হতেই
শুক্রবার ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে পূর্ব বর্ধমানের দন্ত চিকিৎসক মহলে । বর্ধমান আদলতকে শুক্রবার চিন্ময়বাবু অভিযোগে জানিয়েছেন,বছর খানেক আগে তাঁর দাঁতের সমস্যা দেখা দেয়। তখন তিনি মেমারির একটি নার্সিংহোমে যোগাযোগ করেন । সেখান থেকে এক চিকিৎসকের নাম বলা হয়। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ তাঁকে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। গত বছরের ১৬ এপ্রিল তিনি নাির্সংহোমে যান । নার্সিংহোমে ওই চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন । তাঁকে পরীক্ষা করে ওই চিকিৎসক জানান, দাঁতে সংক্রমণ হয়েছে । দ্রুত অস্ত্রপচার জরুরি । সেদিনই কোনও রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই তাঁর অস্ত্রপচার করা হয়। চিকিৎসক ও নাির্সংহোম কর্তৃপক্ষ জানায়, তাঁর মুখে সংক্রমণ হয়েছিল। ভিতরে একটি ছোট টিউমারও ছিল। ৩টি দাঁত তুলে ফেলা হয়েছে। টিউমারটিও অস্ত্রপচার করে বাদ দেওয়া হয়েছে। অস্ত্রপচারের পর নাির্সংহোমের প্যাডে কিছু ওষুধ লিখে দেন ওই চিকিৎসক। ওষুধ খাওয়ার পরও তাঁর দাঁতের যন্ত্রণা ও অস্ত্রপচারের জায়গা থেকে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়নি। পরপর তিনদিন তিনি নাির্সংহোমে গিয়ে চিকিৎসককে দেখান। প্রতিবারই ওষুধ বদল করে দেওয়া হয়। তা খেয়েও অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। বাধ্য হয়ে গত ২২ মে তিনি অন্য এক চিকিৎসককে দেখান। সেই চিকিৎসক তাঁকে কয়েকটি পরীক্ষা করতে বলেন। রিপোর্ট দেখার পর সেই চিকিৎসক জানান, তাঁর মুখে ক্যান্সার হয়েছে। পরীক্ষা না করিয়ে দাঁত তোলা ও অস্ত্রপচার করা ঠিক হয়নি। বাধ্য হয়ে তিনি কলকাতার এক চিকিৎসকের কাছে যান। সেই চিকিৎসকও একই কথা জানান। পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করিয়ে অস্ত্রপচার করা ঠিক হয়নি বলে মত দেন কলকাতার চিকিৎসক। পরে তিনি খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন, ওই চিকিৎসকের দাঁতের চিকিৎসা করার জন্য কোনও ডিগ্রি নেই। তিনি নিজেকে চিকিৎসক বলে পরিচয় দিয়ে লোক ঠকায় ।
মামলাকারীর আইনজীবী অতনু সরকার বলেন, ওই ভুয়ো চিকিৎসকের খপ্পড়ে পড়ে বহু মানুষ ভুল চিকিৎসার শিকার হচ্ছেন। ভুল চিকিৎসার কারণে প্রাণহানির সম্ভাবনা রয়েছে। তা জেনেও ওই ব্যক্তি অের্থর লালসায় নিজেকে ডাক্তার বলে প্রচার করে চিকিৎসা করছে। এর সঙ্গে মেমারির একটি নাির্সংহোম জড়িত। বিষয়টি মেমারি থানাকে জানানো হয়েছিল। এসপিকেও চিঠি দিয়ে ভুয়ো চিকিৎসকের বিষয়ে অবহিত করা হয়। কিন্তু, পুলিস কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করা হয়েছে। আদালত কেস রুজু করে মেমারি থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে ।।